Ameen Qudir
Published:2017-02-24 23:55:31 BdST
বিল আদায়ে যে কান্ড করল কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতাল
ডেস্ক রিপোর্ট
________________
কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধেই সবথেকে বেশি অতিরিক্তি বিল আদায়ের অভিযোগ উঠছে বলে বুধবরাই সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিকেও তারা কতটা গুরুত্ব দেয়, সেই প্রশ্ন তুলে দিল ই এম বাইপাসের অ্যাপোলো হাসপাতাল। বিল মেটাতে না পারায় রোগীর পরিবারের ফিক্সড ডিপোজিট, এলআইসি, ব্যাঙ্কের চেক বই জমা রাখার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল এই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার বাল্টিকুরিতে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ডানকুনির বাসিন্দা সঞ্জয় রায়। প্রথমে তাঁকে বাল্টিকুরির স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তিরিশ বছরের সঞ্জয়ের আঘাত গুরুতর হওয়ায় ওই দিনই তাঁকে ই এম বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
অভিযোগ, ভর্তি করার পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে বিল। শেষ পর্যন্ত ছ’দিনে বিল দাঁড়ায় ৭ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা। অর্থাৎ দিন প্রতি এক লক্ষ টাকারও বেশি বিল হয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার এই বিপুল খরচ যে তাঁদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরেছিল সঞ্জয়ের পরিবার। তাঁরা তৃণমূলের এক সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঞ্জয়কে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
রোগীর পরিবারের আরও অভিযোগ, এসএসকেএম-এ সঞ্জয়কে স্থানান্তরিত করার অনুরোধ করলেও রাজি হয়নি অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বিল মেটানোর জন্য চাপ দিতে থাকে।
কিন্তু প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করতে পারেনি সঞ্জয়ের পরিবার। তাঁরা অভিযোগ করছেন, শেষ পর্যন্ত পরিবারের ফিক্সড ডিপোজিট, এলআইসি সার্টিফিকেট, ব্যাঙ্কের চেক বই হাসপাতালে জমা দেওয়ার পরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ সঞ্জয়কে ছাড়ে ওই বেসরকারি হাসপাতাল। এসএসকেএম-এ নিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত রাত তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের।
যুবকের মৃত্যুর পরেই ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সঞ্জয়ের পরিবার। তাদের অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলতি তো হয়েছেই, কিন্তু টাকা আদায়ের জন্য তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল।
প্রশ্ন উঠছে, বিল না দিতে পারায় কি এভাবে কোনও রোগীর পরিবারের থেকে ফিক্সড ডিপোজিট, এলআইসি, চেক বই জমা রাখতে পারে কোনও হাসপাতাল?
যদিও এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এখনও অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত দিন: