Ameen Qudir

Published:
2019-01-24 21:01:53 BdST

বিশেষমদ পান যৌন শক্তি কমায়, বন্ধ্যাত্ব বাড়ায়



ডা. মোহাম্মদ সাঈদ এনাম

________________________

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মদ বা এলকোহল পান মামুলী ব্যাপার, যদিও মদ বা এলকোহল পানে লিভার ক্যান্সার, পাকস্থলীতে ক্যান্সার সহ দেহে নানান রকমের মরনঘাতী রোগ দেখা দেয়। বাংলাদেশে অত্যন্ত উঁচু শ্রেণীর এবং অত্যন্ত নীচু শ্রেণীর লোকদের মদ বা এলকোহল খাবার প্রবণতা বেশি। অতি সম্প্রতি গবেষণায় প্রাপ্ত মদ বা এলকোহল পানের দুটো মারাত্মক ক্ষতিকারক রোগের কথা আজ বলবো।

অনেকে মনে করেন মদ বা এলকোহল যৌন শক্তি বাড়ায়। এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা। বরং মদ বা এলকোহল পানে উল্টো যৌনশক্তি ধীরে ধীরে কমে যায়। পুরুষের রক্তে টেসটোরেনের পরিমান কমে যায়। এই টেসটোসটেরন হরমোন হলো পৌরষত্বের প্রধান হরমোন। এই হরমোন কমে যায় বলে শারিরীক মেলা মেশায় পুরুষদের আগ্রহ কমে যায়।

স্পার্ম এর কোয়ালিটি ও কোয়ান্টিটি দুটোই কমতে থাকে, ফলে পুরুষদের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় এবং বংশপরম্পরায় ব্রেইনের বা অন্যান্য অংগের জন্মগত ত্রুটি নিয়ে সন্তান হবার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

মদ বা এলকোহল পানে নারীদের ও সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। তাদের শারিরীক মেলামেশার আগ্রহ কমতে থাকে। গর্ভাবস্থায় এলকোহল পান করলে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে সন্তান ভুমিষ্ট হবার সম্ভাবনা বহু গুন বেড়ে যায়।

এলকোহল এর প্রভাবে গর্ভজাত সন্তানের বুদ্ধি কম হয়, শারিরীক গঠন ব্যহত হয়। একে 'ফিটাল এলকোহল সিনড্রম' বলে। তাছাড়া গর্ভের প্রথম তিন মাস অতিরিক্ত মদ পানে গর্ভের সন্তানের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এসব কারনেই দেখা যায় বিশ্বের যে সকল দেশের মদ পানের হার বেশি, সে সকল দেশের ফার্টিলিটি রেইট কম।

ক্রমাগত মদ বা এলকোহল পানে ব্রেইনের নানান রোগ দেখা দেয়। এদের একটি হলো ভারনিক্স করসাকফ সিনড্রোম বা সাইকোসিস। এ রোগে রোগীর স্মৃতি শক্তি কমে যায়, দৃষ্টি শক্তি কমে যায়, রোগী উল্টোপাল্টা কথা বলে, আত্মীয়স্বজন কে সন্দেহ করে, একা একা কথা বলে, শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে চলাফেরা করতে পারেনা । মুলত এলকোহল শরীরের ভিটামিন বি-১ এর শোষণ কমিয়ে দেয় বলেই এমন হয়।

আমাদের দেশে বিভিন্ন এনার্জি ড্রিংকে মাত্রাতিরিক্ত এলকোহলের ও বিষাক্ত ক্যামিকেল থাকার অভিযোগ শুনা যায়। এসব খেয়ে শিশু কিশোররা নানান স্বাস্থ্য জটিলতা, কিডনি রোগ, পাকস্থলী রোগে আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যায়। তাছাড়া বিষাক্ত মদ খেয়ে অনেক সময় এক সাথে অনেক মৃত্যুরও খবর পাওয়া যায়।

নেশার উদ্রেক করে সামাজিক সম্পর্কের অবনতি ঘটায় এবং শরীরে মদ বা এলকোহলের নানান ক্ষতিকারক প্রভাব থাকায় ইসলাম ধর্মে মদ পান কে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

ডা. মোহাম্মদ সাঈদ এনাম
সাইকিয়াট্রিস্ট
মেম্বার, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন
মেম্বার, ইউরোপিয়ান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন ।

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়