Ameen Qudir
Published:2017-12-31 16:38:54 BdST
দামী চীনা জীবনরক্ষাকারী ওষুধের নামে জীবনহত্যাকারী নকল ওষুধ চলছে
ডাক্তার প্রতিদিন
_________________________
দামী চীনা জীবনরক্ষাকারী ওষুধের নামে জীবনহত্যাকারী নকল ওষুধে বাজার এখন সয়লাব।
চীন থেকেই এসব ভুয়া ওষুধ আমদানী করে প্রতারক চক্র।
এই চক্রের তিন জন গ্রেপ্তারের পর পুলিশ এ নিয়ে ধারনা পেয়েছে। গ্রেপ্তাররা হল , রুহুল আমিন ওরফে দুলাল চৌধুরী (৪৬), নিখিল রাজবংশী (৪৪) ও মোহাম্মদ সাইদ (৪৫)। রুহুল ও নিখিলের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে, আর সাইদের নোয়াখালীর ছাগলনাইয়া।
চীনে গিয়ে নামিদামি ওষুধ নকল করে (সাধারণত এন্টি ক্যান্সার ও জীবন রক্ষাকারী নানা ওষুধ) আমদানি করতো দেশে। গত দশ বছর ধরে তারা এ ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ।
পুলিশকে তারা জানায় , চীন থেকে নকল ওষুধ তৈরি করে তা দেশে এনে বাজারজাত করত। , উদ্ধার করা হয়েছে ২১ হাজার পাতা নকল ওষুধ (যার মধ্যে রয়েছে এন্টি ক্যান্সার ওষুধ এমটি এক্স, ক্লোমাইড, রিভোকন)।
সিআইডি পুলিশের অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম মিডিয়াকে বলেন, দেশীয় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি বিভিন্ন সময় মৌখিকভাবে সিআইডির কাছে অভিযোগ করে আসছিল যে তাদের তৈরিকৃত ওষুধের হুবহু নকল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোতে শরীরের জন্য কার্যকরী কোনো উপাদান নেই। ফলে তাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল রোগীরা। এরপরই সিআইডি গত দেড় মাস ধরে গোপনে অনুসন্ধান শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ চক্রের মূল হোতা তিন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এ বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার অভিযোগে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু চীনে গিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করে তা দেশে এনে বাজারজাত করার ঘটনা আগে কখনো ধরা পড়েনি। ধারণা করা হচ্ছে, এমন চক্র আরো থাকতে পারে।
নজরুল ইসলাম আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন, পরিচয় হওয়ার পর তিন বন্ধু বিভিন্ন ব্যবসায়ীর চাহিদা মোতাবেক ইলেক্টনিক সামগ্রীর ক্যারিয়ার (বহনকারী) হিসেবে বিভিন্ন সময় চীনে যাতায়াত করেছেন। পরবর্তীতে তারা সিন্ধান্ত নেন এন্টি ক্যান্সারসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ নকল করে দেশে আমদানি করবেন। লাভও বেশি পাবেন। এরপরই চীনের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন নামি ব্রান্ডের ভেজাল ওষুধ তৈরির অর্ডার দেন। ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডসহ নিম্নমানের উপাদান দিয়ে এ সব ওষুধ তৈরি করা হয়। ওষুধ তৈরির পর তা ইলেক্টনিক্স সামগ্রীর প্যাকেটে ভরে নিজেরাই দেশে নিয়ে আসেন। পরে ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হতো। এদের গোডাউন থেকে উদ্ধার করা হয় এমটিএক্স, ক্লোমাইড ও রিভোকন নামে তিন ধরনের নকল ওষুধ।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, এ সব নকল ওষুধ প্রতি পাতা তৈরি ও আমদানিতে তাদের খরচ হয় ১২ টাকা। দেশে প্রতি পাতার বাজারমূল্য ২০০-৩০০ টাকা। আর তারা এজেন্টদের কাছে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতেন।
আপনার মতামত দিন: