Ameen Qudir

Published:
2020-03-03 15:32:24 BdST

আ বিউটিফুল মাইন্ড:একজন প্রতিভাবান মানসিক রোগীর জীবন কাহিনী


 রাজিক হাসান  ______________________

আ বিউটিফুল মাইন্ড। ছবিটি একজন প্রতিভাবান মানসিক রোগীর জীবন কাহিনী নিয়ে নির্মিত। সে একা একা কথা বলে। কাল্পনিক লোকজনের সঙ্গে অথবা কাল্পনিক ঘটনা দেখে। যাকে বলে হ্যালুসিনেশন।

নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী জন ন্যাশ ছিলেন এই রকমই একজন মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষ।
তাঁর জন্ম হয় ১৯২৮ সালে, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ। মাত্র ১৯ বছর বয়সে ম্যাথমেটিক্সে গ্র্যাজুয়েশন। তারপর প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে উচ্চশিক্ষা। প্রতিভাবান ছাত্র ছিলেন বলে তাঁর শিক্ষার সব খরচই আসত স্কলারশিপ হিসেবে। প্রফেসররা তাঁকে বলতেন 'ম্যাথমেটিক্যাল জিনিয়াস'।

১৯৫০ সালে তিনি তাঁর ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম বিষয়ক ২৮ পৃষ্ঠার থিসিস জমা দিয়ে পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এই পেপারই তাঁকে নোবেল পুরষ্কার এনে দেয় ১৯৯৪ সালে।

তিনি ম্যাথসের উপরে যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। কি করেছেন বুঝি নাই বলে লিখলাম না।

তিনি ১৯৫৭ সালে অ্যালিসিয়া এস্থারকে বিয়ে করেন। ১৯৫৯ সালে তাঁর মধ্যে গুরুতর মানসিক রোগের লক্ষ্মণ দেখা দেয়। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অনুষ্ঠানে লেকচার দেওয়ার সময় তিনি প্রচন্ড অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন। তখনই সবাই তাঁর রোগের বিষয়ে নিশ্চিত হয়। তিনি নিউ জার্সি স্টেট হসপিটালে ভর্তি হন এবং বহু বছর ধরে হসপিটালে থেকে তাঁর চিকিৎসা চলে। তাঁর অসুখের নাম হল প্যারানয়েড স্কিজোফ্রেনিয়া। তিনি একা একা কথা বলতেন কাল্পনিক লোকেদের সঙ্গে। তিনি বিশ্বাস করতেন কমিউনিস্টরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে তিনি ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাম্বাসিতে নানা চিঠিও পাঠিয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলে একইসাথে অ্যান্টিসাইকোটিক মেডিসিন এবং শক থেরাপির দ্বারা।

১৯৭০ সালথেকে তাঁর অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকে। ইতিমধ্যে ১৯৬৩ সালে অ্যালিসিয়ার সঙ্গে তাঁর ডিভোর্স হয়ে যায়। ১৯৭০ সালের পর তাঁকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেন ডাক্তাররা। ১৯৮০ এর পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে নিজের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম হন তাঁর অ্যাকাডেমিক জগতে ফিরে যান। এবং গবেষণার কাজ পুরোদমে করতে থাকেন।

এরপর নোবেল পুরষ্কার পান ১৯৯৪ সালে। তাঁর জীবনের উজ্জ্বল দিনগুলো ফিরে আসে।

তিনি অ্যালিসিয়াকে ২০০১ সালে পুনরায় বিবাহ করেন। যদিও হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর তিনি অ্যালিসিয়ার সঙ্গেই থাকতেন।

সিলভিয়া নাসারের লেখা বায়োগ্রাফি এ বিউটিফুল মাইন্ড জন ন্যাশের জীবনকাহিনী নিয়ে লেখা। যেটি ২০০১ সালে চলচ্চিত্রায়িত হয়েছিল এবং সেরা ছবি হিসেবে অস্কার পেয়েছিল। সত্যিই অসাধারণ ছবি। ছবিটা আমি বার বার দেখেছি।

২০১৫ সালের ২৩ মে জন ন্যাশ এবং অ্যালিসিয়া ট্যাক্সিতে ভ্রমণের সময় দুর্ঘটনায় মারা যান।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়