Ameen Qudir

Published:
2016-11-15 14:18:07 BdST

মন্ত্রপাঠ কবি জিললুর রহমান এর কবিতাগুচ্ছ “সব নদী গঙ্গা নয়”


 


জিললুর রহমান

চট্টগ্রামে জন্ম, নিবাস, কর্ম। পেশায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষক। আশির দশকের শেষ দিকে থেকে লিখালিখি। লিটল ম্যাগাজিন ‘লিরিক’ এর সম্পাদনা পরিষদ সদস্য। উত্তর আধুনিক কাব্য চর্চার পথিকৃৎদের একজন। মূলত লিরিক, নিসর্গ সহ বিভিন্ন ছোট কাগজে লিখে আসছেন দীর্ঘদিন। গ্রন্থ সংখ্যা-৫ঃ- অন্য মন্ত্র (কাব্যগ্রন্থ, ১৯৯৫), উত্তর আধুনিকতাঃ এ সবুজ করুণ ডাঙায় (প্রবন্ধ সংকলন, ২০০৩), শাদা অন্ধকার (কাব্যগ্রন্থ, ২০১০), অমৃত কথা (প্রবন্ধ সংকলন, ২০১০), আধুনিকোত্তরবাদের নন্দনতত্ত্বঃ কয়েকটি অনুবাদ (২০১০)।]

জিললুর রহমান এর কবিতাগুচ্ছ “সব নদী গঙ্গা নয়”

১।
মন্ত্রপাঠ
জিললুর রহমান

মন্ত্র লিখি মন্ত্র লিখি তন্ত্রটুকু ভুলে
অন্ত্র নালী সুস্থ থাক শাক দুগ্ধ গিলে
মন্ত্র লিখি শান্তি হোক ব্রহ্মান্ড নিখিলে
শান্তি সুখ পরিতৃপ্তি সুনামগঞ্জ ঝিলে
বায়ু রিক্ত দুষণ দুষ্ট বায়ু শতদল
আয়ু লাভ শত বর্ষ আকাংখা চঞ্চল

ধর্ষণং হন্তারক গন্তব্য অশোকে
সম্মোহন সুশাসন দৈব দুর্বিপাকে

২।
শূন্য
(কবি মাসুদ খানকে নিবেদিত)
জিললুর রহমান

গোলাকার ছোটবৃত্ত বড়বৃত্ত শূন্য – মূল্যমান মুহ্যমান শূন্য তীব্র শূন্য
বৃত্তাকারে শূন্য থাকে ডিম্বাকারে শূন্য – মহাবিশ্বে অন্ধকার যতো করো পুণ্য
নভোচারী শূন্যে ধায় অনন্য গতিতে, সংখ্যা ডানে মূল্যবান অর্থকরী হিতে
শূন্যমান প্রেমলাভ শূন্য বিরহেও, আত্মারাম শূন্যে ছোটে শূন্য নির্বাণেও
স্বরবৃত্ত পয়ার অথবা মন্দাক্রান্তা ছন্দ, অক্ষরে কী মাত্রাবৃত্তে শূন্য নহে মন্দ
কাব্যরাত নিদ্রাহীন শূন্য অর্থহীন, ছন্দজপে দিন কাটে বৃত্ত ঘেরা দিন
দুষ্ট গরু ভোগে যাক, গোয়াল শূন্য ভালো – কানা মামা তারপরেও আশাভঙ্গে আলো
শূন্য বাড়ি শূন্য গাড়ি সবতো মরীচিকা – শূন্য প্রতি ধাবমান প্রদীপের শিখা
নারায়ণে শূন্যযোগ, শূন্য সাধনাতে – শূন্যমাপে চন্দ্রভোগ পূর্ণিমার রাতে
আজীবন শ্রমকর্ম শূন্যে যাবে শেষে – শূন্য জেনে ওষ্ঠ ছুঁই রাঙা গণ্ডদেশে

৩।
বৃহন্নলা
জিললুর রহমান

শহরে গড়ায় জল
পাখি ওড়ে
গাড়ি চরে
অহর্নিশ
স্রোতোন্মত্ত মেলার মানুষ
কোথাও বটের গাছ – বৃহন্নলা!
নোটবুকে ডায়েরি সংবাদে
পাপপুণ্য নিরাবেগ

কে মরে কে রিপুর শিকার
হন্তারিত প্রাণবায়ু, নিঃসাড় তনু
রক্তাক্ত অধর গলা
প্রান্তরের পড়ে থাকা হিম দেহ
মর্গে না শূন্যে উড়াল…

৪।
কাঠবাদামের বন
(কবি আসমা অধরাকে)
জিললুর রহমান

মৃত্যু উপত্যকায় বসে
নিথর সন্তানের দিকে দৃষ্টিরহিত প্রিয়
‘ঐ ঘুমঘোর সঘন- নিদ্রাতুর
এক মোহগ্রস্ত কাঠবাদামের বন’।

কোথায় খুঁজবে বলো ল্যান্ডস্কেপ?
দেখেছো কী বৃশ্চিক যাতনা …
গাঢ় হাতে মুড়ে রাখা গিলোটিন!
মুখশ্রীর উন্মাদ অপাঠ্য শ্লোক
বিনিদ্র পীড়ন, আহা!
এ পাপ ক্রন্দন, এ সুর মূর্চ্ছনা,
আশাহীন মৌন গজল…
রুষ্ট কাপালিক দেখেনি মৃত নক্ষত্র শরীর

পড়ে আছে দেবশিশু অনন্ত আলোয় …

৫।
ট্যুর গাইড
জিললুর রহমান

আমার ধারণা ট্যুর গাইড হওয়ার সহজ গুন হচ্ছে অফুরন্ত কথা বলা, কারণে অকারণে কথা বলা, নিজে হাসা আর সবাইকে হাসানোর চেষ্টা করা। বয়সে প্রৌঢ় আর লিঙ্গে নারী হলে আমার মনে হয় এই গুনটা স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ে। আমাদের গাইড এই গোত্রেরই একজন।
আমাকে বাসে তুলতে তুলতে জানতে চাইলো আমি কোন দেশ থেকে এসেছি। আর আমার উত্তর পেয়ে সে বিস্মিত, জীবনে বাংলাদেশের কাউকে এই রকি পর্বতের ট্যুর-এ সে গাইড করে নি। পুরো বাস-ভর্তি ট্যুরিস্টকে চিনিয়ে দিলো, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি।
আমি দেখলাম, সুদূর জাপান থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকেই ট্যুরিস্ট এসেছে। যাই হোক, হাজার বছরের পুরণো স্নো-স্যু এর গল্প শুনাতে শুনাতে আমাদের গাইড আমদেরকে হাজির করলো বরফ ঢাকা রকি পর্বতের একট ভ্যালি-তে।
অবিশ্রাম কলকল কথায় ট্যুর গাইডের কন্ঠ বরফের খরস্রোতা নদী হয়ে যায় …

৬।
ধবল পর্বত
জিললুর রহমান

ধবল পর্বতেরও আকর্ষণ আছে, মোহ আছে, তোমার মতোই
তাইতো এগিয়ে চলি – আরো আরো গভীরে – না জানি কী পাবো!
এইভাবে পর্বতের আরও আরও গভীরে ঢুকতে থাকি – এক অদম্য নেশায় পেয়েছে যেন, ঠান্ডায় নাক-মুখ মাফলার-টুপিতে ঢেকে কিম্ভুত এগিয়ে চলেছি, যেমন তোমার কাছে এগিয়ে যাই।
ঢালু জায়গায় আমাদের স্লাইড করতে হবে, সবাই এগিয়ে গেলেও আমি তোমার কথা ভেবে, বাচ্চাদের কথা ভেবে থেমে গেলাম…

৭।
আতশবালিকা
জিললুর রহমান

মহাশূন্য উজাড় করে উচ্ছসিত অযুত কিরণ ধেয়ে আসে কালে কালান্তরে, নক্ষত্ররাজির ফেরি । সুপার মার্কেটের চাতালেও বিচ্ছুরণ অজস্র ফোয়ারায়। উৎসব লোভী মানুষীরা হুল্লোড়ে মত্ত দোকানে সেসবে নিঃসাড়। তোমার দৃষ্টি কেন বর্ণময় স্বর্ণ নয় তবে! বাহারি ফুলের গায়ে অতীন্দ্রিয় আলোকসজ্জা অমারাতের দ্বিতীয় প্রহর। কে কন্যা আতশবালিকা আসমানী রশ্মিরজ্জু বেয়ে ওঠো অনন্ত ইথারে? আমারও রোশনাই প্রিয় চোখ; ধরবে কি উর্ধমুখী হাত …

৮।
সব নদী গঙ্গা নয়
জিললুর রহমান

সব নদী গঙ্গা নয় শিবের সান্নিধ্য পাবে
আমারও সান্নিধ্যে এসে ধন্য ছিল হালদা কর্ণফুলী

নদীরা সংকীর্ণ হলে চর জাগে, দেবতারা দূরে সরে যায়
নদীর বালুর চরে মাছের পিপাসা মিছে মরে

নদীর ঢেউয়ের কাছে আর কোনো প্রশ্ন রেখো না
সে কেবল ছলকে ছলকে যাবে
নদীকে দু’হাত তুলে ডাকো, ফিরেও সে তাকাবে না
সে তার আপন গতিতে ছোটে।
নদীকে মাছের গল্প বলি
মুখ বাঁকিয়ে বলে এ তো সেই মাসীর গল্প মায়েরই নিকট
নদীকে বুকের কাছে ডাকো
হৃদয়ের শব্দ শোনাবে সে ধুকপুক ধুকপুক
সব নদী গঙ্গা নয় হৃদয়ে বন্যা বইয়ে দেবে…

৯।
শাদা শার্ট
জিললুর রহমান

আমাকে যখন ওরা ক’জন ছুরি কী তরোয়াল দিয়ে খোঁচাতে খোঁচাতে উদযাপন করলো সেবারের হোলি উৎসব, বিজয়া দশমীর দিনে বাবার কিনে দেওয়া ধবধবে শাদা বেলী-শিউলি শার্টটিকে কী সুন্দর কাইয়ুমের চিত্রকলায় লাল করে দিলো, তখন তোমরাও সে মহৎ শিল্পোৎসবে ব্রতী হয়েছিলে। মনে মনে হৃদয়ে বেজেছে ডমরু মন্দিরা খোলের কেত্তন। হোলি হে, হরি গো! সেদিন মেঘেরা ক্রন্দন থামিয়ে রেখেছিলো, বজ্রধ্বনি মিলিয়েছে তোমাদের শঙ্খনাদে। আর হবে না-ই-বা কেন, পাশেই জ্ঞানঘর, শিল্পাচার্যের তুলি, কাছেই শুয়ে অপলক ত্রিশংকু জননেতৃগণ, দূরে দৃশ্যমান লেলিহান শিখা অনির্বান। দ্যুতিময় শার্টেও যেন সে অদ্ভুত শিখার চাঞ্চল্য। আমিও উড়তে থাকি; পড়ে যাওয়ার আগে, চেতনা লুপ্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত আমিও তোমাদের উল্লাসের সাথী, শিখার ঊর্ধ্ব-তানের সাথে আমার ভেতরে শিব ভর করে, আর আমিও নেচেছি বৈষ্ণবী।
আমার নিভেছে আলো। যে তুমি দর্শকের বেশে, অথবা মেতেছো তালে, বেঁচে র’বে আরো দিন, অর্বাচিনবৎ – সত্যি কি আছো বেঁচে? নাকি প্রেতাত্মা সকলে, উর্ধ্ববাহু নৃত্যপটু ঘোলাটে আকাশে। রঙখেলা থেমে গেলে কেউ বলে, বাহ্ অনেক হয়েছে, এবার ফেরা যাক। আরো আরো কতো কাজ পড়ে আছে…

