Ameen Qudir

Published:
2019-03-19 06:30:17 BdST

'এমবিবিএস করেও ডাক্তার হতে চান না কেন?' 'ইচ্ছে নেই , মাথায় সিনেমার পোকা তাই': মিষ্টি



ডেস্ক
_________________________

চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মিষ্টি জান্নাত এখন নায়িকা। উদীয়মান তারকা থেকে ক্রমশ: হার্টথ্রবে পরিনত হচ্ছেন। বাংলা দেশের পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। আগামী মাসে এই নায়িকার নতুন সিনেমা ‘তুই আমার রানী’ মুক্তি পাচ্ছে। তার আগে ছবির ‘ক্রেজি প্যায়ার’ নামে একটি গান মুক্তি পাচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকা র শীর্ষ জনপ্রিয় দেনিক প্রথম আলো মিষ্টির একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। সেটি প্রথম আলোর সৌজন্যে প্রকাশ হল।

পড়াশোনা করলেন চিকিৎসাশাস্ত্রে। সিনেমায় অভিনয় করতে আসার পেছনের কারণ কী?
জবাব:
হঠাৎ করেই আসা। ওই সময় মাহিয়া মাহির ‘অগ্নি’ সিনেমা মুক্তি পায়। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার প্রযোজক আবদুল আজিজের মেয়ে আমার ভালো বন্ধু। বন্ধুর বাবা আমার কাছে জানতে চান, সিনেমায় অভিনয় করব কি না। আমি বলেছিলাম, বাংলা সিনেমা আমাকে দিয়ে হবে না। তখন আমাকে ছবির ট্রেলার দেখালেন। দেখে মনে হলো, ভালোই তো। সিদ্ধান্ত নিলাম সিনেমায় অভিনয় করব।

মাহিয়া মাহিকে দেখে আপনি সিনেমায় এসেছেন?
না, মাহিকে দেখে নয়। ‘অগ্নি’ দেখে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আগ্রহী হয়েছি। মাহিয়া মাহিকে কিন্তু আমার ‘হিরোইন’ মনে হয় না। একজন হিরোইনের যেমনটা হওয়া উচিত, তিনি মোটেও তেমন না। আমার তো মনে হয়, মাহি আবার কিসের নায়িকা! তাঁকে দেখে আমার চলচ্চিত্রে আসার প্রশ্নই ওঠে না।মিষ্টি জান্নাত
মিষ্টি জান্নাত

এমনটা কেন মনে হলো?
জাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিসে একটা মডেল কর্নার ছিল। আমি সেখানে প্রথম মাহিয়া মাহিকে দেখেছি। দেখতে শুকনা ছিল। গায়ের রং কালো। প্রথম দেখায় পছন্দ করার কিছুই ছিল না। শুধু তা-ই নয়, বাপ্পিকেও নায়ক মনে হয়নি। তাঁর ফিটনেসও ভালো ছিল না। তাঁদের দেখে আমি আবদুল আজিজ ভাইকে সরাসরি বলেছিলাম, তাঁরা আপনাদের হিরো-হিরোইন! তাঁদের তো অনেক গ্রুমিং করাতে হবে। আমি যখন প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করি, তখন বাপ্পি এই কথাটা আমাকে বলেছিল। এখন কিন্তু বাপ্পি আমার খুব ভালো বন্ধু।

মাহিয়া মাহিকে এখনো হিরোইন মনে হয় না?
এখন মনে হয়। ও অনেক বদলে গেছে। হিরোইন হিসেবে বাংলাদেশে আমার সব সময় মৌসুমী আপুকে ভালো লাগে। এখনো তিনিই আমার প্রিয়।

অনেক দিন পর আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে?
আমি তো মাঝে অনেক দিন সিনেমায় কাজ করিনি। পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এমবিবিএস ফাইনাল দিলাম। কিছুদিন পর ফল বের হবে। এখন থেকে কাজ করা হবে। কিন্তু বাংলাদেশের ফিল্মের অবস্থা ভালো না। এখন যৌথ প্রযোজনা আর ভারতের বাংলা সিনেমায় কাজ করছি।
এমবিবিএস করেছেন। তাহলে চিকিৎসক হতে চান না কেন?
ইচ্ছে নেই। কিছুদিন ধরে সিনেমার পোকা আবার মাথায় ঢুকেছে।

