Ameen Qudir

Published:
2018-12-28 05:25:57 BdST

মানবকল্যাণঅবসরে ডা.আব্দুল্লাহ :মানবকল্যাণ যার টার্গেট ও নীতি; তাকে কেউ হারাতে পারে না


 


ডা. আবদুর রহমান
_______________________

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউ থেকে অবসরে গেলেন বাংলাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তি চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।ভক্ত অনুরাগী ও রোগীদের অনেকেরই ভাষ্য, তার হাতের মহৎ স্পর্শে মৃতপ্রায় মানুষের দেহেও যেন জীবন ফিরে আসে। ঈশ্বরের পর যে চিকিৎসক; সেটা ডা. আব্দুল্লাহর মত মানুষরাই প্রমাণ করেছেন। অনেকে তাকে জীবনদাতা বলেও অভিহিত করেন।
তার বিদায়ক্ষণে তাই ভক্ত অনুরাগী শিক্ষার্থী, অনুজপ্রতীম শিক্ষক চিকিৎসকদের চোখে ছিল অশ্রু। বিদায় অনুষ্ঠানে তাই বক্তাদের কথায় উঠে এসেছে এক মহৎ প্রাণ চিকিৎসকের কল্যাণচিত্র।

বৃহস্পতিবার ২৭ ডিসেম্বর সকালে বিএসএমএমইউ এর ডি ব্লকে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের হলরুমে তার বিদায়ী সংবর্ধনা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান।

আরও উপস্থিত ছিলেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহর সহধর্মিনী অধ্যাপক মাহমুদা বেগম, অধ্যাপক ডা. মোঃ ফরিদ উদ্দিন, অধ্যাপক ও কবি ডা. মোঃ আবদুর রহিম, অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল জলিল চৌধুরী;পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন, প্রমূখ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ হলেন এমন একজন গুণী শিক্ষক, চিকিৎসক, গবেষক, প্রশিক্ষক যাঁর মাধ্যমে কোনো কোনো জায়গায় প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত পরিচিতি লাভ করে। রোগীরা অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল্লাহর নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারণ করেন।
অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ হলেন তরুণ চিকিৎসকদের জন্য অনুসরণীয় অনুকরণীয় শিক্ষক ও চিকিৎসক। এই বিশ্ববিদ্যালয় সব সময়ই তার অভাব অনুভব করবে।


আব্দুল্লাহ স্যার এ পর্যন্ত চিকিৎসক জীবনে রোগী , বন্ধু , সহকর্মী, শিক্ষার্থী , কর্মচারী সকলের সঙ্গে নির্মল হাসিমুখে কোমল আচরণ করেছেন। কেউ তার কাছে ব্যথা পায় নি।
বিদায় আসরে তার সেই হাসি ছিল অম্লান। এসময় অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, জীবনের লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ। মানবকল্যাণ যার টার্গেট ও নীতি; তাকে কেউ হারাতে পারে না। সে কখনও পরাজিত হয় না। কারো ক্ষতি করা নয়, ভালো কাজ করার উদ্যম হবে। মানুষের জীবনে কিছু করে যাওয়ার মতো সময় খুব অল্পই পাওয়া যায়। সংক্ষিপ্ত মানব জীবনের পরিভ্রমণের সেই আরো সংক্ষিপ্ত সময়ে ভালো কিছু অর্জন করে তা মানুষের মাঝেই বিতরণ করে যেতে হবে।
তরুণ চিকিৎসকদের আদর্শ ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, তরুণরা সকলেই ভালো মানুষ ও ভালো চিকিৎসক হবেন সেই প্রত্যাশা করছি। জীবনে আশাহত হওয়া যাবে না। সমালোচনায় কান দেয়া যাবে না। সততা ও আন্তরিকতার সাথে বারবার এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে এটাই আমার কামনা।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহর সহধর্মিনী অধ্যাপক মাহমুদা বেগম বলেন, জীবনে সফল হওয়ার জন্য আত্মবিশ্বাস, টার্গেট, সময়ানুবর্তিতা, স্বার্থহীনতা, একাগ্রতা, চেষ্টা ও আশাবাদী থাকাটা খুবই জরুরি। এসকল গুণসমূহ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ-এর মাঝে বিদ্যমান রয়েছে বলেই তিনি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন।

সভায় বক্তারা বলেন, অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ হলেন আদর্শবান ব্যক্তিত্ব, শিক্ষক ও চিকিৎসক। রোগীদের প্রতি কোনোরকম অবহেলা তিনি সহ্য করতে পারেন না। সহজ সরল এমন গুণী শিক্ষক ও চিকিৎসককে অনুসরণ করেই তরুণ চিকিৎসকদের আলোকিত মানুষ, আলোকিত চিকিৎসক হওয়া জরুরি।
অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ মানবদরদী চিকিৎসক । দেশের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায়সহ সামগ্রিক চিকিৎসা পেশার উন্নয়ন, মর্যাদা বৃদ্ধি ও সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ স্যার অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং বর্তমানেও তা অব্যাহত রয়েছে।

আপনার মতামত দিন:


মানুষের জন্য এর জনপ্রিয়