Saha Suravi

Published:
2024-09-09 11:35:42 BdST

কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেবে


 

ডেস্ক
_________

ঘরে-বাইরে সব জায়গায় কাজের চাপ। অফিসে কাজ শেষ করার তাড়া, সংসারের দায়দায়িত্ব সব মিলিয়েই উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা যেন ঘিরে ধরছে। মনের উপর চাপ বেড়েই চলেছে। আর এই মানসিক চাপের সঙ্গে লড়তে লড়তে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনিদ্রা, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা, ওজন বাড়া তো আছেই, স্নায়ুর সমস্যাও দেখা দিচ্ছে অনেকের। এ সবের কারণই হল ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়া। মানসিক চাপে ভুগলে স্ট্রেস হরমোনের কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। তখন উদ্বেদ-উৎকণ্ঠা তো বাড়েই, ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দেয়।

কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে কী কী লক্ষণ দেখা দেবে?

এই বিষয়ে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেছিলেন, “অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ করে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলেও এটা হতে পারে। শরীর যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত কর্টিসল ক্ষরণ করে তখন হৃদ্‌রোগ, উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবিটিসের আশঙ্কা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত কর্টিসলের কারণে মেদও জমে। ওজনও বাড়তে থাকে।” আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, ঘুমের সমস্যা শুরু হতে পারে। চিকিৎসকের কথায়, যাঁর কম ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা নেই, তিনিও ঘুমের ঘাটতিতে ভুগবেন। শুলে ঘুম আসতে চাইবে না। মাথায় হাজারো চিন্তা ঘুরবে। দিনভর ক্লান্তি ভাব থাকবে। কাজে উৎসাহ পাওয়া যাবে না।


কর্টিসল প্রভাব ফেলতে পারে স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও। হঠাৎ খারাপ, অবসাদ, ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হওয়াও অসম্ভব নয়। চিকিৎসকের কথায়, স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে গেলে হৃৎস্পন্দনের হার বাড়তে পারে। তেমনই অতিরিক্ত অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ ও রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। ক্রনিক স্ট্রেসের কারণে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

শ্বাসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কলকাতার একটি বেসরকারি চিকিৎসক সোনালি ঘোষের বক্তব্য, “কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়লে তার খুব খারাপ প্রভাব পড়ে শরীরে। সব সময়ে ঝিমুনি আসবে, ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়বে। ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে, এমনকি অস্টিয়োপোরসিসের লক্ষণও দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে গাঁটে গাঁটে ব্যথা ভোগানে, হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ঘাটতি হয়ে হাড় দুর্বল হয়ে পড়বে।” তাই কর্টিসল হরমোনের প্রভাব কমাতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে। সে জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, মেডিটেশন বা ধ্যান জরুরি। রাতে টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। আর সবচেয়ে বেশি জরুরি সুষম আহার। বাইরের যে কোনও খাবার, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করার জন্য দায়ী। ঘরে তৈরি হালকা খাবার, ভাত-রুটি, ডাল, সব্জিতেই শরীর সুস্থ থাকবে। নিয়ম করে খেতে হবে প্রোটিন। রোজের পাতে মাছ, মাংস বা ডিম রাখতেই হবে। নিরামিষ খেলে সয়াবনি, দুধ, ছানা, পনির, বিভিন্ন রকম ডাল, বিন্‌স খেতে হবে। আর রাতে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করলে চলবে না। এতেও মানসিক চাপ বাড়ে। ঘুমনোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে সমস্ত রকম বৈদ্যুতিন ডিভাইস দূরে রাখলে ভাল হয়।

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়