Ameen Qudir
Published:2016-11-25 02:14:21 BdST
ডাক্তার প্রতিদিন প্রেসক্রিপশন সন্তান কখন নেবেন : ভুল প্লান করে বউকে মারবেন না
ডাক্তার প্রতিদিন প্রেসক্রিপশন
_____________________________
অনেক নাটক করে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পর আসল পেরেশানির শুরু।
বিয়ের পর বাচ্চা হল কি হল না, তা নিয়ে পাড়াপড়শী আত্মীয় স্বজনের ঘুম নেই।
ওমা , এ দ্দিন হয়ে গেল, এখনও বাচ্চা কাচ্চা নিলে না।
সে কি গো , স্বামীর কোন অসুবিধা। বউ কি বাঁজা।
নাহ। ছেলের বউ সুবিধের হয় নি। বাচ্চা কাচ্চা হয় কিনা কে জানে।
এমন গল্প আমাদের চার পাশেই।
বিবাহিত মেয়েদের যে কথাটি শুনতে হয় সেটি হচ্ছে, সন্তান নিচ্ছেন কবে?
যে যাই বলুক, আগে নারীর স্বাস্থ্য। সন্তান নেওয়ার আগে প্রত্যেক নারীর শারীরিক ও মানসিক পূর্ণ বিকাশ প্রয়োজন। মানসিক শক্তি দরকার। তার আগে একদম নয়। অল্পবয়সে সন্তান নিতে গিয়ে অনেক নারীকেই অকালে প্রাণ হারাতে হয়।
ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যতের চিন্তা সন্তান না নেওয়ার পেছনে কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তারপরও শেষ কথা, বিবাহত জীবনের পরিপূর্নতার জন্য সন্তান চাই।
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনি র প্রধান অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম এ নিয়ে কথা বললেন ডাক্তার প্রতিদিনের সঙ্গে। বলেন, আমাদের দেশে বাল্য-বিবাহের হার এখনো অনেক বেশি। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে বিয়ে যেন ১৮ বছরের পর হয় এবং সন্তান যেন কখনই ২০ বছরের আগে না হয়।
২০ বছরের আগে নারীর শারীরিক বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয় না। ফলে এর আগে সন্তান নিলে বাচ্চার নানা ধরনের অপুষ্টিজনিত রোগ ও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনেকসময় অ্যাবোরশন হয়ে যায়।
বাচ্চার বডি স্ট্রাকচার ঠিক মতো হয় না।
শিশু হতে গিয়ে মাথা আটকে যায়।
তিনি বলেন , ২৬ বছরের পর দেরি না করে সন্তান নিয়ে নেওয়া উচিত। দুই সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে দুই থেকে তিন বছর পার্থক্য রাখা উচিত। যা মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য দরকার। ৩৫ বছর পেরিয়ে গেলে দেখা যায় সন্তান আর হতে চায় না। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এসব নানা রোগ দেখা যায়, আর বাচ্চা এবনরমাল হওয়ার আশংকাও থাকে।
বিশেষজ্ঞ গাইনিকোলজিস্টদের মতে,
মেয়ের বয়স ২০ বা ২১ বছর হলে তার কিছুদিন অপেক্ষা করে সন্তান নেওয়া উচিত। কিন্ত মেয়ের বয়স ২৮ হয়ে গেলে দেরি করা উচিত না।
দেশে প্রায় ৮৩ হাজার সন্তান হতে গিয়ে এবং ৬ হাজার মা বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। এটা একটা ভয়ংকর অবস্থা। একমাত্র বাল্যবিবাহ রোধ ও উপযুক্ত বয়সে সন্তান নিলে এ হার কমতে পারে। কখনো কখনো শহরে দেখা যায় বিদেশে পড়তে যাবে বা চাকরির কথা চিন্তা করে নারীরা প্রথম সন্তান নষ্ট করতে চান। কিন্তু প্রথম সন্তান কখনোই নষ্ট করা যাবে না। তাই প্রতিটি নবদম্পত্তির প্রথম সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে কাউন্সেলিং করা দরকার এবং সে পরামর্শ অনুযায়ী সন্তান নেওয়া উচিত।
বাংলা বছরে গড়ে দেশে প্রায় ৮৩ হাজার সন্তান হতে গিয়ে এবং ৬ হাজার মা বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান।
অনেক চেষ্টা করেও এই অবস্থা বদলানো যাচ্ছে না।
যদি কন্যার অকাল মৃত্যু না চান, তবে পিতামাতার উচিত মেডিকেল পরামর্শ মেনে বিয়ে দেয়া। কন্যার সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে প্রজনন স্বাস্থ্য যে গুরুত্ব পূর্ন সেটা সবাইকেই মনে রাখতে হবে।
আপনার মতামত দিন: