Ameen Qudir
Published:2018-09-04 19:00:01 BdST
ডাক্তারকে ওসির ঘুসি! ক্ষমা চেয়ে ধামাচাপার চেষ্টা কলকাতা পুলিশের
ইন্টারনেট ____________________
চিকিত্সকদের হুঁশিয়ারির মুখে পিছু হটল পুলিশ। ঘুসিকাণ্ডে আপোসের রাস্তায় হেঁটে নিগৃহীত চিকিত্সকের কাছে ক্ষমা চাইলেন যাদবপুর থানার ওসি পুলক দত্ত। শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলেই মিটমাট হল ডাক্তার নিগ্রহ ও তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া চিকিত্সক বনাম পুলিশ লড়াইয়ের জট।
আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিত্সক শ্রীনিবাস গেড্ডামকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছিল যাদবপুর থানার ওসি পুলক দত্তের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা হাসপাতালে গিয়ে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে সোমবার আলিপুর থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন চিকিত্সকেরা।
চিকিত্সক-নিগ্রহের প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে মিছিলের ডাক দিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স, ডক্টর্স অ্যান্ড পেশেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-সহ পাঁচটি সংগঠন। মিছিল শুরুর আগে সিএমআরআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন চিকিত্সকেরা। এর পরে মিছিল শুরু হয়ে পৌঁছয় আলিপুর থানায়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী ডাক্তারদের অভিযোগ, থানা প্রথমে এফআইআর নিতে অস্বীকার করে। এর পরেই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয় তাঁদের অবস্থান-বিক্ষোভ। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে বিক্ষোভ ওঠে। এর জেরে যানজট তৈরি হয় আলিপুরের রাস্তার একাংশে।
আন্দোলনকারী চিকিত্সকেরা জানান, হাসপাতালের তরফে কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এফআইআর করা হয়নি। কলকাতা পুলিশও অভিযুক্ত পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি। তবে অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নিলেও চিকিত্সক নিগ্রহের প্রতিবাদে তাঁদের কর্মসূচি জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন ডাক্তারেরা। কাল, বুধবার তাঁরা প্রতীকী কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জরুরি পরিষেবা দেওয়া হলেও বন্ধ রাখা হবে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে পরিষেবা।
আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী-স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুন। প্রয়োজনীয় তদন্ত করে কলকাতা পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ না করলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার দুপুরে উপনগরপাল (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদের অফিসে আলোচনায় বসে দু'পক্ষ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে সেই বৈঠক। সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতীম সরকার বলেন, "আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ওসি দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।"
যদিও তিনি জানিয়েছেন, ওই বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার এবং ওসি-র মধ্যে ঠিক কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, সে বিষয়ে 'অনুসন্ধান' চলবে। ওসি ক্ষমা চেয়ে নিলেও, এ নিয়ে নিগৃহীত চিকিত্সক শ্রীনিবাস গেদ্দেমের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
কলকাতার মিডিয়ার সৌজন্যে।
আপনার মতামত দিন: