Ameen Qudir

Published:
2017-03-08 23:44:54 BdST

ডাক্তারদের আলটিমেটাম অ্যাপোলোকে




নিজস্ব সংবাদদাতা

পুলিশ-প্রশাসনের চাপ তো ছিলই। এ বার নিজেদের ডাক্তারদের কাছেই প্রবল চাপে পড়ে গেলেন অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সকালে ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, ‘‘হয় আপনারা কিছু বিহিত করুন। নয়তো আমরা এক সঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেব।’’ শুধু অ্যাপোলো নয়, রাজ্যের অন্য বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদেরও ভবিষ্যতের স্বার্থে কাজ বন্ধ রাখার আবেদন জানাতে পারেন বলেও আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।

প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে কী করতে পারেন অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ? এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘যে ভাবে হোক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে তাঁর মধ্যে এই আশ্বাসটা জাগাতে হবে যে, অ্যাপোলো বদলেছে। এটা ওঁদের করতেই হবে। তা না হলে কাজের পরিস্থিতি থাকছে না।’’

বস্তুত, অজানা আশঙ্কায় সিঁটিয়ে রয়েছেন ডাক্তাররা অনেকেই। ঘনঘন ফোন বাজছে। ই-মেল আসছে। এমনকী দল বেঁধে হাসপাতাল বা বাড়িতেও চলে আসছেন রোগীরা। যেন মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক অভিযোগ!

তিন বছর, চার বছর, এমন কী ১০ বছর আগের অভিযোগ নিয়েও সরব হচ্ছেন অনেকে! কেউ হাসপাতালে ফোন করে বলছেন, অন্যায় ভাবে তাঁর চিকিৎসার বিল বাড়ানো হয়েছিল। এখন টাকা ফেরত দেওয়া হোক। কেউ বলছেন, তাঁদের যথাযথ সম্মতি না নিয়েই অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যে হেতু রোগী বাঁচেননি, তাই অস্ত্রোপচারের খরচ ফেরত চাই।

সংশ্লিষ্ট ডাক্তার রাজি না হলে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানানোর হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ আবার বলছেন কালীঘাট বা নবান্নে চলে যাবেন! সব মিলিয়ে চারদিকে ত্রাহি ত্রাহি রব চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের মধ্যে।

এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আগে প্রতি দিন গড়ে পাঁচ থেকে ছ’টা অপারেশন করতাম। এখন করছি দু’টো। সেটাও যেন না করতে পারলে ভাল হতো! এ ভাবে চললে আত্মবিশ্বাস চিড় খেয়ে যাবে।’’

এ দিন অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, থানা-আইনজীবীর চেম্বারে ছুটোছুটি করেই তাঁদের দিন কাটছে। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাতে তেমন ফল মিলছে না। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন ডাক্তাররা সব দোষ আমাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ব্যাপারটা অনেকটা বাল্মিকীর পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছে! ভুল যদি কিছু হয়ে থাকে, তা হলে ডাক্তাররাও তার দায় এড়াতে পারেন না।’’

এরই মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অস্ত্রোপচার দিন কয়েক ঠেকিয়ে রেখেছেন তাঁরা। কিন্তু সেটা বেশি দিন সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে সেই রোগীদের তাঁরা চেন্নাই পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন। যদিও হাসপাতাল কর্তারা এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়