১০।
রাইনের জলে একদিন
জিললুর রহমান

রাইনের জলে একদিন কেটেছি সাঁতার দুহাজার দশে
প্রমত্ত প্রপাত তার কী ভীষণ হাঁকডাক
সারাক্ষণ গর্জে আর তীব্র বেগে ফুঁসে
তার ফাঁকে এঁকেবেঁকে খেয়াপারে চলেছে তরণী
তরঙ্গ উল্লাসে মত্ত রাইন
বুকে দুরুদুরু ভয়ের সিম্ফনি
তবুতো উঠেছি ভেজা টিলার চিবুকে
তখনো ঘুমিয়ে তুমি বাংলার হরিদ্রাভ সুখে

১১।
শ্যামল কান্তির কান
জিললুর রহমান

কীভাবে অতিক্রম করবে পৃথিবীর সব ক’টা নদী!
পাথর ভাসিয়ে নেবে মন, ঢেউয়ের মতোন।

দীর্ঘশ্বাসগুলো কিছু পরিচর্যা-প্রিয়, কিছু হাহাকার
হুতাশন মনোযোগ নিয়ত প্রত্যাশী,
তোমার তন্দ্রার ফাঁকে গলগণ্ডে ঘাম,
আমার আকাংক্ষা প্রিয় বড়ো মনকাড়া, তৃষ্ণা জাগানিয়া
তবু দীর্ঘশ্বাস বাতাসে চৌদিকে।

আমার শরীর জুড়ে কান, কানের বিস্তার;
নীল ঘাম নাকে নাকে অশ্রুর ফোঁটায় নীল –
আমার পৃথিবী আহা নিতান্ত বধির!
আমাদের পাঠশালার দেয়ালে দেয়ালে
পোস্টার সাঁটানো সৌম্য শ্যামল কান্তির কান।

১২।
পঞ্চাশে পড়েছে পা
জিললুর রহমান

পঞ্চাশে পড়েছে পা
ভুতের পাঁচ পা দেখে বেড়ে ওঠা আমার শৈশব,
বেড়েছে কি বয়স দু’মুঠো?
মাথার ভেতরে শুধু মালাপাতি, পুতুলের বিয়ে, ছি কুতকুত
আছারগুলার ফড্ডাসি গুলতি
সুতোয় মাঞ্জা মেরে বোঁ’কাট্টা ঘুড্ডির কাটাকাটি…
বেড়েছে কি বয়স দু’মুঠো?

কখনোবা ভাঙ্গা কঞ্চির ছাত্রের গায়ে বেত্রাঘাতের খোলামকুচি…
রুটিন করেই পাড়ার পুকুরগুলো হল্লা করে সাঁতরে ফেরা
ফুটবল খেলার ছলে কাদাজলে মাখামাখি প্রতিটা বর্ষায়…
কখনো সুগন্ধ ছড়িয়ে পাশ ঘেঁষে চলে যাওয়া রহস্য নারীর দিকে
চোখ পড়লে চনমন জেগেছে যৌবন…
আজও তোমাকে দেখে দক্ষিণের জানালায় চাঁদের প্লাবন।
পঞ্চাশে পড়েছে পা, বেড়েছে বয়স দু’মুঠো?

তারপর সেই কার্ল মার্ক্স, লেনিন, ট্রটস্কি, চে,
এম এন রায়, মনি সিংহের পদাবলী…
সময় পেরিয়ে চলে জীবনানন্দ, রবীন্দ্র ঠাকুর, শামসুর রাহমানে।
‘সোনালী কাবিন’ ছুঁয়ে দেখি কোথাওবা ‘রাজা যায় রাজা আসে’…
বাড়ে না বয়স তবু

যখন সুর্য তোমার আজ্ঞাবহ হলো, আমিও তো তার অনুগামী
ঊনিশ বছর তুমি সময়ের শাসন নিয়েছো…
আমাদের আঙিনায় শীতকাল নামে নি কখনো
প্রাত্যহিক আষ্ঠেপৃষ্ঠে থাকি
তবু কি বেড়েছে বয়স?

পঞ্চাশে রেখেছি দু’পা
সারেগামা তবুতো শিখিনি
মেয়েটা কলেজে যাচ্ছে দেখে আমাকে ডেকোনা বুড়ো
এখনো তোমার জন্য পাড়ি দিতে
কর্ণফুলী করি না কসুর

পঞ্চাশে পড়েছে পা
বেড়েছে কি বয়স দু’মুঠো?

