SAHA ANTAR

Published:
2021-05-24 20:06:54 BdST

’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’,’মিউকরমাইকোসিস’ কি কোভিডের অতিরিক্ত ওষুধের ফল?


 

শওগাত আলী সাগর____________

কোভিড মোকাবেলায় হিমসিম খাওয়া ভারত এখন ’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আর ’মিউকরমাইকোসিস’ নিয়ে বিপদে আছে। কোভিড থেকে রেহাই পাওয়া বা কোভিডোত্তর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দিলেও ভারতে এর কারনে মানুষ মারা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে ভারতের বাইরে কেনিয়ায় এই উপসর্গ দেখা গেছে। কিন্তু পশ্চিমের কোনো দেশে বা আর কোথাও এগুলো হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতে এই দুটি বিপদজনক উপসর্গ কেন দেখা দিলো- তা নিয়ে চিকিৎসক, গবেষকরা কাজ করছেন। নিশ্চয়ই আমরা একসময় জানতে পারবো কোভিড থেকে বেঁচে গেলেও কিংবা কোভিড আক্রান্ত মানুষ কেন ’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আর ’মিউকরমাইকোসিস’ এ মারা যাচ্ছে!
গত এক বছর ধরে কোভিড সংক্রান্ত তথ্যপ্রবাহ অনুসরণ এবং বিশ্লেষণ করতে করতে নিজের মধ্যে কিছু কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কোভিডের যে কোনো নতুন উপসর্গ বা তথ্য দেখলেই সেটিকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। মার্চ মাসে যখন প্রথম ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এর কথা শোনা যায়- তখনি আমার বিশ্লেষণ বলছিলো- এটি বেশ ভোগাবে। এই ভ্যারিয়েন্টটার দিকে যে মনোযোগ দেয়া দরকার সেই কথা নানা জায়গায় প্রকাশও করেছিলাম। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে বিভিন্নস্থানে টুকরো টুকরোভাবে উপস্থাপিত গবেষকদের নানা ধরনের বক্তব্য একসাথে জোড়া লাগিয়ে আমি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে শংকিত হয়েছিলাম। সেটা মার্চ মাসের কথা।
’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আর ’মিউকরমাইকোসিস’ নিয়েও আমার মনে একটি কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এই দুটি উপসর্গ কি কোভিডের চিকিৎসার নামে ’অপ্রয়োজনীয়’ কিংবা ‘অতিরিক্ত’ ওষুধ ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া? বাংলাদেশের মতোই ভারতীয় চিকিৎসকরাও কোভিডের রোগীদের দেদার ওষুধ দিয়েছেন। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা গবেষণায় নিয়োজিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষক-চিকিৎসকরা প্রতিদিন টুইট করে ’অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড এবং আরো কিছু ওষুধ’ রোগীদের না দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। ’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আর ’মিউকরমাইকোসিস’ এ আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে ছোটো ছেটো বেশ কয়েকটি পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে। এতে দেখা গেছে এই রোগীদের প্রত্যেককে (১০০ ভাগ) অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়েছে। স্টেরয়েড দেয়া হয়েছে ৮৬ শতাংশের বেশি রোগীকে। আরো ওষুধ তো দেয়াই হয়েছে। এই সব টুকরো টুকরো তথ্যউপাত্ত একসাথে জোড়া লাগিয়ে আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে, ’ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ আর ’মিউকরমাইকোসিস’ কি তা হলে অপ্রয়োজনীয় কিংবা অতিরিক্ত ওষুধ ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া? বলে রাখি, ভারতের গবেষকরা এই প্রশ্নটিকে মাথায় রেখেই উত্তর খুঁজছেন বলে ধারনা হচ্ছে।
প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশ নিয়ে ফ্লোরিডায় বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চিকিৎসক ডা. রুমি আহমেদ খান এর একটা শংকার কথা উল্লেখ করে রাখি। গত সপ্তাহের ‘শওগাত আলী সাগর লাইভ’ এর আলোচনায় তিনি শংকা প্রকাশ করেছেন- বাংলাদেশের কোভিডের চিকিৎসায় যে হারে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় সিটিস্ক্যান করা হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ফসুফুসের ক্যান্সারের মহামারী দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞ, গবেষকদের টুকরো টুকরো কথাগুলোকে একসাথে জোড়া লাগিয়ে আমি আমার ভাবনাগুলো বললাম। নিশ্চয়ই গবেষকরা সত্যিকারের অবস্থাটা আমাদের জানাবেন।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়