আপনি বললেন, বাংলাদেশের সিনেমার অবস্থা ভালো নয়। এমনটা কেন মনে হচ্ছে?
তা তো বলতে পারি না। তবে ভালো না, এটা জানি। আমাদের দেশে বড় বাজেটের সিনেমা হয়, কিন্তু তাতে আমাদের নতুনদের নেওয়া হয় না। এসব সিনেমা শুধুই শাকিব খানকে নিয়েই হয়। তাঁর আবার নিজের হিরোইন চাই। তবে শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার শিগগিরই কাজ করা হবে। দেশে নয়, দেশের বাইরের সিনেমায়।

সিনেমার ভালোর জন্য কী করতে হবে?
সিনেমায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা যদি থাকত, তাহলে ভালো হতো। কিছুদিন আগেও বড় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে নিয়মিত সিনেমা বানানো হয়েছে। এখন নানা সমস্যার কারণে এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে সেভাবে ছবি তৈরি হচ্ছে না। প্রযোজক অনেকেই আছেন, কিন্তু লগ্নি ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তাই ভয়ে চলচ্চিত্রে কেউ টাকা লগ্নি করতে চান না। একটা-দুইটা ছবি বানানোর পর চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে যান। আমাদের দেশে যেসব ছবি নির্মিত হয়, এসব সিনেমায় দেড়-দুই কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। সেই টাকা ফেরত পাবেন কি না, প্রযোজক চিন্তায় পড়ে যান। শুনেছি, শাকিব খানের ছবির প্রযোজক ছাড়া কেউ নাকি বিনিয়োগ ঘরে তুলতে পারেন না।

শাকিব খান ছাড়া বিনিয়োগ ফিরে পাওয়া মুশকিল?
একদমই তাই। শাকিব খান ছাড়া আরিফিন শুভ, বাপ্পি, সাইমন—তাঁরা সবাই পরীক্ষিত। কিছুদিন আগেও কিন্তু এই নায়কদের ছবির টাকা ফিরে পাওয়া যেত। এখন শাকিব খান ছাড়া আর কারও ছবির লগ্নি সেভাবে তুলে আনার খবর পাওয়া যায় না। এটাও সত্যি, শাকিব খান ছাড়া আর কেউই সেই পর্যায়ে যেতে পারেনি।

ভারতের বাংলা ছবিতে কাজ করছেন। সেখানে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
সেখানে সবাই অনেক পেশাদার। বাংলাদেশে এটা একেবারে দেখিনি।

কাদের অপেশাদার বলছেন?
শিল্পীরাই অপেশাদার। যাঁরা একটু ভালো অবস্থানে থাকেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি অপেশাদার। আমাদের এখানে শিল্পী থেকে শুরু করে কলাকুশলী, সবাই ভালো কাজ জানেন। তাঁরা সবাই পেশাদারত্ব দেখাতে ভুলে যান। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে পরিচালকদের আরও অনেক কিছু ভাবতে হবে। নতুন প্রজন্ম কী চায়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে। নতুন প্রজন্মের মানসিকতা বুঝতে না পারলে আমরা আরও পিছিয়ে পড়ব।

নির্দিষ্ট করে বলুন।
আমাদের এখানে যাঁরা কারিগরি কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাও অনেক ছাড় দেন। আমি তো মনে করি, সবাইকে একটা নিয়মের মধ্যে কাজ করানো উচিত। শিফট অনুযায়ী কাজ করার প্রথা চালু করতে হবে। যেকোনো ব্যবসায় সিস্টেম আছে, শুধু আমাদের চলচ্চিত্রে কোনো সিস্টেম নেই। যে যার মতো করে চলছে। একজনের ক্ষতি হলেও তাতে আর কারও মাথাব্যথা নেই।


নতুন কাজের খবর বলুন?
চলচ্চিত্রে আমি এসেছি ২০১৫ সালে। প্রথম সিনেমা ‘লাভ স্টেশন’। এরপর আরও তিনটি সিনেমায় নায়িকা হয়েছি। ভোজপুরি সিনেমায় ‘রংবাজ খিলাড়ি’তে অভিনয় করেছি। কলকাতায় সিনেমায় কাজ করেছি। সোহমের সঙ্গে ‘আমার প্রেম তুমি’ নামের একটি সিনেমার কাজ অর্ধেক হয়েছে। নামটি বদলে যেতে পারে। এর মধ্যে কলকাতার নতুন দুটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, নাম বলা বারণ আছে।

আপনার মতামত দিন:


বিনোদন এর জনপ্রিয়