Ameen Qudir

Published:
2018-08-30 17:56:38 BdST

নগ্ন হস্তক্ষেপের বলি হলেন স্বাস্থ্য সেক্টরের একজন আলোকবর্তিকা সম সেনাপতি


 

দুই সুযোগ্য সেনাপতি এক সঙ্গে। চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে গত মার্চে পরিবার পরিকল্পনা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় পরিচালক ( MCHServiced & LD , MCRAH ) ও স্বনামধন্য চিকিৎসক নেতা ডা :মোহাম্মদ শরীফ (ডানে ) ও চট্টগ্রাম জেলার জনপ্রিয় সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী । ছবি ডা: মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকীএর সৌজন্যে পাওয়া।




ডা. নাজমুল হাসনাইন নওশাদ
_______________________________

ক্রোয়েশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে।। আচ্ছা কেউ কি বিশ্বকাপের শুরুতে ভেবেছিলো তারা ফাইনালে খেলবে? কিন্তু খেলেছে।কারণ তাদের ছিল একজন নেপথ্যের কারিগর। তিনি কোচ।তার নির্দেশনায় খেলে ক্রোয়েশিয়া ফাইনালে রানার আপ।। মূল ব্যাপার হলো সঠিক পরিচালনা।

২) বাংলাদেশের পরিবার কল্যাণ ও পরিবার পরিকল্পনা স্বাধীনতার পর থেকে চলছিলো দায়সারা ভাবে।যার ফলশ্রুতিতে একটা সময় বাংলাদেশকে নিতে হয়েছে ১৮ কোটি জনসংখ্যার বিপুল ভার। ভয়াবহ মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, অপুষ্টিজনিত রোগের ভার। ঠিক এমনি সময় এই অধিদপ্তরে আলোকবর্তিকা হাতে পরিচালক হয়ে এলেন একজন ডাঃ শরীফ । মাথার উপর বিশাল দায়িত্ব।। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলে স্বাক্ষর করা দেশ বাংলাদেশ। তিনি এই লক্ষ্যে অবিচল। ছুটে বেড়িয়েছেন মাঠে প্রান্তরে। সততার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তার নেতৃত্বে এগিয়েছে এই বিভাগ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অর্জন করেছেন মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলের শিশু ও মাতৃমৃত্যু কমানোর লক্ষ্য অর্জনের পুরস্কার। এবার লক্ষ্য আরো পরিষ্কার। আরো এগুতে হবে। এই লক্ষ্যে এগুচ্ছিলেন তিনি।কিন্তু ব্রিটিশ ভূত আমাদের পিছু ছাড়েনি।

৩) ১৭৫৭ সাল।পলাশীর প্রান্তরে শেষ সূর্য অস্তমিত। ব্রিটিশ রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত।আর তার শাসনভার চালানোর জন্য তারা চালু করলো আমলাতন্ত্র নামক কালো একটা গোষ্ঠী। যার মূল কাজ কালের চাকায় দাড়ালো শোষণ করা। আজ ২০১৮ সালে এসে সেই ব্রিটিশ ভূত আরো একবার দেখলো বাংলাদেশ। একজন আমলাকে দেয়া হলো ডাঃ শরীফকে সরিয়ে।তাদের কাছে কেবলমাত্র এটা একটা শোষণের হাতিয়ার। বাংলাদেশ এর প্রশাসন ক্যাডারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কাছে বলি হলো একজন আলোকবর্তিকা হাতের সেনাপতি।।

৪) আমার সুযোগ হয়েছিল মাতৃমৃত্যু ও শিশুস্বাস্থ্যের উপর একটি সেমিনারে যাওয়ার।মূলত ট্রেনিং সেশন ছিলো মাঠ পর্যায়ের ডাক্তার আর স্বাস্থ্য কর্মিদের। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যক্তি। আমি হতবাক হয়ে গেলাম যখন দেখলাম উনি শুরুতেই বললেন উনার তেমন কোন ধারণা নেই এই বিষয়ে। তবে উনি সাফল্য কামনা করলেন। সেখানে ছিলেন ডাঃ মোহাম্মদ শরীফ।সেদিন উনার দূরদৃষ্টি দেখার সুযোগ হয়েছিলো। কি চমৎকার ভাবেই সেদিন লক্ষ্য উদ্দেশ্য জানিয়েছিলেন আমাদের। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিলো সবাই।অথচ সেদিন যার কোন ধারণা ছিলো না তিনিই হলেন মন্ত্রণালয় এর সবচেয়ে বড় কর্তা! তিনিই প্রধান অতিথি?

৫) দেশের সকল কাজের কাজী হয়ে বসে থাকা লোকজনের কাছে এটা শুধু পোস্ট দখলের বাজে খেলা। যার কাজ তাকে দর্শক বানিয়ে কি করতে চাইছে।আমরা কি আর আগাবো না? যারাই দেশের জন্য কিছু করেন তাদের এভাবে চলে যেতে হয়।। তীব্র প্রতিবাদ। ঘৃণা। ব্রিটিশ ভূত কি আমাদের মান সম্মান নিয়েও থাকতে দিবে না?সময় এসেছে প্রতিবাদের।এই প্রতিবাদ দেশের জন্য। যার ক্ষেত্রে তাকেই মানায়, যোগ্যদের হাতেই এগিয়ে যায় দেশ। অথচ নূন্যতম ব্যর্থতার দায়ভার সরাসরি নিতে হয় রাষ্ট্রপ্রধানকে! হীন স্বার্থ যাদের তাদের রূখে দেয়া হোক।দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হোক আমাদের একজন - জনাব ডাঃ মোহাম্মদ শরীফকে।

সাথে শেষ কথা- কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় চাই।।
_______________________________

ডা. নাজমুল হাসনাইন নওশাদ । সুলেখক। প্রাক্তন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়