ডেস্ক

Published:
2021-05-02 20:02:34 BdST

৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়েছে


 

ডেস্ক
------------------
সেরামের উৎপাদিত করোনা টিকায়
৯৮% টিকাগ্রহণকারীর শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে এই ফল। ভারত বর্ষের গবেষণায়ও প্রায় একই রকম সাফল্য মিলেছে।

গবেষণায় দেখ যায়, প্রতি ৫০০ জন ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর মধ্যে সাতজন প্রথম ডোজ পাওয়ার পর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

সেরামের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দেহে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে বলে এই গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা গবেষণাটি পরিচালনা করেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, যদিও টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্নের মাত্রা এক নয়। তবে গবেষকেরা প্রাথমিকভাবে দেখেছেন, ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের পর গ্রহীতাদের মধ্যে ৯৮ শতাংশেরও বেশি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়েছে।

অ্যান্টিবডিগুলোর মাত্রা ২ থেকে থেকে ১২ পর্যন্ত। এই মাত্রা ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের শরীরের চেয়ে ৬০ বা তার বেশি বয়সীদের শরীরে কম উৎপন্ন হয়েছে।

এপ্রিলের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চমেক) উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. বিদ্যুৎ বরুণ বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের পর তার শরীরে অ্যান্টিবডির স্তর ৯-এর উপরে ছিল।

দেশে ভ্যাকসিন নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, শরীরে অ্যান্টবডির মাত্রা ৬-এর ওপরে থাকলে তা কোভিডের তীব্রতা কমিয়ে দেয়।

গবেষণাটি পরিচালনা করার জন্য, টিকা দেওয়ার আগে স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল হক জানিয়েছিলেন, অ্যান্টিবডি মাত্রার পরীক্ষা চলছে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে অ্যান্টিবডি এর মাত্রা ১০-১২ ছিল। ৬০ বছরের উপরের ব্যক্তিদের দেহে মাত্রা ছিল ৬ বা তার কিছু বেশি, তবে ১০ এর বেশি নয়।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (সিভিএএসইউ) দ্বারা পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় ২০০ জন কোভিড রোগীর উপর পরীক্ষার চালিয়ে দেখা গেছে, যারা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন তাদের আক্রান্ত হবার পর গুরুতর লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সিভিএএসইউ-এর সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল বলেন, ভ্যাকসিন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে একটি প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে।

তিনি আরও বলেন,“ভ্যাকসিন কিন্তু করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়া বন্ধ করে না। ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ক্লিনিকাল ট্রায়াল এখনও সম্পন্ন হয়নি। এই ধরনের একটি টিকা তৈরি করতে কয়েক বছর সময় লাগে, সেখানে আমরা পেয়েছি মাত্র এক বছর।"

অ্যান্টিবডি গবেষণার গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, প্রতি ৫০০ জন ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর মধ্যে সাতজন প্রথম ডোজ পাওয়ার পর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের পর ভারতে প্রায় ০.০২ শতাংশ ব্যক্তি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল এবং প্রায় ০.০৩ শতাংশ ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছিল দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পর।


"সময়ের সাথে সাথে একজন ভ্যাকসিন গ্রহীতার দেহে অ্যান্টিবডি স্তর বাড়বে এবং ভবিষ্যতে ভ্যাকসিনের একটি তৃতীয় বুস্টার শট প্রয়োজন হবে,”আশরাফুল হক বলেছিলেন।

ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বুস্টার শট হিসাবে তৃতীয় ভ্যাকসিন ডোজ প্রদান শুরু করে দিয়েছে।

আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আরও জানান, গবেষণাটি প্রমাণ করছে যে টিকা দেওয়ার ফলে মারাত্মক লক্ষণগুলো রোধ করা সম্ভব এবং এই প্রক্রিয়াতে জীবন বাঁচানো যাবে।
সিএমইউর চিকিৎসক ডা. বিদ্যুৎ বরুণ বলেন, মোট জনসংখ্যার ৭০-৮০ শতাংশকে যদি ভ্যাকসিন প্রদান করা হয় তবে দেশ নিরাপদ থাকবে।

আপনার মতামত দিন:


ফার্মাসিউটিক্যালস এর জনপ্রিয়