Ameen Qudir

Published:
2018-03-30 19:49:02 BdST

বন্ধ্যাত্ব এবং এর কারন সমুহ


 



ডা. নুসরাত জাহান
_______________________________

দুই বছর বা এর অধিক সময় কোন ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পধ্বতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যর্থ হলেতাকে ডাক্তারি ভাষায় বন্ধ্যাত্ব হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। প্রতি ১০০ জন দম্পতির মধ্যে ৮৪ জন প্রথম বছরে এবং ৯২ জন দ্বিতীয় বছরের মধ্যে গর্ভধারন করতে সমর্থ হন। তাই বলা যায় প্রতি ১০০ জন দম্পতির মধ্যে ৮ জন বন্ধ্যাত্বেরশিকার হন।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
এক বছর বা এর অধিক সময় কোন ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পধ্বতি ছাড়া গর্ভধারণে ব্যার্থ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে বয়স ৩০এর বেশি থাকলে ৬ মাস চেষ্টার পরই ডাক্তারের শরনাপর্ন হওয়া উচিত।
বন্ধ্যাত্বের কারন সমুহঃ
বন্ধ্যাত্বের বহুবিধ কারন থাকে,স্বামী-স্ত্রী যেকোন একজন বা উভয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা থাকতে পারে। গর্ভধারনের জন্য দরকার একটি সুস্থ্ ওভাম(ডিম),সবল বীর্য ও নরমাল ইউটেরাস বা জরায়ু। এর যেকোন জায়গায় সমস্যা হলে গর্ভধারনেব্যর্থতা দেখা দিতে পারে।
প্রাথমিক ভাবে বন্ধাত্ব্যের কারন কে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এগুলো হচ্ছে এনুভলেশন(ডিম্বাশয় থেকে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ না হওয়া ), জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা এবং পুরুষ সঙ্গীর সমস্যা।
ওভুলেসন বা ডিম্বস্ফুটন না হওয়ার কিছু কারন সমুহঃ
• পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম
• হরমনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণঃ কিছু কিছু হরমোন যেমন প্রলেক্টিন,থাইরয়েড হরমোন অথবা পিটুইটারি FSH, LH হরমোনেরঅস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণওভুলেশন ব্যাহত করে।
• ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী বা কম থাকা।
• প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর
• অতিরিক্ত মানসিক চাপ।
• অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার কিংবা কিডনি রোগেও অভুলেশন ব্যাহত হতে পারে।
• কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি সাময়িক বা পরোপুরি ভাবে ওভারিকে অকার্যকর করে দিতে পারে।
জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যাঃ
• জারায়ুর টিউমার যেমন এডিনোমায়োসিস,ফাইব্রয়েড বা পলিপ।
• পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ (পি আই ডি) অথবা যেকোনো ইনফেকশনের কারনে ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে ওভাম এবং শুক্রানু নিষিক্তকরনের পথ বন্ধ করে দিতে পারে।
• এন্ডোমেত্রিওসিস বন্ধ্যাত্বের একটি পরিচিত কারন। এ রোগের লক্ষন মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরন,পেটে ব্যাথা ইত্যাদি।
• ইনফেকশন বা এন্ডোমেত্রিওসিস জরায়ু এবং এর আশে পাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক এনাটমি নষ্ট করে বন্ধাত্ব্যের কারন ঘটায়।
মেল(পুরুষ) ফ্যাক্টরঃ ৩০% ক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গীর সমস্যার কারনে বন্ধ্যাত্ব্ হতে পারে।
• শুক্রানু বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে বা অস্বাভাবিক গঠনগত কারনে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
• কোন কারনে শুক্রানু তৈরী ব্যাহত হলে,যেমন জীনগত ত্রুটি ভেরিকোসেলি,টেস্টিসের টিউমার বা ইনফেকশন অথবা কোন অউষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত কারনে নরমাল শুক্রানুতৈরীবাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।
পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই গর্ভধারনের হার বয়স বাড়ার সাথেকমে যায়। ৩৫ বছরের পর থেকে মেয়েদের ওভুলেশনের হার কমতে থাকে, একইসাথে শুক্রানুর কার্যকারীতাও বয়সের সাথে সাথে কমে। তাই এই চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সাফল্যের হারও কমে যায়।
____________________________

ডা. নুসরাতজাহান
সহযোগীঅধ্যাপক(অবস-গাইনি)
ডেলটামেডিকেলকলেজ,মিরপুর ১,ঢাকা।
চেম্বার: ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টা: মেডিকেলকলেজ,শ্যামলী।

আপনার মতামত দিন:


প্রেসক্রিপশন এর জনপ্রিয়