ডা শাহাদাত হোসেন

Published:
2022-04-26 18:57:12 BdST

মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ১০ পয়েন্ট


ডা. ফাতেমা জোহরা

  


ডা. ফাতেমা জোহরা
সহকারী অধ্যাপক
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
________________________

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমরা শারীরিক অসুস্থতাকে যতটুকু গুরুত্ব দেই, মানসিক অসুস্থতাকে ততটা দেই না। শরীরকে ভাল রাখার জন্য আমরা অনুশীলন করি, নিয়ম মেনে খাদ্য গ্রহণ করি কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যটা থেকে যায় অবহেলাতেই। অথচ একটা মানুষের শারীরিক সুস্থতা তখনই আসবে যখন সে মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ থাকতে পারবে। যেহেতু মানসিক সমস্যা নিয়ে আমাদের আশেপাশের মানুষদের তেমন মাথাব্যথা নেই, তাই আমরা যেন মানসিকভাবে কখনো অসুস্থ না হয়ে পড়ি, সেদিকে আমাদেরই খেয়াল রাখতে হবে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য যা যা করতে হবে আমাদের, তা হচ্ছে:
১। বন্ধু-বান্ধব আর পরিবারের সাথে যোগাযোগে থাকতে হবেঃ
পরিবার, এরপর বন্ধুবান্ধব; এরাই কিন্তু সেই মানুষগুলো যারা আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে। এদের যত কাছাকাছি থাকতে পারবেন, ততই মানসিক শান্তিতে থাকবেন। আমরা প্রায়ই একটা কাজ করি যা একদমই করা ঠিক না। তা হচ্ছে, আমরা আমাদের মানসিক কষ্টগুলোকে নিজেদের মাঝেই পুষে রাখি। কারো সামনে তা খুলে বলি না। অথচ আমাদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবই কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় মানসিক ডাক্তার।
২। একই ধরণের মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে হবেঃ
আপনি যা পছন্দ করেন, যেই মানুষটা একই রকম জিনিসে আগ্রহ দেখাচ্ছে, তার সাথে যোগাযোগ রাখুন। একই রকম এই মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ক্লাবিং। আপনি যদি বিতর্কে উৎসাহী হোন, তবে ডিবেট ক্লাবে যোগ দিন। বই পড়তে ভাল লাগলে, পাঠ্য কর্মসূচীতে যোগ দিন। শারীরিক অনুশীলনে আগ্রহী হলে জিমে যোগ দিন।
৩। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে হবেঃ
আমাদের দেশে এমন অনেক সংগঠন রয়েছে যারা অনেক স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে কাজ করে। চাইলেই তার মাঝে একটায় কিংবা নিজে থেকে অনেক জায়গায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করা যায়। স্বেচ্ছাসেবী হতে হলে যে খুব বড়সড় কাজ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলেই একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে রাস্তা পারাপারে সাহায্য করতে পারেন। এসব কাজ করলে অনেক মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।
৪। শখের কাজ করতে হবেঃ
প্রত্যেক মানুষেরই একটা করে শখ থাকা খুব দরকার। যেই মানুষগুলো শখের কাজ করতে জানে, তারা অন্যান্যদের তুলনায় ডিপ্রেশনে অনেক কম ভোগে কারণ এই শখগুলো তাকে ডিপ্রেশনে ভোগার অবসরটাই দেয় না।
৫। সক্রিয় থাকতে হবে ঃ
যেমনটা শুরুতে বললাম, মনকে কখনো অলস হয়ে থাকতে দিবেন না। সবসময়ই কাজের মাঝে থাকুন। তাহলে মন এমনিতেই ভাল থাকবে।
৬। খাদ্যাভাস ভাল রাখতে হবে ঃ
প্রোটিন রিল্যাক্সাশনের জন্য আর ওমেগা থ্রি মস্তিষ্কের জন্য ভাল। তাই খাবারের মাঝে সবসময় ওমেগা থ্রি এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখার চেষ্টা করুন। সামুদ্রিক মাছের তেলে ওমেগা থ্রি পাওয়া যায়। প্রচুর পানি পান করুন এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার যত সম্ভব পরিহার করুন। খাবারের মেন্যুতে প্রতিদিন নতুনত্ব রাখুন।
৭। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম প্রতিদিন ঘুমাতে হবেঃ
প্রতিদিন তাড়াতাড়ি করে ঘুমাতে চলে যান। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান এবং তা না হলে, দিনে ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে রিল্যাক্স করুন।
৮। নতুন কিছু শিখার আগ্রহ থাকতে হবেঃ
নতুন কোনো একটা কিছু করতে শিখুন। এতে করে নিজের স্কিল বাড়বে, সময় কাটবে আবার মনও ভাল থাকবে।
৯। বর্তমানে ভাল থাকার চেষ্টা করতে হবেঃ
পুরোনো দূশ্চিন্তাগুলো বর্তমানে না করাই ভাল। এমনটা হলে ভাল হতো- তেমনটা যেহেতু হয়নি, তাই তা নিয়ে আর চিন্তা করারও দরকার নেই।
১০। যেকোনো মানসিক সমস্যা সামলাতে না পারলে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে।
##

 

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়