Ameen Qudir

Published:
2019-02-22 12:07:34 BdST

চট্টগ্রাম থেকে ৪০ ডাক্তারকে বদলি:বেশিরভাগ পদায়ন পার্বত্য চট্টগ্রামের নানা উপজেলায়


 

 

 

ডেস্ক, ঢাকা
__________________

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভারসাম্য আনতে গত দু’দিনে চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হয়েছে ৪০ জন চিকিৎসক। এদের বেশিরভাগই পদায়ন হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে। গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. আবুল কালামের স্বাক্ষরে পৃথক তিনটি আদেশে বদলির এ আদেশ জারি করা হয়। এর মধ্যে ১৮ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ১৭ জন এবং অপর এক আদেশে ৯ জনকে বদলি করা হয়। আর বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে বদলি করা হয় ১৪ জন চিকিৎসককে। খবর দৈনিক আজাদীর।

স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট একশটি উপজেলা রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের সংখ্যা ৯১টি। ৯১টির মধ্যে ৬ জনের কম চিকিৎসক রয়েছে এমন উপজেলা হাসপাতালের সংখ্যা ২১টি। ৬ জনের বেশি চিকিৎসক থাকা হাসপাতাল রয়েছে ১৮টি। এই ১৮টির মধ্যে আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালীসহ অধিকাংশই আবার চট্টগ্রাম মহানগরের পার্শ্ববর্তী উপজেলার। বাকি ৫২টি উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা মোটামুটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সামঞ্জস্য আনার লক্ষ্যে চিকিৎসক বেশি থাকা হাসপাতালগুলোর মধ্য থেকে কম থাকা এলাকাগুলোতে চিকিৎসকদের বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দফতরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, পার্বত্য অঞ্চলের উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকটটা খুব বেশি। কোথাও দুজন, কোথাও তিনজন, কোথাওবা চারজন চিকিৎসক নিয়ে গোটা হাসপাতাল চলছে। বিশেষ করে ওই অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতেই বদলিকৃত চিকিৎসকদের পদায়ন করা হয়েছে। নির্দেশিত সময়ের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সব মিলিয়ে ৩ জন চিকিৎসক ছিলেন পার্বত্য বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জারিকৃত স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক আদেশে সেখানে নতুন করে ২ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। পদায়নকৃত দুজন যোগ দিলে দুর্গম এই উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৫ জনে। একই জেলাধীন আলিকদম উপজেলা হাসপাতালেও চিকিৎসকের বর্তমান সংখ্যা ৩ জন। নতুন করে সেখানে আরো একজনকে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি যোগদান করলে হাসপাতালটিতে মোট চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৪ জনে। একইভাবে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে। চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে থানছি উপজেলা হাসপাতালেও।

স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের পার্শ্ববর্তী শুধু আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতাল থেকেই চারজন চিকিৎসককে বিভিন্ন উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। পটিয়া উপজেলা থেকে বদলি করা হয়েছে দুজনকে। এভাবে বেশি থাকা হাসপাতালগুলো থেকে বদলি করে দুর্গম অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে পদায়ন করা হয়েছে চিকিৎসকদের।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসু প্রু মারমা জানিয়েছেন, তদবিরকারীদেরও তালিকাভুক্ত করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও সরকার এবার খুবই কঠোর অবস্থানে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. আবুল কাশেম। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে নিজেরাও তৎপর আছেন বলে জানান তিনি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে, বিশেষ করে দূর্গম এলাকায় ডাক্তার না থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বর্তমান সরকার বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নেয়। নিয়োগের পর ন্যূনতম দুই বছর উপজেলা হাসপাতালে থাকার বাধ্যবাধকতা জারি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি ও গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙগুলোতে ন্যূনতম ৬ জন করে চিকিৎসক নিশ্চিত করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়