Dr. SAYEED ENAM

Published:
2022-05-16 22:30:18 BdST

বিয়ে ব্যাবসা না: ব্যবসায় রিস্ক থাকে, লাভ অথবা লস


ডা. সাঈদ এনাম সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি সিলেট মেডিকেল কলেজ




ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি
সিলেট মেডিকেল কলেজ
_____________________


বিয়ে হতে হয় সমান স্ট্যাটাসে। বিয়ের সম্পর্ক আর ভালোবাসা বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক এক নয়। ভালোবাসা বন্ধুত্ব স্বতঃস্ফূর্ত বিষয় বলে এতে স্ট্যাটাসের ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বিয়ে সাধারণত আলাপ আলোচনা, যাচাই বাছাই এবং দেখেশুনে হয় এখানে স্ট্যাটাসের তফাৎ রাখাটা অন্যায়৷ ছেলে মেয়ে দুজনকেই বিপদে ফেলে দেবার মতো।

বিয়ে ব্যাবসা না। যেমন জীবন ইনভেস্ট করলাম লাভের আশায়। বিয়ে'কে যদি ব্যাবসা ভাবেন তাহলে আপনি মাথায় ব্যাবসার 'রিস্ক' বিষয়টি রাখতে হবে। কারন ব্যবসায় রিস্ক থাকে, লাভ অথবা লস।

ধরুন আপনি একজন দরিদ্র পরিবারের ছেলে। কোন কারনে বা ব্যবসায়ীক চিন্তা ধারা মাথায় নিয়ে আপনার বিয়ে হয়ে গেলো ধনী পরিবারের মেয়ে সাথে। সেটা কি সমীচীন হলো?

অথবা ধরুন আপনি একজন ধনী পরিবারের ছেলে। ব্যবসায়ীক বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে আপনার বিয়ের আয়োজন হয়ে গেলো দরীদ্র পরিবারের একটি মেয়ে সাথে। সেটা কি ঠিক হলো?

না এরকম পার্থক্য নিয়ে বিয়ের মতো স্পর্শকাতর সম্পর্কে যাওয়া কোন ভাবেই সমীচীন নয়।

আপনি যে পরিবেশে বড় হয়েছেন সম্পুর্ন ভিন্ন পরিবেশে একজনের সাথে পাশাপাশি বসবাস করা যথেষ্ট কঠিন বিষয়। কিছু কিছু অভ্যাস যা একজন ছেলে বা মেয়ে রপ্ত করেন শৈশব কৈশোরে তা হুট করা পরিবর্তন করা তার জন্যে অসম্ভব বা কঠিন।

"ভালোবাসা থাকলে সবই সম্ভব" এরকম ফালতু কথার ঝুরি বা যুক্তি দিয়ে বৈরিত্য পুর্ণ পরিবেশের বেড়ে মানুষকে এক সাথে থাকার অনুপ্রেরণা যোগানো নিতান্ত হাস্যকর বা চৌর্যবৃত্তি।

 

২.
আজকের চা'টা বেশ!

মিস রয় (১৮) ব্রিফ সাইকোটিক ডিসওর্ডার এর পেশেন্ট ছিলো। পরীক্ষার সময় হটাৎ করে তার সাইকোলজিক্যাল ব্রেকডাউন হয়। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়। সে অবস্থাতেই কোনমতে পরীক্ষা এটেন্ড করলো।

পরীক্ষা শেষ করে একবার ফলোআপ এসছিলো। যাবার সময় বলেছিলো একদিন তার বাসায় চা'খতে যেতে হবে। বলেছিলাম নিজ হাতে যেদিন চা বানাতে পারবে সেদিন যাবো। ভুলে গিয়েছিলাম, যাওয়া আর হয়নি।

আজ হঠাৎ নিজেই চা বানিয়ে নিয়ে একটি ফ্লাক্সে নিয়ে আসলো। সাথে এক প্যাকেট বিস্কিট। আরেকটি ব্যাগে কাপ-পিরিচ। চায়ে চুমুক দিয়ে বললম, ও-মা...এতো অসাধারণ!

সাথে তার মা আসলেন। তিনি জানালেন তারা বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু তার পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো হয়েছে।

এ মাসেই তার ভর্তি। অনলাইনে ভর্তির নেওয়া হবে। ইংরেজি নিয়ে পড়বে। পাশাপাশি IELTS ও দিবে। মায়ের শংকা পড়ার চাপে আবার যদি..!

বললাম, যে মেয়ে নিজ হাতে এতো চমৎকার 'রং ও স্বাদের' চা বানিয়ে আনতে পারে, সে অবশ্যই শংকা মুক্ত।


(বাংলাদেশের প্রেক্টিস লাইফে চেম্বারে গাছের পেয়ারা, পেপে, কাঠাল, পুকুরের মাছ, ডিম, সবজি এসব প্রায়ই আসে। কিন্তু মানসিক রোগের রোগী সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে ফ্লাক্সে করে এমন মজাদার চা এনে আপ্যায়ন এই প্রথম)##

 

 

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়