Ameen Qudir

Published:
2017-03-16 04:30:33 BdST

এই লজ্জা কার?


 



 

 

 

 

ডা.শাহাদাৎ হোসেন রোমেল
________________________


ডা. শেখ মুনীর উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৮ তম ব্যাচের ছাত্র ছিলো। পুরো ছাত্রজীবনে তিনি আর্তমানবতার সেবায় ব্যস্ত ছিলেন সন্ধানীর একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে।

বন্যায়, ভুমিকম্পে কিংবা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের যে কোন প্রান্তে মানবতার সেবায় ঔষধ, পথ্য, কাপড় নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি সবার আগে।

দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণীয় ছিলো বলে, তাঁকে নির্দ্বিধায় ইন্টার্ন ডক্টর্স এসোসিয়েশন এর আহবায়ক নির্বাচনে দ্বিতীয়বার চিন্তা করে নাই তাঁর ব্যাচমেটরা।

নিপাট ভদ্রলোকের জীবনযাপনে অভ্যস্ত মুনীর নিজ ব্যাচমেটদের যেমন প্রিয় ছিলো, তেমনি পুরো ক্যাম্পাসে তিনি ছিলো সবার পরিচিত প্রিয়মুখ।

ডাক্তার হওয়ার পরেও দেখেছি, তিনি অন্য অনেক ডাক্তারের চেয়েই আলাদা জীবন যাপনে অভ্যস্ত।

রোগীর কল্যাণ ছাড়া তিনি কিছুই ভাবতেন না। কত অসহায় দরিদ্র রোগীর চিকিৎসা আর অপারেশন তিনি কোন প্রকার ফি না নিয়ে করেছেন, তা জানে শুধু তাঁর ঘনিষ্ঠ দুএকজন বন্ধু।

প্রচারবিমুখ ডা. মুনীর বরাবরের মতোই লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।


পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েশন করার পরে ও তিনি অনেকের মতো রাজধানীতে থাকার জন্য কখনো চেষ্টা তদবির করেন নাই। তাইতো কর্তৃপক্ষ যখন যেখানে তাঁকে পাঠিয়েছে, সেখানেই তিনি আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।


সম্প্রতি তাঁর সর্বশেষ কর্মস্থলে তাঁকে এক হার্টের রোগীর আত্মীয়স্বজন যেভাবে আহত করেছে, তা খুবই নির্মম এবং চরম নিষ্ঠুরতার প্রমাণ! তিনি নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে কেন হার্টের রোগীর চিকিৎসা দিলেন না! সেটাই তাঁর অপরাধ! তাইতো তাঁকে মেরে আহত করার সময় পাষন্ডরা হিংস্রতার বিষ ছড়িয়ে চিৎকার করে বলে "কেন তুই চিকিৎসা করলি না?"


অতীব দু:খের বিষয়, নিকট অতীতে শজিমেক হাসপাতালের ঘটনায় চারজন ডাক্তারের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের ত্বরিৎ দৌড়ঝাপ সারা দেশবাসী যেভাবে প্রত্যক্ষ করেছে, তার কিঞ্চিৎ পরিমাণ ও দেখা যাচ্ছেনা একজন মানবদরদী ডাক্তার আহত হবার ঘটনায়!
জানি না এ লজ্জা কার?

_____________________________
ডা.শাহাদাৎ হোসেন রোমেল । লোকসেবী চিকিৎসক। সিএমসি ২৮।

আপনার মতামত দিন:


মেডিক্যাল ক্যাম্প এর জনপ্রিয়