ডেস্ক

Published:
2021-07-02 05:54:06 BdST

শত চেষ্টাতেও ডেল্টার রাজধানী ভ্রমণ কোনোভাবেই ঠেকানো গেল না


 

অধ্যাপক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল

____________________
শত চেষ্টাতেও ডেল্টার রাজধানী ভ্রমণ কোনোভাবেই ঠেকানো গেল না। মৃত্যুর মিছিলে ঢাকার নামও যুক্ত হোল। এদেশে সবই রাজধানী কেন্দ্রীক, ব্যবসা থেকে চিকিৎসা সবই। খুলনা আর রাজশাহীতে ডেল্টার দাপট রাজধানীবাসীকে সতর্ক করতে পারেনি।

টেলিভিশনে রাজা উজির না মেরে রাজধানী আর সারাদেশ হাসপাতাল শয্যা, অক্সিজেন, ওষুধ সবকিছুতেই এখনি প্রয়োজন পেশাদারী ব্যবস্থাপনা।

প্রয়োজন সকল প্রচার মাধ্যমে হাসপাতাল শয্যার হালনাগাদ তথ্য, উপসর্গের কোন পর্যায়ে হাসপাতালে যাওয়া প্রয়োজন আর কতক্ষন বাসায় চিকিৎসা নেয়া যায় তার পরামর্শ।
এলাকাভিত্তিক ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম রোগীর উপসর্গ আর অক্সিজেন চাহিদা পরিমাপ করতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন আর মোবাইল টীম এখনই থাকতে পারে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি কার্যকর অক্সিজেন ব্যবস্থাপনায় দক্ষ হতে পারেন।
ফেস মাস্কে সরবরাহ করা অক্সিজেনের বেশীর ভাগই অপচয় কারন শুধুমাত্র নিঃশ্বাসের সাথেই অক্সিজেন ফুসফুসে যায় আর বোতল থেকে অক্সিজেন ক্রমাগত বের হতেই থাকে, যার বেশীর ভাগ ফুসফুসে না গিয়ে বাতাসে মিশে যায়, নন রিব্রিদিং বা ভেনচুরি তা রোধ করে অনেকটাই, নিদেন পক্ষে ন্যাজাল ডেলিভারি টিউব।

স্যাচুরেশন ৯৬ এর উপরে নেবার জন্য ফ্লো বাড়ানোর প্রানান্তকর চেষ্টা অপ্রয়োজনীয়, স্যাচুরেশন ৯২-৯৩ এর নীচে না এলে অক্সিজেন দেয়া জরুরি নয়।
ভর্তি রোগী যেন নিজে নিজেই অক্সিজেন প্রবাহ না বাড়ান।
পরপর তিন দিন বাড়তি অক্সিজেন ছাড়া স্যাচুরেশন ধরে রাখতে পারলে তাকে ছুটি দিয়ে শয্যা খালি করা।

পুরো খালি না হওয়া পর্যন্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করা। নিয়মিত ফ্লো মিটার পরীক্ষা করা।

ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর আর অাইসিইউ এড়াতে সি প্যাপ, বাই প্যাপ আর হাই ফ্লো হিউমিডিফাইড অক্সিজেন বাড়ানো। জরুরি নয় এমন সকল অস্ত্রপচার বন্ধ করা।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন ব্যবহারের বিকল্প এখনই করে রাখা। প্রয়োজনে নাইট্রাস অক্সাইড এর সিলিন্ডারকে অক্সিজেন সিলিন্ডার এ রূপান্তরিত করা।
সচেতনতাবিহীন এই দেশে সংক্রমণ বাড়বেই, লক ডাউনকে নক ডাউন করার মত বীর পুঙবের অভাব নেই এদেশে।
দিল্লির দৃশ্য ঢাকায় দেখতে না চাইলে এখনি কার্যকর সতর্কতা প্রয়োজন।

মনে রাখা দরকার এবারের ভাইরাস কোভিড ১৯ নয় এটা কোভিড এর লেটেস্ট মডেল ডেলটা ২০২১।

আর এর একমাত্র প্রমাণিত চিকিৎসা অক্সিজেন, অক্সিজেন এবং অক্সিজেন।

লক্ষ্য করুন সংক্রমণের আর মৃত্যুর হার বাড়ছে আর কমছে আরোগ্যের হার।

এখনি সতর্ক হই। ঝড় আসার পর ত্রান বিতরনের বাহাদুরির জনসেবা আর মৃতদেহ সৎকারের করুনার মানবিকতা চাই না। পূর্বাভাসেই বাঁচার ব্যবস্থাপনা চাই।

______________________

অধ্যাপক মওদুদ আলমগীর পাভেল
অধ্যাপক (সার্জারী), টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ, বগুড়া
প্রাক্তন অধ্যক্ষ
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া এবং দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর; এবং
সাবেক সভাপতি, সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়