Ameen Qudir

Published:
2017-05-28 17:46:05 BdST

চিকিৎসক নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ লোমহর্ষক, অমানবিক


 

 

 


ডা. বাহারুল আলম
______________________________

 

সেন্ট্রাল হাসপাতালের সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজে চিকিৎসক নির্যাতনের যে লোমহর্ষক, অমানবিক দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে এবং ক্রমাগত চিকিৎসক নির্যাতন ও তাদের কর্মস্থল নিরাপদ রাখতে ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে-- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাওয়া ছাড়া বিএমএ-র আর কোন পথ খোলা নেই ।
.
.
রোগী চিকিৎসকের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুতে নির্মমভাবে চিকিৎসক পেটানো ও হাসপাতাল ভাংচুরের ‘সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ’- দায়িত্ব পালনের অংশ হিসাবে , অভিভাবক হিসাবে একবারও দেখেছেন কি ?

যদি সে নির্মম দৃশ্য মন্ত্রী দেখে থাকেন- তাতে তাঁর হৃদয় কেঁপে ওঠার কোন বহিঃপ্রকাশ ঘটেনি। এত বড় নিষ্ঠুর অভিভাবকত্বের পরিচয় পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যাবে না। তিনি কেবল স্বাস্থ্যমন্ত্রীই নন , ক্ষমতাসীন সরকারের একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা মন্ত্রী । সে ক্ষমতার কিয়দংশ চিকিৎসকদের উপর হিংস্রতা প্রদর্শনকারীদের শাস্তির জন্য প্রয়োগ করলে মাননীয় মন্ত্রীর শপথের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ হত। কিন্তু আজ পর্যন্ত মন্ত্রীর কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় নি। নির্যাতক সন্ত্রাসী ও সেন্ট্রাল হাসপাতালের মাঝে সমঝোতা হওয়াতে মন্ত্রী খুশি কিনা বলা যাবে না তবে অসন্তুষ্টির কোন ক্ষোভ প্রকাশ করেন নি। (বরং লাঞ্ছিত, রক্তাক্ত চিকিৎসকের শরীর ডিঙ্গিয়ে সমঝোতায় সহায়তাকারীদের নিশ্চয়ই তিনি পুরস্কৃত করবেন।)

নিজ রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের জায়গায় দাঁড়িয়ে হুমকি দিতে পারতেন, ‘যে সকল সন্ত্রাসী চিকিৎসক লাঞ্ছিত ও হাসপাতাল ভাংচুর করার সাথে জড়িত , সরকার তাদের কাউকেই ক্ষমা করবে না’। খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে বা তার প্রশাসনের যে কোন ব্যক্তি বাদী হয়ে প্রত্যেকটি ঘটনার অপরাধীকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারেন। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রত্যেকটা অপরাধ সংগঠিত হওয়ার স্থানের সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদী হয়ে জননিরাপত্তা আইনে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।

নির্যাতনের ভিডিও চিত্র দেখার পরে তাৎক্ষনিকভাবে গণমাধ্যমে সকল চিকিৎসক ও লাঞ্ছিত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি সমমর্মিতা ও ব্যর্থতার গ্লানি প্রকাশ করতে পারতেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পদত্যাগের ঘোষণাও দিতে পারতেন। বুঝতে বাকি নাই, রাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় চিকিৎসকদের কোন অভিভাবক নাই। অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে যে বা যারা শপথ নিয়েছেন , অবলীলায় তা ভঙ্গ করছেন। কোন জবাবদিহিতা নাই, দায়িত্ব নাই।

বিপরীতে চিকিৎসকদের চুন থেকে পান খসলে – তাদের উপর মন্ত্রণালয়ের আমলাতন্ত্র ঝাঁপিয়ে পড়ে। সর্বংসহা চিকিৎসকদের সংগঠন আবার এ মন্ত্রীর সাথে সহ-অবস্থানে আছে, নীরব আছে। সিসি টিভির এই ভিডিও ফুটেজ চিকিৎসক নেতাদের ঘুম ভাঙলে, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হলে অবশ্যই অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে এ মন্রীদ র পদত্যাগ চাইবে। রোগী চিকিৎসক ও জনগণের প্রয়োজনে উপনিবেশিক স্বাস্থ্য কাঠামো ভেঙ্গে আমূল পরিবর্তন করবে।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে চিকিৎসক নির্যাতনের লোমহর্ষক দৃশ্য সামাজিক প্রচার মাধ্যমে প্রকাশ করল যে সকল তরুণ চিকিৎসক - তাদের প্রতি অভিবাদন। এগিয়ে চল, আঘাত করো, চিকিৎসকদের অধিকার হরণকারী প্রতিপক্ষকে।

 

 

 

 

_________________________

ডা. বাহারুল আলম , প্রখ্যাত পেশাজীবি নেতা। লোকসেবী চিকিৎসক।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়