Ameen Qudir

Published:
2019-06-15 19:23:51 BdST

ডাক্তার বিদ্রোহের মুখে কলকাতার হাসপাতালে হামলাকারী গুন্ডারা এখন পস্তাচ্ছে , তওবা করছে


 

ডা. সুজন মুখোপাধ্যায়

____________________________

এক বয়োবৃদ্ধের স্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে কলকাতায় হাসপাতালে ২০০ জঙ্গী গুন্ডা এনে দায়িত্ববান চিকিৎসকদের মেরে কুপিয়ে যমের দুয়ারে পৌছে দেয়া রাজনৈতিক মদত পাওয়া পান্ডাদের এবার অনুশোচনা হচ্ছে। পস্তাচ্ছে তারা। তওবা করছে।
তাদের গুন্ডামির জেরে পশ্চিম বাংলা সহ সারা ভারতে চিকিৎসক বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়বে, তারা কল্পনাও করে নি। ভেবেছিল , রাজনৈতিক মদতের জোরে গুন্ডামি , কোপাবাজি করে পার পাবে। সে গুড়ে বালি এখন।
বরং এই ভয়ঙ্কর গুন্ডাবাজি টলমল করে দিয়েছে মমতা ব্যনার্জির মসনদ।
এতে এখন তওবা করছে সন্ত্রাসীরা। এদেরই একজন মিডিয়ায় বলেছে, ‘ব্যাপারটা এত দূর গড়াবে বুঝিনি’। আমরা ভেবেছিলাম, মিটে যাবে। আবেগ ধরে রাখতে পারি নি। এখন তাই পস্তাচ্ছি। তওবা কাটছি।
ডাক্তারদের পক্ষে অনড় দাঁড়ানো কলকাতার লেখক বুদ্ধিজীবি সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায় এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেন,
এক বৃদ্ধের মৃত্যুকে ঘিরে ২০০ লোক এনে বাচ্চা ছেলেমেয়েদের যথেচ্ছ পিটিয়ে এবার একটু ভয় পেয়েছেন ওনারা।
নিজের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তাদের কৃতকর্মের অনুশোচনা কতটা সত্য কে জানে। ডাক্তার বিদ্রোহের পক্ষে জন সমর্থন দেখে সন্ত্রাসীরা এখন আতঙ্কিত।
মৃত বয়োবৃদ্ধ মহম্মদ শাহিদের ছোট ছেলে মহম্মদ সাবির।
। বললেন, ‘‘মেনে নিচ্ছি, সব দোষ আমাদের। ব্যাপারটা এত দূর গড়াবে, বুঝিনি!

আশপাশে দাঁড়ানো জনা পঞ্চাশের ভিড়টাও একসঙ্গে আকুতি জানাল , ‘‘দয়া করে সব ঠিক করুন। শাহিদ ভাই ফিরবেন না। কিন্তু এ জন্য আরও অনেক রোগী মারা যেতে পারেন!

নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে দু’কিলোমিটার দূরে ট্যাংরার বিবিবাগান লেন। সেখানকারই গলি-তস্য গলি পেরিয়ে জামা মসজিদ লাগোয়া ঘরে দুই ছেলে ও এক বৌমাকে নিয়ে থাকতেন মহম্মদ শাহিদ। গত সোমবার এন আর এস হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু ও তৎপরবর্তী ঘটনাপ্রবাহেই এখন উত্তাল রাজ্য। রোগীর পরিজন ও সঙ্ঘবদ্ধ ২০০ গুন্ডা ট্রাক ভর্তি করে হামলা চালায় হাসপাতালে। তাতে দুজন ডাক্তার জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যায়। আহত হন আরও অনেকে। প্রতিবাদে চিকিৎসকেদের কর্মবিরতি ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়। চিকিৎসক বিরতি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। যার জেরে রাজ্য জুড়েই স্বাস্থ্য পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে বৃহস্পতিবার যাওয়া হয়েছিল মৃত শাহিদের মহল্লায়।
সেখানে হুলিগানদের এক জন বললেন, ‘‘খুব ভয়ে আছি। হাসপাতালে হাসপাতালে যা হচ্ছে, তাতে বড় কিছু হয়ে গেলে আমরা এখানে থাকতে পারব না!’’
গুন্ডাদের নেতা সাবিরের দাবি, ‘‘ মাথা ঠিক রাখতে না পেরে আমাদের ছেলেরা পাথর ছুড়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা এত দূর যাবে, বু‌ঝিনি।’’

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়