Ameen Qudir

Published:
2018-09-09 00:21:52 BdST

শিশুটির অাঙুলটি নাই করে দিয়ে যেভাবে ডাক্তারবিরোধী প্রপাগান্ডা মিডিয়ার


 

 

ডেস্ক ___________

একটি শিশুর আঙুল কেটে নিল ডাক্তার নার্সরা; অথচ এক ফোঁটা রক্ত পড়ল না। এই অদ্ভুত হলুদ সংবাদ প্রচারও করল মিডিয়া; বৈদ্যুতিন মিডিয়ায় হৈ চে হল। এমনই অপপ্রচার চলছে ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্যসেবী হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুই বাংলাতেই। ভয়ঙ্কর একদু:সময় পার করছেন স্বাস্থ্যসেবার এঞ্জেলরা।
সে কথা ক্ষোভে দু:খে বলছেন কলকাতার ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়।
তার লেখাটি আমরা প্রকাশ করলাম।


তিনি লিখেছেন,

অনেক কষ্ট করেও লেখাটা ছোটো করতে পারলাম না। মাফ করবেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত পড়বেন...... কয়েকবছর আগের ঘটনা.........
আবার রাজ্য তোলপাড় করা এই সাজানো ঘটনা টা ফিরিয়ে আনলাম কেন বলছি বলছি একটু ধৈর্য ধরুন...
ছবিতে আপনারা নবজাতক শিশুটির হাতের ওই যে বুড়ো আঙুলটা দেখতে পাচ্ছেন নিশ্চই ,, তো ওই আঙুল টাই সেদিন সংবাদে ""নেই ""হয়ে গিয়েছিল, আঙুল নাকি কেটে বালতিতে ফেলে দিয়েছে নার্স, আবার বাড়ির লোক নাকি সেই আঙুল নিয়ে সবাইকে দেখিয়েছে...( ঘটনা ছিল অসুস্থ নবজাতক শিশুর হাতের চ্যানেল টা খুলতে গিয়ে tip of the finger কেটে যায় যাতে একড্রপ রক্তও পড়েনি, আমরা নার্স রা মনে করি ওটুকুও না হলেই ভাল হত).... বৈদ্যুতিন মাধ্যম, সংবাদ পত্র দারুণ সরগরম, কি না.... চাটনি খবর নার্স সদ্যোজাত শিশুর বুড়ো আঙুল কেটে ফেলেছে...তো এত বড় অন্যায়ের তো সাজা পেতে হবে, বেশ জমপেস সাজা...যাতে সমস্ত নার্সকূল যেন চিরদিন মনে রাখতে পারে...তো সাজা কি হবে....রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসক বললেন, বেশ তীব্র স্বরে,, আইন যদি নাও থাকে আইন সংশোধন করে ওই নার্সকে চাকরি থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এই বাণী শোনার পর কি হল বলুন তো....ওই নার্সের ১৬ দিন হাজতবাস হল। কিন্তু ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি ****বাচ্চাটির আঙুল হাতেই আছে বালতিতে পড়েনি....কিন্তু তা সত্তেও প্রশাসন ওই নার্সটিকে ১৬ দিনের হাজতবাস করাল আর
...... মাঝেরহাট ব্রীজ ভেঙে পড়ল তিনজন সুস্থ মানুষ ""নেই "" হয়ে গেল, আরও অসংখ্য মানুষ জীবন মরণ লড়াই করছে,.... কই শুনছি না তো এই দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ যারা করেছে তাদের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, পোস্তা ব্রীজ ভাঙার পর শুনিনি তো অতগুলো মৃত্যুর পরেও কারও যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে,...মঙ্গলবারের ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর আজ বৃহষ্পতিবারও দেখছি চলছে তরজা যে কে দায়ী... সবপক্ষই দায় এড়াতে চাইছে আর সেদিন প্রশাসন শুনতেই চায়নি, দেখতে চায়নি আঙুল টা সত্যিই কেটে পড়েছে কিনা.... নার্সটি তার ছোট্ট যমজ বাচ্চাদুটিকে ঘরে অসহায় অবস্থায় রেখে জেলে যেতে বাধ্য হয়েছিল তাও একদিন দুদিন নয় ১৬ টা দিন ...কেউ কোনো কথাই শুনতে চায়নি,
......আজ সেই ঝাঁঝ কোথায়??? কেন মূখ্যমন্ত্রী নার্সদেরও নয়??? পশ্চিমবঙ্গের নার্স এবং তাদের পরিবার ভোট দিয়ে পরিবর্তন আনেনি????? মা মাটি মানুষের সরকারে নার্স রা কি ব্রাত্য????? বার বার ------
......মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে বিনা চিকিৎসায় নার্স নিজেরই হাসপাতালে মারা গেল...তা নিয়ে নার্স রা তাদের কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইল, কেন এমন হল...সমস্ত রুগী পরিষেবা বজায় রেখে,,,,কিন্তু কোন এক অজ্ঞাতকারণে নার্সের মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার সময় পুলিশের নেতৃত্বে ঘটল চূড়ান্ত অমানবিক ঘটনা যা ঐতিহাসিক বললেও কম বলা হয়...শববাহী গাড়ি পুলিশের ভয়ে কেউ যেতে রাজী নয়, একজন যদি বা রাজী হল....পুলিশ সেই গাড়ির চালক কে মেরে,,,,,সেই নার্স এর মৃতদেহ রাস্তায় ঠকাস করে নামিয়ে দিল, এবং পুলিশ তাদের গাড়ি এমন করে রাস্তায় রাখল যাকে আমরা অবরোধ বলি, মৃতা নার্সের সহকর্মীরা রাস্তায় বসে পড়ল উপায়ান্তর না দেখে।.... কিন্তু বাড়িতে মেয়েদুটো শেষবারের মত মাকে দেখবে তাই,....প্রথমে মৃত নার্সের সহকর্মীরা পরে তাদের বাড়ির পুরুষ সদস্য রা কাঁধে করে মৃতদেহ, প্রথমে বাড়ি এবং পরে শ্মশানে নিয়ে গেল.....এত অমানবিক ঘটনা পুলিশের নেতৃত্বে ঘটল কোনো নির্ভিক সংবাদ মাধ্যম সম্প্রচার করেনি,, তখনকার পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ কে নাকি এখন রাজ্যের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না........ কেন অকারণে বার বার নার্সদের মানসিক নির্যাতন করা হয় প্রশাসনিক স্তরে??????? নার্স রা তাদের দায়িত্ব স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সঠিক ভাবে পালন করে,, শ্রেষ্ঠ বললেও অত্যুক্তি হবে না,.... তা সত্তেও বারবার তাদেরকে এবং এই মহান পেশাকে maline করা হয় অথচ যাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্যে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু সংগঠিত হয় তাদেরকে আড়াল করা হয়...

