Ameen Qudir

Published:
2019-01-03 21:31:10 BdST

সন্ত্রাসী হামলাভূমি কর্মকর্তার অন্যায় দাবি না মানায় কেরানীগঞ্জে চিকিৎসকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা


 


সংবাদদাতা
___________________________

কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মীর মোশারফ হোসেনসহ কয়েকজন চিকিৎসকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ঘটে বুধবার । হামলার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এদিন সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ হল, ওই দিন সকালে সহকারী কমিশনার তার এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) নেয়ার জন্য ভূমি অফিসের একজন পিয়নকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠান। এসময় তিনি এসিল্যান্ডকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে আসতে বলেন এবং শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসিআর দেয়া হবে বলে জানান।

কিছুক্ষণ পর এসিল্যান্ড সেখানে উপস্থিত হন। তখন তার রক্তচাপ মাপা হয় এবং রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। পরে নিয়মানুযায়ী তাকে ইসিজি করার জন্য হাসপাতালে দোতলায় পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত টেকনেশিয়ান তার শার্ট খুলতে বললে তিনি রেগে সেখান থেকে চলে আসেন। এরপর তিনি ডা. মীর মোশারফ হোসেনের কক্ষে ঢুকে অকথ্য ভাষায় তাকে গালমন্দ করেন। চিৎকার চেচামেচি শুনে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রুমের সামনে ভিড় জমালে তিনি তাদেরও গালমন্দ করেন।

অভিযোগ, এসময় ভূমি অফিসের নাজির ১০/১২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে হাসপাতালে ঢুকে সবাইকে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা হাসপাতালে মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. জাকির হোসেন, সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আনোয়ার হোসেন, মেডিকেল অফিসার ডা. মোরশেদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে ডা. জাকির হোসেনের জামার কলার চেপে ধরে তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এসময় আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বের করে দিয়ে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় হামলাকারীরা।

এদিকে হামলার পর অভিযুক্ত সহকারী কমিশনার ও ভূমি অফিসের নাজিরের শাস্তির দাবিতে বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেন চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এছাড়াও তারা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেন।

তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. এহশানুল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরীফ রায়হান কবির, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন, কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে তারা এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজে যোগ দেন।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারী কমিশনার মিডিয়াকে বলেন, হাসপাতালের দোতলায় ইসিজি করতে গেলে এক নারী টেকনোলজিস্ট আমাকে জামা-কাপড় খুলতে বলেন। এতে আমি অপমানিত বোধ করি এবং সেখান থেকে চলে আসি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের সঙ্গে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার বিষয়টি সঠিক নয়।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষকে নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়