Ameen Qudir

Published:
2019-02-24 00:43:00 BdST

আগুনে আত্মাহুতি পতঙ্গ বনাম মানুষ




ডা. আশীষ দেবনাথ
__________________________

কীটপতঙ্গদের প্রায়ই ঝাঁকে ঝাঁকে আগুনে (flame) মরে পড়ে থাকতে দেখি। বিশেষ বিশেষ সময়ে এটার প্রকোপ বেড়ে যায়। বিজ্ঞান বলছে পতঙ্গরা দুরবর্তী প্রাকৃতিক আলো তথা চাঁদের সাথে সম্পর্ক রেখে চলে। যাকে বলে transverse orientation. মানবসৃষ্ট আলোতে পতঙ্গের এই হিসাবটা থাকেনা। ফলে তারা ভুল করে বিপদে পড়ে।

তবে মোমবাতির আলো নিয়ে ক্যালাহানের ব্যাখ্যাটা মজার। এই আলো পতঙ্গকে যৌনতায় উজ্জ্বীবিত করে। মোমবাতির আলো থেকে নির্গত রশ্মি পুরুষ পতঙ্গকে নারী পতঙ্গের শরীর থেকে নির্গত হওয়া সেক্স হরমোনের (pheromones) ফ্লেভার দেয়। ফলাফল বিভ্রান্তিতে পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পুরুষ পতঙ্গের আত্মহনন।

মানব ইতিহাসেও বিভিন্ন সমাজ সংস্কৃতিতে আগুনে আত্মাহুতির ঘটনা ঢের। যেটাকে বলে self immolation. ধর্মীয় গোঁড়ামি আর প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই মানুষ মূলত এটা করে এসেছে। এই সংস্কৃতির সতীদাহ প্রথা, আর রাজপুত রমণীদের জহরব্রতের ইতিহাসতো সেদিনের। এসব বিভ্রান্তি থেকেও সরে এসেছে সমাজ।

পুরান ঢাকায় কিছুদিন পর পর নিমিষেই অগুনতি মানুষের কয়লা হয়ে যাবার কারনটা আমাদের সবারই জানা। নিমতলির ঘটনার পর ১৭ দফা সুপারিশ করা হয়েছিলো। সমস্যা সমাধানে সেসবের দৃশ্যমান কোন বাস্তব পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই যে নিশ্চিত বিপদ জেনেও মৃত্যুবোমাকে আলিঙ্গন করে পুরান ঢাকাবাসীর নিত্য বসবাস- এটার কারনও সেই বিভ্রান্তি। আর এই বিভ্রান্তিটির নাম লোভ।

এহেন বিভ্রান্তি থেকে তারা সরে আসবে কবে?
__________________________

 

ডা. আশীষ দেবনাথ । বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ, নোয়াখালি।

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়