 

 

 


........বিনা কারণে নার্স কে জেলে পোরা থেকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু, নার্স নিগ্রহ, রুগী নার্স অনুপাত যথাযথ করা সব কিছুতেই "" নার্সেস ইউনিটি"" এর নেতৃত্বে আন্দোলন হয় ঠিকই কিন্তু রুগী দের কে কষ্ট দিয়ে নয়, রুগী পরিষেবা বজায় রেখে....নার্সদের আরও সংগঠন সবসময় ছিল এবং আছে..... তারা তো নীরব থাকেই ..... এমন কি বালুরঘাট হাসপাতালের নার্সিং কর্তৃপক্ষ,মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের নার্সিং কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যভবনের নার্সিং কর্তৃপক্ষও উল্লেখ্যোগ্য নীরবতা পালন করেছিল।
তরতাজা, একাধিক সুস্থ প্রাণ চলে গেলে প্রশাসন দায়ী কে খুঁজে পায় না আর দোষ না থাকা নার্স কে দায়ী প্রতিপন্ন করে জেল খাটতে হয়, বিনা চিকিৎসায় মৃত নার্স অমর্যাদার শিকার হয় ....হায় রে গণতন্ত্র.......হায় রে উন্নয়ন..... হায় রে সভ্যতা....

.

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়