Ameen Qudir

Published:
2018-02-04 21:41:26 BdST

বাংলাদেশের ২ কোটিরও বেশি তামাকসেবী যার মধ্যে আনুমানিক ২৫শতাংশ মহিলা


 

 

ডেস্ক রিপোর্ট

____________________


আজ ৪ঠা ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ক্যান্সার দিবস, সম্বিলিত প্রচেষ্টায় ক্যান্সার জয়ের আলোকবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিয়ে ফিরে এলো এই দিন।
বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের ভয়াবহতা যেমন বাড়ছে, তেমন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকিৎসার সক্ষমতা ও ক্যান্সার জয়ী মানুষের সংখ্যা। উন্নত বিশ্বে ক্যান্সারজনিত মৃত্যু হ্রাস পাচ্ছে। আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যেমন নতুন ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তেমন বাড়ছে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুহার।
২০১২ সালের এক হিসাবে দেখা যায় সারা পৃথিবীতে ১৪ মিলিয়ন মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ক্যান্সারের কারণে মৃত্যু বরণ করেছেন ৮.২ মিলিয়ন মানুষ। নতুন করে আক্রান্তদের ৬০% এর বাস হল এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্য আমেরিকাতে। ক্যন্সারজনিত মৃত্যুর ৭০% গড়ে এই অঞ্চল সমূহ। ২০১৭ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ২০ এবং তদুর্ধ বয়সের মানুষের নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্তদের মধ্যে ১৩% এর বিরল ক্যান্সার হয়েছে। ৩১.৫ মিলিয়ন মানুষ সারা বিশ্বে ক্যান্সারের সাথে বসবাস করছে। বিশ্বের প্রধান ৪টি প্রাণঘাতী ক্যান্সার হল: ফুসফুস (১.৮ মিলিয়ন, মোট ক্যান্সারের ১৩%), স্তন (১.৭ মিলিয়ন মোট ক্যান্সারের ১১.৯ %), কলোরেক্টাল (০.৮ মিলিয়ন মোট ক্যান্সারের ৯.১%) এবং পাকস্থলী (০.৭ মিলিয়ন মোট ক্যান্সারের ৮.৮%)।
২০১২ সালের গ্লোবক্যান এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি বছর ক্যন্সার আক্রান্তের সংখ্যা ১৯.৩ মিলিয়নে দাঁড়াবে। ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর হার ৫০% বেড়ে ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ মিলিয়নে দাঁড়াবে।

 


স্তন ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী আশংকাজনক ভাবে বেড়ে চলেছে। ২০০৮ সালের তুলনায় ২০১২ সালের স্তন ক্যান্সার ২০% বেশী মহিলা আক্রান্ত হয়েছে। এ কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪% । বিশ্বের ১৮৪ টি দেশের মধ্যে ১৪০ টি দেশে স্তন ক্যান্সার মেয়েদের ক্যান্সারের তালিকার শীর্ষে রয়েছে। মেয়েদের মোট ক্যান্সারের এক–চতুর্থাংশ হলো স্তন ক্যান্সার। প্রতিবছর ৫ লাখ ২৮ হাজার জন মহিলা নতুন করে সারাবিশ্বে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত যা আশংকাজনক। আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোতে এর প্রকোপ বেড়ে চলেছে।
বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। ৭০ দশকের দিকে গড় আয়ু ছিল ৪৫ এর কাছাকাছি তা বর্তমানে ৭০ ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের জন্মহার ও মুত্যুহার দুটোই কমেছে, সে সাথে বাড়ছে ক্যান্সার সহ অসংক্রমণ জনিত রোগে মৃত্যুর হার যা মোট মৃত্যুর ৫৯% ঘটাচ্ছে। এর মধ্যে হৃদরোগ ১৭%, ফুসফুসজনিত রোগ ১১%, ক্যান্সার ১০% দুর্ঘটনা জনিত কারণে ৯%, ডায়াবেটিস ৩% ও অন্যান্য কারণে ১০%।
এ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের দেশের ষাটোর্ধ্ব মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশে দাঁড়াবে, যার অর্থ ক্যান্সারসহ অসংক্রমণ জনিত রোগের প্রকোপ ও ব্যয় বৃদ্ধি পাবে।

 

২০০৮ সালে ক্যান্সার জনিত চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী খরচ হয়েছে ৮৯৫ বিলিয়ন ডলার যা ছিল সারা বিশ্বের মোট জিডিপির ১.৫%। ক্যান্সার জনিত ব্যয় হৃদরোগ চিকিৎসার চেয়ে ১৯% বেশি ছিল (যথাক্রমে ৮৯৫ বিলিয়ন ও ৭৫৩ বিলিয়ন)। প্রকৃতপক্ষে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যয় এর চেয়েও বেশি হবে বলে অনুমান করা হয়। মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে আমাদের দেশ, পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যায় যা আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে। সারা বিশ্বের তামাকের ব্যবহার কমে আসলেও বাংলাদেশে এর ব্যবহার আশংকাজনক বেড়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের ২ কোটিরও বেশি মানুষ নানা তামাক ব্যবহারে অভ্যস্ত, যার আনুমানিক ২৫% মহিলা। প্রতি বছর তামাকজনিত রোগে মারা যায় ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। ধূমপায়ীদের শতকরা ৪১ ভাগ ১৫ বছরের উর্ধ্বের পুরুষ। ১৫ বছরের উর্ধ্বের ধূমপায়ী মহিলার সংখ্যা ১৮%। পান, বিড়ি, জর্দায় আসক্ত মানুষের ২৫% হল মহিলা অর্থাৎ ২৫ বছরের অধিক বয়সের মহিলা। ৬২% পুরুষ ও ৪১ % মহিলা (সম্বিলিত ভাবে ৫২ %) মানুষ কমবেশী ধূমপান অথবা জর্দা ও সাদাপাতা এসবে অভ্যস্ত।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়