SAHA ANTAR

Published:
2021-05-27 14:51:55 BdST

হজমের সমস্যা! ১০ সহজ সমাধান


 


সংবাদ সংস্থা
_________________

অনেকেরই কোভিডের সময় ডায়রিয়া বা পেটের গোলমালের সমস্যা হচ্ছে। এবং সেটা কোভিড সারার পরও পুরোপুরি সারছে না। কোভিডের দীর্ঘকালীন প্রভাবগুলোর মধ্যে হজমশক্তি কমে যাওয়া অন্যতম। এ দিকে শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলতে প্রোটিনে ভরপুর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু প্রোটিন হজম করতে অনেক বেশি সময় লাগে। পেট খারাপ হলে তো আরও মুশকিল। সে ক্ষেত্রে কী করা যায়। কী রকম খাবার খেলে পুষ্টির অভাবও হবে না, আবার তাড়াতাড়ি হজমও করতে পারবেন?

 

পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, আমাদের স্বাভাবিক জীবনে যতটা প্রোটিন খাওয়ার অভ্যাস, তার চেয়ে যদি হঠাৎ বেশি পরিমাণে প্রোটিন দেওয়া শুরু হয়, তা হলে যে কোনও মানুষের পেটের গণ্ডগোল হতে বাধ্য। তার উপর বেজায় গরম। এই গরমে মাছ-মাংস ঠিক পদ্ধতি রান্না না করলে এবং তা ঠিক ভাবে না রাখলে, খুব তাড়াতাড়ি সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাতে পেটের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তিনি বললেন, ‘‘ বয়স অনুযায়ী খাবার খেতে হবে। একজন কমবয়সি ছেলে বা মেয়ে যতটা প্রোটিন হজম করতে পারবে, একজন ৬০’এর উপর মানুষ তা পারবেন না। তাই বয়স বুঝে প্রোটিন দিতে হবে। এই সময় মানুষ খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাই অনেক চিকিৎসকই কোনও বাড়তি প্রোটিন ড্রিঙ্ক খাওয়ার উপদেশ দেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, পেটের গোলমাল হলে এই প্রোটিন ড্রিঙ্কও হজম করতে অসুবিধা হবে।’’

তা হলে উপায় কী? হজমের সমস্যা কমাতে কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত? রেশমী জানাচ্ছেন, কোভিড সেরে যাওয়ার পর যাঁদের পেটের সমস্যা থেকেই যাচ্ছে, তাঁদের কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত।

১। কোভিড লড়াইয়ের মূল মন্ত্র বিশ্রাম। যত বেশি বিশ্রাম নেবেন, তত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

২। প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া খুব প্রয়োজন। তবে উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগের সমস্যা থাকলে, কতটা জল প্রতিদিন বরাদ্ধ, সেটা আপনার চিকিৎসক জানিয়ে দেবেন। বাকিরা অন্তত ৩.৫ লিটার জল অবশ্যই খাবেন। খালি জল খেতে ভাল না লাগলে একটু লেবু, নুন-চিনি দিয়েও খেতে পারেন (সুগারের সমস্যা না থাকলে)।

৩। বিশ্রাম এবং জল খাওয়ার মতো বিষয় শুনতে যতই সাধারণ মনে হোক না কেন, সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবহেলা করবেন না।

৪। ডাবের জল পেটের পক্ষে খুব ভাল। খেতে পারেন। টাটকা ফলের রস খেতে পারেন। সেটা না থাকলে প্যাকেটের ফলের রস না খাওয়াই ভাল। মোট কথা শরীরকে কখনও ডিহাই়ড্রেটেড হতে দেওয়া যাবে না। মুখ-গলা শুকিয়ে যাচ্ছে, তেমন পরিস্থিতি যেন না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৫। অনেকেই মনে করছেন, দই খেলে গলা ব্যথা হবে বা তাড়াতাড়ি ঠান্ডা লেগে আবার জ্বর আসবে। ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। দইয়ের মধ্যে প্রচুর ‘গুড ব্যক্টেরিয়া’ রয়েছে। হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য দারুণ উপকারী। তাই দই খেতে পারেন। প্রয়োজন পড়লে ঘোল বানিয়েও খেতে পারেন। কিন্তু সারা দিনের ডায়েটে দই অবশ্যই রাখবেন।

৬। জলখাবার, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারে একটা কোনও প্রোটিন রাখতে হবে। ধরুন সকালে রুটি আর ডিম সেদ্ধ খাওয়া যাবে। কিংবা দই-চিড়ে বা দই-মুড়ি। কিন্তু সব একসঙ্গে নয়।

৭। দুপুরের খাবারে অল্প ভাত, মাছ কিংবা চিকেন (একসঙ্গে দু’টো নয়) এবং সব্জি থাকতে হবে। সব্জির দেওয়ার সময় মনে রাখতে হবে, যেন কিছু তরকারির মতো রান্না হয়, কিছুটা সেদ্ধ করা। এই সময় স্যালাড দিলে কাঁচা সব্জি হজম করা মুশকিল হতে পারে। তাই সেদ্ধ করে দিতে হবে।

৮। শাকে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে বলে অনেকে খাচ্ছেন। কিন্তু খুব পরিষ্কার করে ধুয়ে ভাল করে রান্না করে খেতে হবে। তবে পেট খারাপ থাকলে শাক চলবে না একদম।

৮। ডালের প্রচুর প্রোটিন রয়েছে। তাই ডাল খাওয়ার সময়ও একটু সতর্ক থাকতে হবে। মুশুর ডালের জল অনেকে খান। কিন্তু সেটা না খেয়ে এমনি সেদ্ধ করা মুশুর ডালও খেতে পারেন। হজম তাড়াতাড়ি হবে এবং পুষ্টিও যাবে।

৯। বিকেলের খাবারে ফের প্রোটিন খাওয়ার প্রয়োজন নেই। পাঁউরুটি টোস্ট করে খেতে পারেন। ছোলা-বাদামের মতো খাবার এখন সকলে খুব খেতে বলছেন। কিন্তু পেটের সমস্যায় এগুলো একদম চলব না।

১০। রাতে আবার পনীর বা চিকেন খেতে পারেন। অ্যান্টিবডি তৈরি করার জন্য প্রোটিন খুব প্রয়োজন। কিন্তু রেড মিট একদম চলবে না। মাটন, মেটে, মাছের মাথা— এই ধরনের খাবার একদম এড়িয়ে চলুন।

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়