Ameen Qudir

Published:
2020-02-20 22:12:44 BdST

'ডাক্তার হয়ে যে কারণে আমি গর্বিত ও আনন্দিত'


ডা. নাসিমুন নাহার মিমমি
ঢাকার বাংলা একাডেমী বইমেলার জনপ্রিয় লেখক 

_______________________

স্বামী স্ত্রী দুজনেই গত এক বছর ধরে আমার রোগী। প্রতি মাসেই রুটিন ব্লাড সুগার টেস্ট করাতে আসেন হাসপাতালে। আমি নিজের ভালো লাগা থেকেই পেসেন্টের হিস্ট্রি টেকিং এ খুবই গুরুত্ব দেই। যথেষ্ট সময় নিয়ে রোগের হিস্ট্রি তো বটেই রোগীর ফ্যামিলি হিস্ট্রি থেকে জীবন প্রণালীর হিস্ট্রিও নেই। জীবনের কত শত গল্প যে জানা যায় এই হিস্ট্রি টেকিং থেকে।
যদিও এটা করাই নিয়ম। তারপরও আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোর আউটডোরে রোগীর প্রচন্ড চাপ থাকে বলে হিস্ট্রি টেকিং এর মতো খুবই গুরুত্ব পূর্ণ একটা চিকিৎসা দেবার অনুষঙ্গ অনেক চিকিৎসই খানিকটা ইগনোর করে যান ( I'm sorry Dear Doctor fellows but it's harsh truth)।
তো হিস্ট্রি টেকিং থেকেই জেনেছি ওনাদের কোন জীবিত সন্তান নেই। মহিলা রোগীটা কয়েকবার ভিজিটের পর থেকে ভীষন স্নেহ করতে শুরু করলেন আমাকে। দু একবার বলেও ফেললেন-- ওনার মেয়েটা বেঁচে থাকলে আমার সমান হতো এখন !
আজকে ওনারা আমার জন্য গাজরের হালুয়া আর গাছের বড়ই নিয়ে এসেছেন। যদিও বড়ই এর সংখ্যা অতি সামান্য বলে লজ্জা পাচ্ছিলেন তারা। আমি তো প্রথমে "না না এসব কেন?" বললেও সাথে সাথেই বুঝলাম এই বড়ই আর হালুয়াতে কি অপরিসীম মমতা জড়িয়ে আছে। এটাকে না করা সম্ভব না আমার পক্ষে। ছোট শহরের, গ্রামের মানুষগুলো এখনো দুহাত ভরে ভালোবাসতে জানে। শুধুমাত্র এই স্বর্গীয় ভালোবাসাগুলো পাবার লোভে সম্ভবতঃ আমার আর কখনোই ঢাকা শহরে ফেরা হবে না.......

এই এক জীবনে একটা জিনিসই আমি বেহিসেবী রকমভাবে পেয়ে যাচ্ছি। তাহল অপ্রত্যাশিত সব ভালোবাসা। ভাগ্যিস ডাক্তার হয়েছিলাম। এ এক অন্যরকম পেশা। টাকা পয়সা শুরুতে কম থাকলেও মনের শান্তি কোটি টাকার পাওয়া সম্ভব। এত মানুষের দোয়া সামান্য চেষ্টাতেই, একটু সেনসেবল এবং মানবিক হলেই আপনি পেতে পারেন। যা আপনার জীবনে চলার পথে পাথেয় হয়ে উঠব। আমার তো সেই কবেই শেষ হয়ে যাবার কথা ছিল। কিন্তু তা ঘটেনি। আমার ধারনা ভালোবেসে মন থেকে করা অজস্র মানুষের দোয়া আমার চলার পথটাকে সহজ করে দিয়েছে।

Feeling Happy & Proud to be a DOCTOR ❤

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়