Ameen Qudir
Published:2017-03-10 18:55:03 BdST
বউ শাশুড়ির কাহিনি : ঠিক সিনেমা , টিভি সিরিয়ালের মত নয়
ডা. মিথিলা ফেরদৌস
_____________________________
মানুষের জীবনে মা আসে দুইবার।প্রতিবারই রহমত হয়ে আসে।শাশুড়ি ননদ বউ এর সম্পর্ক নিয়ে অনেক লেখালেখি,সিনেমা,নাটক আছে।কোথাও বউ,কোথাও শাশুড়ি খারাপ দেখে ভয় পেতাম।না জানি কি আছে কপালে,বিয়েও হইলো এমন বাড়িতে যে বাড়ির নিয়ম,নিজেরদের গোত্র ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পুর্ন নিষেধ।
পুরান ঢাকার কালচার।আমি শুধু পুরান ঢাকা না,ঢাকার ৩৭০ কিমি দুরের মেয়ে।বাড়ির বাকি ৩ বউ,পুরান ঢাকার।
এখন সেই শাশুড়ি ননদই আমার সবচেয়ে বড় আশ্রয়স্থল।না হলে চাকুরী করা, বাচ্চা পালা,পড়াশুনা, সংসার করা চিন্তাই করতে পারতাম না।বিশেষ করে আমার গুণধর পুত্র নিয়ে থাকার কথা আমি মা হয়েই কল্পনা করতে পারিনা।
তাকে স্কুল নেয়া,কোচিং নেয়া,গোসল করানো, খাওয়ানো(ভাত দিলে কয় রাইস খাবো,রাইস দিলে কয় বিরানি,বিকেলে সেমাই দিলে দিলে বলে নুডলস খেতে চায়) এইসব সামলায় তার ফুপি।আর দাদী তার খেলা আর ঘুমানোর সাথী।আর আলতাফ তার বউ বাচ্চার অত্যাচার ভোলার জন্যে প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে একবার মা এর সাথে একঘন্টা না কাটালে মাথা ঠান্ডা হয়না।
আমার শাশুড়ির একটা উদাহরন দিয়ে কথা শেষ করবো,যেদিন আমার শ্বশুর মারা গেলেন,সেদিন তাকে জানানো হয়নি,কিন্তু তবুও তিনি ঘুমাতে পারছিলেন না।তখন আমি সবাইকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে লাইট অফ করে, উনার মাথাটা আমার কোলে নিলাম,পরম মমতায় ১০ মিনিটের মাথায় ঘুমিয়ে গেলেন,সারাদিন ছটফট করতে করতে যখন কেউ তাকে ঘুম পাড়াতে পারছিলো না।
আমি জানিনা আমি তাকে কি দিয়েছি,তবে এইটুকু বলতে পারি কিছুটা আস্থা তিনি আমার কোলে মাথা রেখে পেয়েছিলেন।এইটাই আমার পরম পাওয়া।
শাশুড়ি বউ দুইজন দুই পরিবারের, মতবিরোধ থাকতেই পারে।তাই দুইপক্ষকেই ছাড় দিতে হয়।বিশেষ করে আমার মত চাকুরীজীবি বউদের এইটা বেশি বেশি করে ভেবে দেখা উচিত।
দ্র. লেখক ডা. মিথিলা ফেরদৌস ফেসবুক ফুটনোটে জানিয়েছেন , "বিপদ!শাশুড়ির ননদের নামে দুর্নাম,করাই নাকি ফেসবুকের বিনোদন,সেইটা করতে পারিনি তাই একজন আমারে কিছুক্ষন আগে ত্যাগ দিয়েছেন।কত বিচিত্র কিসিমের মানুষ যে আছে দুনিয়ায়!এতো দেখি মানব জাতির অদ্ভুত সংস্করন। "
__________________________________
লেখক ডা. মিথিলা ফেরদৌস । সোহরাওয়ার্দি হাসপাতাল। পেশায় ডাক্তার হলেও নিয়মিত লেখালেখির কারণে তিনি লেখক কলামিস্ট হিসেবে প্রবল জনপ্রিয় এখন।
আপনার মতামত দিন: