ডেস্ক
Published:2021-05-21 21:53:20 BdST
ঝাপসা চোখে ঈদ: বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের মর্মস্পর্শী স্মৃতি কথা
ঝাপসা চোখে ঈদ
______________
প্রফেসর মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।
আমাদের ছোটবেলা, সেই ষাটের দশকের শুরুতে ঈদের আয়োজন আর প্রস্তুতি শুরু হত ঈদ বা বলতে গেলে রমজানের চাঁদ ওঠার সাথে সাথে। আজকের মত সন্ধ্যা হতেই টিভির সামনে বসে চাঁদ ওঠার খবর নেওয়ার চল তখন ছিল না। নিজ চোখে চাঁদ দেখা তখন এটা নিয়মিত কর্তব্যের মধ্যেই ছিল। দুপুরের পর থেকেই পশ্চিম আকাশের দিক চক্রবালে টুকরা মেঘ দেখলেই মনে হত, যদি মেঘের আড়ালে চাঁদ ঢাকা পড়ে যায়। সব আতঙ্ক আর জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মাগরিবের আজানের আগেই সরু কাস্তের মত চিঁকন চাঁদ তখন পশ্চিম আকাশে। প্রথমে যে সেটা আবিস্কার করতো সেদিনের হিরো সে। তার উত্তেজিত র্নিদেশনায় নারকেল গাছ বরাবর দু-তিন হাত উপওে, আঁধার না হওয়া আকাশে সেই সরু চাঁদ খুঁজে পাওয়া সত্যি হাতে চাঁদ পাওয়ারই অনুভুতি দিত। আজন্ম সংস্কারে অন্যদের দেখাদেখি আমরাও অকারণ সালাম ঠুকতাম সেই রমজান বা ঈদের চাঁদের দিকে। আর দু-চারজন শত চেষ্টাতেও দেখতে না পেলে তাদের মাথা হাত দিয়ে ঘুরিয়ে চাঁদের দিকে তাক করবার চেষ্টা করতো অন্যরা, যারা আবিষ্কারের গর্বে তখন গর্বিত। অনেকেই লজ্জায় পড়ে না দেখতে পেয়েও মিনমিনিয়ে সালাম জানিয়ে বুঝিয়ে দিত ওরাও দেখাদের দলে। রমজানের চাঁদ দেখার পর পরই প্রথমে তারাবিতে যোগ দিতে মসজিদে যাবার প্রস্তুতি। শিশু কিশোর বলে বিশাল জাময়াতে আমাদের জায়গা হত পিছনে। সব মসজিদে তখন শুধু মাত্র আযান ছাড়া ইমামের কথা শোনার মাইকের প্রচলন ছিল না। তাই সুললিত কন্ঠে ত্রুটিহীন দ্রুততায় কিশোর হাফেজের কন্ঠ নিঃসৃত আয়াত গুলো আমাদের কাছে পৌছতো একটু ফিকে হয়ে, তাতে সমস্যা নেই। সামনের কাতারের মুসল্লীদের অনুকরনে ঐ বয়সে তারাবী নামায আদারের গৌরব ছিল অন্যরকম। পাড়ায় পাড়ায় চল ছিল শেষ রাতে রোজাদার আর বাড়ীর মহিলাদের জাগিয়ে দেবার নানা আয়োজনের। কালেক্টরেট অফিসের বিকট সাইরেনের আওয়াজ মোটামুটি শহরের সব বাড়ীতেই পৌছাত-আর তাতে জাগতে না পারলেও সমস্যা নেই, ’ওঠ ওঠ রোজা কর-রোজা কর’ আওয়াজ তখন শেষ রাতকে প্রকম্পিত করতো। কেউ কেউ আবার দল বেঁধে জনপ্রিয় গানের সুরের সাথে ঘুম জাগানিয়া কথা জুড়ে সুরেলা আওয়াজে সবাইকে ঘুম থেকে তুলতো। চোখ ডলে আমরা ঘুম জেগে দেখতাম আঙ্গিনায় উনুনে মায়ের ভাত রাঁধা শেষ পথে আর তরকারির রান্না সেটা বেশির ভাগ আগ রাতেই চুকে যেত। তবে যারা দুধ আর কলা ছাড়া সেহরী কথা ভাবতেই পারতেন না-তাদের দুধের জালটা একটু পরেই হোত। সবাই এক সাথে পাত পেরে সপ বা পাটির দস্তর খানায় বসতো একসাথে। এমনকি রোজা না করা ছোট্ট শিশুও হোত সেই সেহরী পর্বের নিত্য সদস্য। রোজার দিনগুলোয় সকাল হতেই খুব সর্তকতার সাথে চলতো কোন কারনে যেন রোজা না ভাঙ্গে তার জবরদন্ত কসরত। স্কুল সে সময় প্রথম রোজা থেকেই বন্ধ থাকতো ; তাই খেলার মাঠে আঁচড় লেগে রক্ত বের হলে অপরাধী মনে হতো নিজেকে। কুলি করতে গিয়ে একঢোক পানি মুখে গিয়েছে কিনা সে নিয়ে বড়দের বার বার বিরক্ত করতো অনেকেই। পাড়ার মহিলারা আঙ্গিনায় চুলার পাশে পাত্র রাখতেন থুতু ফেলার জন্য। পুরো রমজানে মাথায় টুপি আর পাঞ্জাবী পড়ার অভ্যাসটা ছিল অনেক দিন। আর একটা পর্ব শুরু হতো মোটামুটি যোহর আছরের পর থেকেই, নিম ডাল ভেঙ্গে দাঁতে থেঁতো করে মেসওয়াক বানিয়ে দাঁত পরিস্কার করার। বিকেলে ইফতার আয়োজন আজকের মত এতটা জমকালো ছিলনা মোটেই। ফালুদা,চিকেন,গ্রীল,সাসলিক দুরে থাক হালিমের নামও তখন অজানাই ছিলো। সাতমাথার আশপাশের আর ফতেহ আলীর বাজারের সামনে ইফতারির দোকান দু-একটা ছিল। কিন্তুু সেটার মুল বিক্রি ছিল জিলাপী,বুন্দিয়া কিংবা ঝুড়ি ভাজার; ছোলার বিরিয়ানি, পিয়াজু আর বেসনে ডুবিয়ে সর্ষের তৈলে ভাজা বেগুনী বাড়ীতেই তৈরী হতো বেশির ভাগ। সয়াবিন তৈল তখনো এতটা জাতে ওঠেনি সাথে থাকতো শরবত,হালুয়া এসব। পাড়া প্রতিবেশীর বাড়ীতে মশকরা করা খরপোসে থালা ঢেকে ইফতারী পাঠানোর একটা জনপ্রিয় রেওয়াজ সব বাড়ীতেই ছিল। অযু করে মাথায় টুপি দিয়ে ইফতারি সামনে রেখে আযানের জন্য কান খাড়া থাকতো সবারই। সাইরেন বাজলেও ইফতারির সময় র্নিদেশনার জন্য পাড়ার মসজিদে মুয়াজ্জিনের হালকা গলার আজান ছিল অনেক বেশী র্নিভরশীল। খুরমা বা খেজুরের চলও তেমন ছিল না। আরেক উত্তেজনা ছিল খতম তারাবী অর্থাৎ শবে কদরের রাতে তারাবীর নামাজের সাথে সামিল হওয়ার জন্য ইফতার শেষ করেই জায়গা নেয়ার দৌড়। মসজিদ গুলো তখন এতটা সুপরিসর তো ছিলই না, এয়ার কন্ডিশন দুরে থাক বড়জোর ঘড়ঘড় শব্দের দু একটা ফ্যান ঘুরতো ছাদে যেন নেহায়েত অনিচ্ছায়।
বাহারী ঈদের জামা বলে তেমন কিছু ছিল না। সাত রোজার পর ভাইদের দলে একসাথে যেতাম নিউ র্মাকেটের ছিট কাপড়ের দোকানে। একই থান থেকে সবার জন্য র্শাট এর বরাদ্দ ছিল একটা বড়জোড়, হাফহাতা সোয়াগজ-ফুলহাতা পৌনে দু’গজের হিসেবে। আব্বা যে থান র্নিবাচন করতেন সেটাই চুড়ান্ত। লোলুপ চোখে পাশেরগুলোর দিকে নজর থাকলেও কিছুই করার ছিল না। তার পর লাইন ধরে আনোয়ার খলিফা সাহেবের দোকানে মাপ দেওয়া। আব্বার কড়া দৃষ্টির সামনে সকাল থেকে বারবার মুখস্ত করা ‘সামনে দুটো পকেট আর শক্ত জাপানী বকরমের কলার’ কথাগুলো গলা থেকে ঠোঁটে আসতো না। পরে দু-চারবার কথাগুলো আনোয়ার চাচাকে বলার জন্য তাঁর দোকান অব্দি গেছি। কিন্তুু ভিতরে ঢোকার আর সাহস হয়নি। কাপড়ের কোনা থেকে সামান্য কেটে রিসিটের সাথে গাঁথা কাগজটা আব্বার পকেটে থাকতো। সুতরাং তৈরী র্শাটটা কবে পাওয়া যাবে সেটা জানার পথ ছিল না। কয়েক দিন পর থেকেই অকারনে দোকানের সামনে গিয়ে আড়চোখে বানিয়ে রাখা জামাগুলোর সারিতে আমাদেরগুলো খুঁজতাম। তারপর ঠিক ঈদের আগে আগে ঐগুলো আসতো বাসায়। বাসায় এলেও সেটা যক্ষের ধনের মত সযত্নে আড়াল করে রাখতাম বন্ধুদের থেকে শেষ মুহূতের চমক দেবার জন্য। আর দু’বছর পর পর একটা স্যান্ডেল সু বরাদ্দ ছিল। পাজামার সাথে পরার জন্য আর জুতো সে সবেধন নীল মনি একটাই-স্কুলের জুতো, বাটার কালো নটি বয় সু। নতুন সেই জুতা-স্যান্ডেল জোড়া পায়ে না দিয়ে সযত্নে বালিশের পাশে নিয়ে দিনের পর দিন ঘুমায়নি এমন কিশোর কিশোরী সে যুগে সম্ভবত ছিল না।
ঈদের কদিন আগে থেকেই চলতো কয়েকটা বিশেষ আয়োজন,অপেক্ষাকৃত কম সম্পন্ন বাড়ীর মহিলারা রুটি বেলার পাটায় ময়দা ডলে মোটা সেমাই বানাতেন আর যাদের বাসায় হাতে ঘুরানোর সেমাই মেশিন ছিল তাঁরা মেশিনে বিভিন্ন ছ্যাঁদার লোহার গোল জালি বসিয়ে হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মিহি চিকন বা মাঝারী চিকন সেমাই বানিয়ে রোদে শুকিয়ে তৈরী হতেন ঈদের আগেই। বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ থেকে ছুটিতে বাড়ীতে আসা বড় ভাই বোনেদেও প্রস্তুতি ছিল দু-রকম,ঈদেও দিনকে বর্নিল করতে রঙ্গীন কাগজ কাটা ছোট ছোট তেকোনা পতাকা বানিয়ে ময়দা এরারুটের আঠায় মাখিয়ে চিকন সুতলীতে সাঁটিয়ে বাড়ীর সামনে আর রাস্তাময় রঙ্গীন রঙ্গীন ঈদের আমেজ আনা হতো ঈদের একদিন আগেই। সাথে ছিল ঈদের চাঁদ বরনের বিস্ফোরক আয়োজন। দুই-তিন তলার ছাদ থেকে হাউই ওড়ানো, বিকট শব্দ করা বোমা পটকার বিস্ফোরন,ছুঁচো বাজীর এদিক ওদিক অনিশ্চিত ছুটোছুটিতে সবাইকে ভড়কে দেয়া আর নিতান্ত গোবেচারদের হাতে জলন্ত তারা বাতির কাঠি ধরিয়ে সান্তনা পুরস্কার দেয়া। এপাড়া ওপাড়ার মেহেদী গাছগুলো বড় আপাদের নিপুন চৌর্যবৃত্তিতে পত্রহীন হতে সময় নিতো না। খুব বেশী সৌখিন মেহেদী চিত্রকর্মের চল ছিল না মোটেই। দশ আঙুলের ডগায় টোপড় বা টুপি পরানো মেহেদী বাটা আর দু-হাতের তালুতে দুটো গোল গোল বৃত্ত এটাই ছিল মোটামুটি ট্রেড মার্ক ডিজাইন। আর আরেক জবরদস্ত প্রস্তুতি ছিল ঈদ পুর্নমিলনীর আয়োজন বিশেষ করে শীতের দিনের ঈদগুলোয়। মোটামুটি একটু খোলা মেলা বাড়ীর সামনের মাঠে আয়োজন শুরু হোত ঈদের পর দিন থেকেই,বৈঠক খানার চৌকিগুলো পাশাপাশি সাজিয়ে-তলায় ইট গুঁজে উচ্চতা সমান করে তৈরী হোত স্টেজ,বিছানার চাদর হয়ে যেত ব্যাক ড্রপ আর লম্বা লম্বা শাড়ী ঝুলিয়ে দু-পাশের উইংস। ছড়া-কবিতা-গান প্যারোডী-যাদু আর অবশ্যই নাটিকা ছিল অনুষ্ঠানের মূল বিনোদন। জবরদস্ত গম্ভীর অভিভাবকরাও শুধু যে পাঁচ দশ টাকা চাঁদাই দিতেন তাই না-সন্ধ্যা হতেই কাশ্মীরী শাল জড়িয়ে সামনের চেয়ারগুলোর দখল নিতেন নিয়মিত। যার পরিবেশনায় সবচে বেশী হাত তালি পড়তো সে পরের কয়েক দিনের আলোচনার শীর্ষে থাকতো। আর একদল বখাটে মোটামুটি সব পাড়াতেই ছিল দুুয়ো দেয়ার জন্য আর পচাঁ টমেটো বা ডিম ছোড়ার পরিকল্পনা নিয়ে।
ঈদের দিন সকাল হতেই ঘুম ভাঙতো-জর্দা সেমাইয়ের ঘিয়ের গন্ধে। সাত তাড়াতাড়ি গোসল করে পাঞ্জাবী আর ভাগ্যে থাকলে নতুন স্যান্ডেল সু পরে ঈদের মাঠে যাবার প্রস্তুতি। আমাদের বাড়ী ঈদ গা লেনে হওয়ায় সারি সারি মানুষের সাদা পাজামা পাঞ্জাবীতে ঈদগাহে যাত্রার ছবি আমাদের সবার মানস পটে স্থায়ীভাবে গাঁথা। কিছুক্ষন পর জায়নামাজ হাতে আমরাও ভীড়ে সামিল হতাম। হাঁটতে হতো না, মনে হতো পেছন থেকে একটা স্রোত সামনে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তার দু পাশে বসে শুয়ে সাহায্য প্রাথীদেও প্রার্থনা সুরের ঐকতান আর থালার বাজানো খুচরো পয়সার সংগীত আজো কানে বাজে। জামাত শেষে ফেরার সময় ভীড় একটু কম। কিন্তুু নতুন স্যান্ডেলের অভ্যর্থনার খোচায় খুঁড়িয়ে হাঁটা আড়াল করতে চাইতাম প্রানপনে। পায়ে সালাম করার চল থাকলেও সেলামীর টাকার জন্য হাপিত্যেশ করার অভিজ্ঞতা হয়নি। মনে হতো সবার দোয়াই যেন এক অপার্থিব আনন্দের