Dr.Liakat Ali

Published:
2021-10-23 18:07:00 BdST

BMDC স্মার্ট রেজিস্ট্রেশনের প্রস্তাব দুই বছর আগে করেছিলেন ডা আজাদ হাসান


ডেস্ক
____________

BMDC স্মার্ট রেজিস্ট্রেশনের প্রস্তাব দুই বছর আগে করেছিলেন ডা আজাদ হাসান।


অক্টোবর ২০১৯ ডা আজাদ হাসান ডাক্তার প্রতিদিন সহ মিডিয়ায় লিখেছেন, BMDC রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট আধুনিকায়ন ও ভুয়া রেজিস্ট্রেশন প্রতিরোধে প্রস্তাবনা।

ভুয়া রেজিস্ট্রেশন প্রতিরোধে করণীয়ঃ

ইদানীং প্রায় দেখা যাচ্ছে, এক শ্রেণীর তস্কর এমবিবিএস এবং ইন্টার্নশীপ ট্রেনিং এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট জাল করে উক্ত বিষয়ে ভুয়া সনদ প্রদর্শন করে অবৈধ ভাবে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নিয়ে চিকিৎসক সেজে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে।

এমতাবস্থায় বিএমডিসির প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে, বিএমডিসির উচিত প্রতিটি সনদ (সার্টিফিকেট), সংশ্লিষ্ট সনদ ইস্যুকারী বা সার্টিফিকেট ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ হতে যথাযথ ভাবে পুনঃযাচাই করা। বাহিরের দেশে যেটা ‘ডাটা ফ্লো’ নামে পরিচিত।
প্রসংগত, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে যেমন মানুষ আজকাল দ্রুত তথ্য প্রযুক্তিগত সুবিধে পাচ্ছে, সেই সাথে এর অপব্যবহার সম্পর্কেও আমাদের সচেতন হওয়া আবশ্যক।

বর্তমানে শিক্ষাগত যোগ্যতা এমন কি পেশাগত অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উন্নত বিশ্বের দেশ সমূহ যেমনঃ আমেরিকা, কানাডাসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশ সমূহে ‘ডাটা ফ্লো’ যাচাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানীর মাধ্যমে এই কাজটি দীর্ঘ দিন যাবৎ চলে আসছে। তাই আমাদেরকেও এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে চিন্তা করে অনতি বিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাই প্রয়োজনে এ ব্যাপারে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে বিএমডিসির আলাদা একটি উইং খোলা যেতে পারে, যারা এই দায়িত্ব পালন করবেন কিংবা এই ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কোনো কোম্পানিকে সার্টিফিকেট যাচাই করণের এই দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য, সনদ যাচাই করে যদি কারো কাছে ভুয়া সার্টিফিকেট পাওয়া যায় তা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে ইতিপূর্বে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট বাতিলকরণের ঘোষণা দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে হবে এবং উক্ত প্রতারককে সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার (আটক) করে কঠিন ও কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আইন সংশোধন পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান রাখছি।
আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং মানুষের জীবন কোনো ছেলের হাতের মোয়া নয় যে, এটা নিয়েও প্রতারকরা ছিনিমিনি খেলবে।

বিষয়টি এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, ধারাবাহিক ভাবে অবৈধ ভাবে বিএমডিসির সনদ নিয়ে যখন ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা মানুষকে প্রতারিত করার ঘটনা একটার পর একটা প্রকাশ পাচ্ছে ততই বিএমডিসির প্রতি মানুষের অনাস্থা এবং ঘৃণা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএমডিসির উচিত দুষ্ট চক্রের এই অপবাদ হতে বেরিয়ে আসার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

“বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন কার্ড” আধুনিকায়ন প্রসঙ্গেঃ

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আজ সর্বত্র ডিজিটালাইজেশনের হাওয়া লেগেছে। আর সে জন্য আজ ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’এর রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটটি স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করার প্রস্তাব রাখছি।

প্রসংগত, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরণের কার্ডের প্রচলন আছে। তাছাড়া আমাদের দেশেও বিভিন্ন কর্পোরেট হাসপাতাল, যেমন- স্কয়ার কিংবা ইউনাইটেড কিংবা ল্যাব এইড হাসপাতালে আপনি কোনো ইনভেস্টিগেশন করতে গেলে আগে আপনাকে ওখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। আর তখন রোগীর (আপনার) নাম আর মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করে আপনাকে ওখানকার একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর সম্বলিত “কার্ড” দেয়া হয়। আপনি যখনই ওখানে কোনো পরীক্ষা করাবেন ঐ রেজিস্ট্রি নম্বরে আপনার সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। পরবর্তিতেও কখনো টেস্ট করতে গেলে পূর্বে রেকর্ডকৃত রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সাহায্যে সহজে আপনার নাম, ফোন নম্বর, পূর্বে সংরক্ষিত ডাটা থেকে বের করা সম্ভব হয়, তদ্রুপ বিএমডিসি-র রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত স্মার্ট কার্ডটিও সে রকম হবে।

প্রস্তাবিত বিএমডিসির কার্ডটি আকারে এটিএম কার্ডের মতো হবে।

উক্ত কার্ডটির প্রথম পৃষ্ঠায়ঃ
উপরে হেড লাইনে “বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল” এর নাম এবং ঠিকানা/ই-মেইল এড্রেস,
আর নীচে কার্ড হোল্ডারের নিম্ন লিখিত তথ্যসমূহ মুদ্রিত থাকবে।
১) কার্ড হোল্ডারের নাম
২) ন্যাশানাল আইডি নং
৩) স্পেশালিটি
৪) ক্যাটাগরি
৫) জাতীয়তা
৬) কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ
৭) বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নং

কার্ডটির অপর পৃষ্ঠায়ঃ
১) কার্ড ওনারের ছবি এবং স্থায়ী ঠিকানা
২) মোবাইল নম্বর
৩) ব্লাড গ্রুপ
৪) ই-মেইল এড্রেস
৫) বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নম্বর

উল্লেখ্য, এসব তথ্যগুলো সম্ভব হলে কার্ডের বাম পার্শ্বে ইংরেজীতে এবং ডানপার্শ্বে বাংলায় লেখা যেতে পারে।

বাংলাদেশে বৈধ ভাবে চিকিৎসা সেবার পেশা প্রাকটিস করতে হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে অবশ্যই বিএমডিসি-র রেজিষ্ট্রেশন ভুক্ত হতে হবে এবং এই কার্ডটি ওনারকে সার্বক্ষণিক বহন করতে হবে অথবা ফটোকপি সাথে রাখবেন। যদি উপযুক্ত কোনো কর্তৃপক্ষ এটা দেখতে চান তাহলে এটা দেখাতে বাধ্য থাকবেন।

বিঃদ্রঃ অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে কার্ডটির যে কোনো একপার্শ্বে বার কোড সংযুক্ত করা যেতে পারে।

এই কার্ডটি প্রতি ৫ বছর কিংবা ১০ বছর পর পর নবায়ন করতে হবে। যে কোনো চাকুরীতে যোগদানের জন্য কিংবা চাকুরীর চুক্তি নবায়নের জন্য এই কার্ডটি আপডেটেড থাকতে হবে।

Dr. Azad Hasan
SOMC, 21st Batch

 

১৯ অক্টোবর, ২০১৯

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়