Ameen Qudir

Published:
2017-05-23 03:59:58 BdST

লাঞ্ছিত চিকিৎসকদের আর্ত-চিৎকার আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ ছড়াবে দেশ জুড়ে


 

 

 


ডা. বাহারুল আলম
________________

 

লাঞ্ছিত চিকিৎসকদের আর্তি ও সংগ্রামের ভার বহন করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের নাই। সকল অপশক্তিকে বিতাড়িত করেই চিকিৎসকরা ঘরে ফিরবে—এ ডাক বিএমএ-র
.........................................................
চিকিৎসকদের প্রতিবাদ, সংগ্রামের ভার রাষ্ট্র বহন করার ক্ষমতা রাখে না। রোগাক্রান্ত মানুষকে অন্য কোন বিকল্প উপায়ে চিকিৎসা করার ক্ষমতা রাষ্ট্রের নাই। যদি অমর্যাদা ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে চিকিৎসকরা চিকিৎসা প্রদানে নিষ্ক্রিয় থাকে , কর্মবিরতি বা চিকিৎসার দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় নিজেকে নির্বাসনে পাঠায়।

দীর্ঘদিন পরে রাজধানীতে চিকিৎসক লাঞ্ছিত হওয়ার পরে হলেও কেবল নিরাপত্তা ও নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে আজ এক হতে পেরেছে। ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের যে সূচনা আজ হল বিএমএ র নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশে, প্রয়োজনের তাগিদে ক্রমান্বয়ে অবশ্যই এ আন্দোলন বেগবান হবে, স্ফুলিঙ্গের ন্যায় ছড়িয়ে পড়বে সকল চিকিৎসকের মাঝে ।

লাঞ্ছিত চিকিৎসকদের আর্ত-চিৎকার সকল চিকিৎসকের প্রতিবাদের কোষগুলোকে অবশ্যই নাড়া দিবে। দ্রোহের আগুন ছড়াবে বাংলাদেশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত পর্যন্ত। বয়স ও শ্রেণিভেদে কেহই নিজেকে গুটিয়ে রাখবে না আন্দোলনে অংশগ্রহণে।

বিএমএ আন্দোলনের এ ডাক দিয়েছে – চিকিৎসকরা সে ডাকে সাড়া দিয়েছে , ধারণ করেছে। ক্রমান্বয়ে উষ্ণ হয়ে উঠছে দ্রোহের আগুন। , সঞ্চালিত হচ্ছে পরস্পরের হৃদয় থেকে হৃদয়ে। প্রতিপক্ষ অবশ্যই বুঝবে চিকিৎসক সমাজ কত বড় ‘ক্ষোভের আগ্নেয়গিরি’। যার গলিত লাভা হিমালয়ের কৈলাস থেকে তীব্রবেগে ধেয়ে আসছে রাষ্ট্রের উপনিবেশিক মানসিকতা ও আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে । যে অপশক্তি, অপরাজনীতি, অপ-তন্ত্র চিকিৎসকদের রাষ্ট্রের মূলধারা থেকে বিতাড়িত করে প্রান্তিকে পাঠিয়ে অসহায় ও অনৈতিক পেশাজীবী হিসাবে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে আমলারা নিরাপদ ও নিরাপত্তায় থাকবে আর তৃণমূলে থেকে চিকিৎসকরা রোগীর স্বজন দ্বারা লাঞ্ছিত হবে। এ উপনিবেশিক কায়েমি স্বার্থবাদিতার অবসান ঘটাবে এবারের আন্দোলন।

মানবিকতার দোহাই দিয়ে আন্দোলনের এ গলিত লাভার গতিরোধ করা যাবে না। শ্রেণিভেদে নবীন প্রবীণ সকল চিকিৎসকরা জ্যৈষ্ঠের এ খরতাপ উপেক্ষা করে সমগ্র বাংলাদেশের রাজপথে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করেছে। বৈরী আবহাওয়া তাদের পিছপা করতে পারে নি। প্রতিবাদের মুষ্টিবদ্ধ হাত , শ্লোগানের তীব্র ভাষা আকাশ –বাতাস মুখরিত করেছে। কয়েক হাজার রোগী, পীড়িত মানুষ রাষ্ট্রের এ দায়িত্বহীনতাকে প্রত্যক্ষ করেছে।

আগামীতে চিকিৎসকদের প্রতিবাদমূলক নিষ্ক্রিয়তা ও স্বেচ্ছা নির্বাসনে যাওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি হলে অবশ্যই রাষ্ট্র ও তার আমলাতন্ত্র নতজানু হবে। রোগী ও জনগণের প্রয়োজনে চিকিৎসকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উপর চিকিৎসকদের পূর্ণ অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হবে।

আবারো বলি , কেবল চিকিৎসকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন , কয়েক ঘণ্টার জন্য চিকিৎসক তার চিকিৎসা থেকে সরে থাকার কর্মসূচীর ভার বহন করার ক্ষমতা রাষ্ট্র ও তার আমলাতন্ত্রের নাই।

অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যে সকল চিকিৎসক আজ রাজপথে নিজেদের উৎসর্গ করেছে- তারাই সংশপ্তক হয়ে দাবী আদায় করবে।

আমরা যেন আর ঘরে ফিরে না যাই, বিএমএ বললেও না। কোন অজুহাত যেন আমাদের ঐক্যে চিড় না ধরায়। জয় আমাদের সুনিশ্চিত। রোগী চিকিৎসার হাসপাতালে পরস্পরের অবস্থান যেন আস্থা ও ভালবাসায় গড়ে ওঠে।

জয় বাংলা , জয় মুক্তিযুদ্ধ, জয় বঙ্গবন্ধু।

________________

ডা. বাহারুল আলম । লোকসেবী চিকিৎসক ও পেশাজীবী নেতা

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়