জায়গা। বোনেরা অপেক্ষা করতো আমরা কখন ফিরবো বলে-আদর করে জর্দা আর সেমাইয়ের পিরিচ হাতে। মা আঁচলের গিট খুলে এক টাকার একটা নতুন নোট দিতেন। কাকে দিয়ে এই নতুন নোট সংগ্রহ তিনি করতেন সে উত্তর আজো অজানা। আর সেই টাকার সদগতি হোত তাৎক্ষনিকভাবে বটতলায় নতুন র্শাট গায়ে লাল বা সবুজ একটা শক্ত আইসক্রীমে, যাকে আইসক্রীম না বলে রঙ্গীন মিষ্টি বরফ বলাই ভালো আর হাওয়াই মিঠাইএ। আর আশপাশে ছোঁ মেরে কেড়ে নেওয়ার শত্রুপক্ষ না থাকলে এক টুকরো চিনি বাদামের শাহী টুকরা কিম্বা মিষ্টি আমের আচার। হলদেটে জমাট মিষ্টির দলা ‘লই’-অসম্ভব দক্ষতায় বড় দোলায় ছোট্ট দায়ের আলতো ঘায়ে দু আনার এক টুকরোয় চার জনের হয়ে যেত অনায়াসে। আর কখনো কখনো বাড়তি আকর্ষন ছিল সুতো টেনে মাটিতে চালানো কাগজের কুমীর অথবা সুতলিতে টানা ঢোল বাজানো মাটির চাকার গাড়ী। বেশী ছোটদেও আকর্ষন করতো বাঁশের কঞ্চির ভেঁপু বাঁশী,এক আনারটা শুধু ফুঁ দিলেই বাজতো-আর একটু বনেদী দু আনারটার সাথে থাকতো লাল বেলুন-ফুঁ দিয়ে বেলুনটা ফুলালেই বেলুন থেকে বেরিয়ে আসা বাতাসে বাঁশী বাজতো নিজে নিজেই।
বাড়ীতে ঢুকতেই গন্ধ পেতাম পোলাওয়ের সাথে খাসীর কোরমার। মেঝেতে বড় পাটি বিছিয়ে সারি বেঁধে খাওয়া। খাসীর নলীর টুকরা কার পাতে পড়বে এ নিয়ে মনে মনে দোয়া দরুদও পরতাম। দুপুর গড়ালেই মনে হতো ঈদটা বোধ হয় চলেই গেল এবার। বাইরে বেরোলে দেখতাম সবে গোঁফ গজানো বড় ভাইয়েরা উত্তরে ছুটছেন উত্তরা-মেরিনার দিকে। ঈদে মুক্তি পাওয়া রাজ্জাক কবরীর নতুন ছবি দেখতে। নিজের সুযোগ ছিল না বলে অভিসম্পাত করতাম। যাও সিনেমা হলের ছারপোকার কামড় খাও। বিকাল গড়াতেই চিরচেনা ফাঁকা ঈদের মাঠ। সকালেই হাজার মুসল্লির ভীড়ে ভারাক্রান্ত মাঠটা শূন্য এখন। সন্ধ্যোর আগেই দ্বিতীয়ার চাঁদ উঠতো আকাশে, গত সন্ধ্যার চাইতে উজ্জল আর পুরু,বুক ভেঙ্গে দীর্ঘশ্বাস আসতো। চলে গেল ঈদটা। আর সামনে ভেসে উঠতো আরেক দৃশ্য। ঈদের ছুটি শেষ। বই খাতা হাতে ছুটছি স্কুলে। সারিবদ্ধ এ্যাসেম্বলী, ক্লাসে চক ডাস্টারের গন্ধ,ভ্যাপসা গরমে ক্যাচ ক্যাচ শব্দে দোলা ভবানী দার হাতে টানা ছাদে ঝোলা চওড়া পাটির পাখা। দরজার বাইরে ঠান্ডা পানির মাটির সরাই আর স্যারের সামনে টেবিলে রাখা লম্বা বেত।
লেখকঃ নির্বাহী উপদেষ্টা,টিএমএসএস ও সাবেক প্রিন্সিপাল,
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ,বগুড়া।
আপনার মতামত দিন: