Ameen Qudir

Published:
2017-02-08 16:31:53 BdST

এএসপি ইফতেখায়রুল : অনন্য মানবসেবী


 

 

ডা. শাহাদত হোসেন
___________________________

এএসপি ইফতেখায়রুল ইসলাম।ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। তার সম্পর্কে জানাশোনাও হল মার্ক জুকারবার্গের কল্যাণে।

 

তিনি সংস্কৃতিমনা। বিতর্ক, উপস্থাপনা বিভিন্ন ক্ষেত্রেই সফল । তিনি একজন মানবিক পুলিশ। কাজ করেন মানুষের জন্য।

মানবসেবী ডাক্তারদের মত পুলিশও মানুষের পাশে সেবার জন্য; সেটা তিনি কাজে প্রমাণ করলেন।
ইমন হারিয়ে গিয়েছিল। বয়স তিন বছর। বাবা-মায়ের সঙ্গে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসে। হারিয়ে কেবল কাঁদছিল। তাকে দেখতে পান ইফতেখার। শিশুটিকে জিম্মায় নেন তিনি। ইফতেখায়রুল ইসলাম আশপাশের সব থানায় জানিয়ে দেন। ব্যবস্থা করলেন মাইকিংয়ের। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হলো না।

সবশেষে ফেসবুকে শিশুটির ছবিসহ পোস্ট দিলেন। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কয়েকশ শেয়ার ছড়িয়ে পড়ে সবার মধ্যে। ফেসবুকেই খোঁজ মেলে স্বজনের। একজন সহৃদয় জানান, রাজধানীর জুরাইন থেকে একটি শিশু হারিয়ে গেছে। তখন ইফতেখায়রুল ইসলাম সেই ছবিটি দেখাতে বললেন। হারানো শিশুটির ছবির সঙ্গে মিলে গেল।

সেইভাবে মিলে গেল ওর বাবা মা।

বাকি অনবদ্য গল্প শুনি স্বয়ং এএসপি মহোদয়ের কাছে।

 

 

ইফতেখায়রুল ইসলাম তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন,

""""@
ভালবাসা ঠিক বুঝি এখানেই.....

ইমন নামের ৩ বছরের ছোট্ট বাবুটা থেকে থেকে কাঁদছিল!

ওকে কাছে পেয়ে খুব মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কোন বাবা মায়ের আদরের ধন আমার কাছে....

আমার পুলিশী পোশাকের কঠোরতা ছাপিয়ে আমার আমি'র কোমলতা হয়তো কিছুটা ওকে ছু্ঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছিল, তাই আধো আধো বোলে আমাকে তথ্য দিচ্ছিল!

আমরা যেটি করলাম, চারিপাশে মাইকে ঘোষণা দেয়ার ব্যবস্থা করালাম, আমাদের আশেপাশের থানাগুলোতে বললাম, মসজিদগুলোতে বললাম এবং সবশেষে আমি বেছে নিলাম ফেসবুক।

একটি পোস্ট মাত্র কয়েক ঘন্টায় ২৩৩ টি শেয়ার হয়েছিল। এরমধ্যে আমার ফেসবুকে থাকা এক ছোট ভাই জানালো ওদের জুরাইন এলাকায় একটা বাচ্চা হারানো গেছে। ওকে বললাম ভাই তাড়াতাড়ি যেয়ে ছবি দেখাও। খবর পেলাম সবকিছু মিলে গেছে আলহামদুলিল্লাহ...

ইমন আমার টেবিলে বসে খাচ্ছিল আর কাঁদছিল, থামে আবার কাঁদে! আমি একবার ওকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে পাশের রুমে দিতেই ওর আবার চিৎকার করে কান্না! আহা! মায়ের বুক খালি করা আদরের ধন!!

ওর বাবা মায়েরও তর সইছিলনা, থানায় এসে আদরের মানিককে হাসিমুখে নিয়ে গেলেন। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা ইমনের বাবা আমাকে মুরগীর মাংশ দিয়ে ভাত খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে গেছেন! বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে ছোট্ট আদরের ধনকে হারিয়ে ফেলেছিলেন! তার বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে যা পেলাম- এ জীবনে এ প্রাপ্তির কাছে বাকী সব তুচ্ছ!

ভালবাসা ঠিক এখানেই.... ফেসবুক দিয়ে কারো কারো আদরের মানিককে ও ফিরে পাওয়া যায়! ফেসবুকের বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যারা শেয়ার করে সাহায্য করেছেন...

ইমনকে আমার একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়েছি, আমাকে মনে রাখতে বলেছি, ওহ লজ্জ্বায় মাথা নীচু করে হাসি দিয়েছে।

ইমনরা বেড়ে উঠুক বাবা মায়ের সুশীতল ভালবাসায়...ভালবাসা ঠিক সেখানেই.."""
@

 

_______________________________________


লেখক ডা. শাহাদত হোসেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।

 

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়