১৩।
লাশঘর
জিললুর রহমান

লাশঘরে হিম ঠান্ডা নিরবতা ভয়
লাশঘর খালি থাক, হোক শব্দময়
অপঘাতে মৃত্যু এলে লাশঘর ভরে
আমাদের যেন বন্ধু ভালো মৃত্যু হয়

লাশঘরে মনোরঞ্জন ডোম ময়না তদন্ত করে
কাটাকুটি সারা দেহে, করে কি অন্তরে?
ভুস করে ভুঁড়ি ফাঁক, গৃহ গন্ধময়
লাশঘরে আত্মারাম দেহখাঁচা ছাড়ে!

লাশঘরে আলো জ্বলে বত্রিশ পাওয়ার
সাজানো বিছানা জুড়ে ভুতুরে কারবার
কোথাওবা মরা রক্ত ঋণ শোধ করে
আমাদেরও দিন আসে লাশঘর যাওয়ার?

আমাকে কখনো যদি আনো লাশঘর
দেহটাকে শুইয়ে দিও ন্যাপথলিনের পর
আত্মা উড়ে বসতে যেন পারে জানালায়
সারারাত্র দৃষ্টি যাবে জ্যোৎস্নার উপর।

১৪।
জলোচ্ছ্বাস
জিললুর রহমান

বসে আছি ভিজে বিড়ালের বেশে যুবুথুবু,
পাহাড়ের সাঙ্গু নদী নেমে আসে ধেয়ে
বহদ্দারহাট সড়কে কী বাদুরতলার ফুটপাতে।
আমিতো ভিজেছি আজ ব্যাপ্টাইজ হবো নাকি …
তোমার প্রসন্ন প্রেমে বেডরুমে জলোচ্ছ্বাস নেমে আসে

১৫।
ডায়োজিনিস
জিললুর রহমান

আমাকে এমন প্রজাতন্ত্রে কি করে রাখবে প্লেটো
কবি নেই
ভাব ভালোবাসা নেই

লোফালুফি চলে আকাশ তারার হাটে
লাশের মসলাপাতি
দুরন্ত লেনাদেনা
বাজারে কেতা দুরস্ত
ভেতরে হিজরা প্রাণ প্রতিবাদে মূককন্ঠ

আজ আমি দিবালোকে হারিকেন জ্বালি
বাজারে বাজারে ঘুরি
কোথায় সে সক্রেটিস
গুরুর যুক্তির ধারা পালটে যায় ভুল মতবাদে

নির্বাসন দাও আমাকে এখুনি

১৬।
পিতা
জিললুর রহমান

কোনোদিন ভাবিনি বাজার মাছ মাংস শাক সব্জি দই
পেটের খোরাক, মনের নিমিত্তে বই, কিনে লই
ইচ্ছে মতো, যখন যা খুশি মিটেছে আবদার।
ইচ্ছে হলে সারাটা দুপুর হল্লা করেছি আর
পুকুরে সাঁতার, ঘাটে আড্ডা, কবিতা কবিতা
দুশ্চিন্তাহীন মানব জীবন আহা, মাথার উপরে ছাতা
পরম নির্ভরতার। শ্বাস নিই অনিবার বুক ভরে
কখনো ফিরেছি ঘরে কখনোবা সিনেমা হলের দিকে ছুটেছি দুপুরে
কিভাবে জুটেছে অন্ন পড়ার খরচ কিসে কড়ি আসে দু’টো
কোথায় রয়েছে জল কিবা অশ্রুজল সংসারের ফুটো
রাখিনি খবর। তবে নিয়ত বেড়েছে যতো না উটকো আবদার
নির্লিপ্ত পর্বতের বেশে মুচকি হেসে দিয়েছো প্রশ্রয়
এখনো মাথায় হাত আছে জেনে সখ জাগে নক্ষত্র ছোঁয়ার
গাম্ভীর্যের গভীর আড়ালে জানতে চাইনি ডেকে কি দু:খ তোমার

 

 

চট্টগ্রামে জন্ম, নিবাস, কর্ম। পেশায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষক।

 

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়