ডেস্ক
Published:2021-05-10 18:24:42 BdST
তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে মরণ যাত্রা যেদিন যাবে:জীবন শেষের পরিচর্যা
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
বাংলাদেশের লোক স্বাস্থ্যাচার্য
____________________
জীবন শেষের পরিচর্যা
জীবনের অন্তিম পর্যায়ে যারা তাদের জন্য সাপোর্ট । মৃত্যু যেন মর্যাদার সাথে হয়। তাদের অন্তিম ইচ্ছা আর পছন্দ জানা আর প্রিয়জনের তা যত দূর সম্ভব বাস্তবায়ন।
কোথায় শেষ সময় কাটানোর ইচ্ছা তা জানাবেন অন্তিম রোগী , ঘরে , হাসপাতালে না হস্পিসে।
আমার মনে আছে আমার ছোট মাসী আমার চেয়ে তার বয়স হবে ৪-৫ বছর বেশি , তিনি ছিলেন জন হপকিন্স এর অধ্যাপক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যখন অন্তিম দিন গুলোর মুখোমুখি তখন মেল পেলাম তিনি আর কোন ভাবে আমাদের নাগালে থাকবেন না , তিনি যাচ্ছেন হস্পিসে ।
খুব নাড়া দিয়েছিল আমার মন সে সময়। আমরা এক সাথে খুব ছোট বেলায় শান্তিনিকেতনে পাঠ ভবনে পড়েছি আমি ক্লাস টু মাসি ক্লাস সিক্স ।
আমি চলে এলাম বছর দেড়েক পর । বুক কেপে উঠল ।
আমাদের দেশে তেমন কেয়ার গড়ে উঠেনি আমার জানা মতে স্নেহভাজন অবেদনবিদ অধ্যাপক নিজামুদ্দিন বি এস এম এম ইউ তে গড়ে তুলেছিলেন পেলিয়েটিভ কেয়ার ।
অনেক দেশে অনেক হেলথ আর সামাজিক পেশাজীবী এ ক্ষেত্রে সাহায্য দেন অন্তিম পথ যাত্রী লোকদের ।
ঘরে বা কেয়ার হোমে সে সময় থাকলে জি পি রা খেয়াল নেন আর আসেন কমুনিটি নার্স ।
অন্তিম পরিচর্যার একটি অংশ প্রশমন পরিচর্যা বা পেলিয়েটিভ কেয়ার
এমন কোন অসুখ যা দুশ্চিকিৎস্য এদের ব্যাথা বেদনা আর অন্যান্য যন্ত্রণা দায়ক উপসর্গ প্রশমনের জন্য। দরকার হয় মনোগত , সামাজিক আর আত্মিক সাপোর্ট । কিছুটা হলিসটিক ভাবে ,পুরো মানুষের প্রশান্তি । কেবল উপসর্গ প্রশমন নয়।
কখন হতে পারে শুরু অন্তিম পরিচর্যা
যখন নিজের মনে চাহিদা ঃ
হতে পারে কিছু দিন বা মাস বা দু এক বছর আগে ।
সাধারণত যখন মৃত্যু সম্ভাবনা ১২ মাসের মধ্যে হতে পারে তখন অন্তিম
পরিচর্যার ক্ষণ শুরু হতে পারে অবশ্য মৃত্যু ক্ষণ পূর্বানুমান অসম্ভব তবু এ হচ্ছে এক অনুমান মাত্র।
আসন্ন মৃত্যু যাদের
যেমন ঃ
কারো অনেক অগ্রসর আরোগ্য সাধ্যাতীত অসুখ , ক্যান্সারের অনেক অগ্রসর পর্যায় , ডি মেন শিয়া , মটর নিউরন রোগ ।
খুব রুগ্ন , ক্ষীণ অনেক সহসঙ্গি রোগ, বছরের বেশি টিকবেন না মনে হচ্ছে
অসুখের এমন পর্যায় যখন যে কোন মুহূর্তে জটিলতা হয়ে মৃত্যু হতে পারে ।
আমি অন্যত্র এমন এক অতি বৃদ্ধ লোকের করোনা নিয়ে অন্তিম পর্যায়ে তার মা আর কন্যার অন্তিম পর্যায়ে মোকাবেলার কাহিনী দিয়েছিলাম
দুর্ঘটনা বা স্ট্রোক হয়ে জীবন সংশয়ী অবস্থা ।
আমাদের দেশে এমন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত আমরা জানিনা কখন কিভাবে মৃত্যু হবে তবে যত দূর সম্ভব যাদের ব্যাপারে পূর্বানুমান সম্ভব তাদেরকে শান্তিতে আর মর্যাদার সাথে শেষ যাত্রা করতে দেয়ার চেষ্টা করা যৌক্তিক ।
" তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে মরণ যাত্রা যেদিন যাবে তুমি বারান্দাতে দাড়িয়ে থেক শেষ দেখাটা দেখতে পাবে"
সেই গান গেয়েছেন সম্ভবত কিশোর কুমার । সে অন্য চিন্তা ।
আপনার মতামত দিন: