Ameen Qudir
Published:2018-02-25 17:10:00 BdST
ডক্টর পতি হুয়া তো কেয়া হোগারে রে : শ্রীদেবী আর নেই
ডা. সুরাইয়া আলম
________________________
শ্রীদেবীর প্রেম জ্যোতি ছবির সেই অমর রসমধুর গানটি কি মনে পড়ে! আমার খুব মনে পড়ছে । ডক্টর পতি হুয়া তো কেয়া হোগারে রে ।
চোখের সামনে ভাসছে ছবিটি। কী অসামান্য রুপসী। কী অসামান্য জীবনযুদ্ধ তার। দক্ষিনের মেয়ে । সেখান থেকে বলিউডরানী।
সেই শ্রীদেবী আর নেই।
শনিবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।
বলিউড অভিনেতা মহিত মারওয়াহর বিয়েতে যোগ দিতে স্বামী বনি কাপুর ও কন্যা খুশি কাপুরের সঙ্গে তিনি দুবাই গিয়েছিলেন।-
মাত্র চার বছর বয়স থেকে অভিনয় করেন শ্রীদেবী। ১৯৭১ সালে মালায়লাম সিনেমা পুমবাতায় অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা শিশু অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।
১৩ বছর বয়সে ১৯৭৬ সালে মন্দ্রু মুচিহো নামে তামিল সিনেমায় অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রজীবনে তিনি তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কন্নড় ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
হিন্দি চলচ্চিত্রে যে কয়েকজন অভিনেত্রী পুরুষ সহকর্মীর সহায়তা ছাড়াই বক্স অফিসে ঝড় তুলতে পেরেছিলেন, তাদের মধ্যে তাকে অন্যতম বলে বিবেচনা করা হয়।
শ্রীদেবীর বলিউডে অভিষেক ঘটে ১৯৭৮ সালে। এর পর থেকে তিনি ভারতীয় সেরা অভিনেত্রীদের একজনে পরিণত হন।
পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনে তিনি দেড়শর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সিনেমার মধ্যে মিস্টার ইন্ডিয়া, চাঁদনি, চালবাজ, তোহফা, গুমরাহ, মাওয়ালি, নাগিনা ও সাদমা অন্যতম।
১৯৯৭ সালে তার জুদাই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর এই বৈচিত্র্যময় অভিনেত্রী চলচ্চিত্রশিল্পকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। এর পর দীর্ঘ ১৫ বছরে আর কোনো অভিনয় করেননি।
কিন্তু ২০১২ সালে ইংলিশ-ভিংলিশ সিনেমার মাধ্যমে আবার চলচ্চিত্রজগতে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালে সর্বশেষ তাকে মম সিনেমায় দেখা গেছে।
২০১৩ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করেন।
তার মৃত্যুর খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকের বন্যা নেমেছে।
বলিউড এ সুপারস্টারের স্বামী বনি কাপুর ছাড়াও দুই কন্যা জানভি ও খুশি কাপুরকে রেখে গেছেন। তার বড় মেয়ে জানভির চলতি বছরে করণ জোহরের ধাধাক সিনেমায় অভিষেক হতে যাচ্ছে।
মহান এই অভিনেত্রীকে নিয়ে সারা উপমহাদেশ জুড়ে শোক।
ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল সংক্ষিপ্ত শোকে লিখেছেন,
শ্রীদেবী আর নেই।
আমার কিশোর বেলায় শিহরণ শ্রীদেবী চলে গেলেন আমি বুড়ো হবার আগেই।
সুলেখক ফারহানা নাসিম ফেসবুকে লিখেছেন,
আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সুন্দর নারী ছিলেন শ্রীদেবী। জীবনে উনার অনেক সিনেমা দেখে মুগ্ধ বিস্ময়ে বরাবর ভেবে এসেছি একজন মানুষ অপার্থিব সৌন্দর্যের সাথে কিভাবে এতো গুণের আধার হন। অভিনয় বা নাচে তার মতো দক্ষ শিল্পী হাতে গোণা অল্প ক'জনা। ছোটবেলায় দেখা "মিস্টার ইন্ডিয়া", "চাঁদনী", "সাদমা" বড়বেলাতেও বারবার দেখে আজ পর্যন্ত পুরনো হয়নি। স্টার অভ দ্যা স্টার বলতে যা বোঝায়, আমার কাছে উনি পুরোপুরিভাবে তাইই ছিলেন। আজ হঠাৎ উনার না ফেরার দেশের এই যাত্রায় বুকের ভিতর কেমন যেন চিনচিন ব্যথা করছে। মনে হচ্ছে খুব কাছের কেউ চলে গেলেন। খসে গেলো মুম্বাই চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে বড় নক্ষত্রের একটি। সৃষ্টিকর্তার কাছে ফিরে যাবার তার এই অসীম যাত্রা শান্তিময় হোক। পরমকরুণাময় তাকে স্বর্গবাসী করুন।
আপনার মতামত দিন: