ডেস্ক
Published:2021-05-08 04:25:34 BdST
করোনা থেকে বাঁচতে কার কাছে যাবেন, ডাক্তার না মসজিদের ইমাম! জনপ্রিয় লেখক, লজিক্যাল স্পিকারের পরামর্শ জানুন
ডেস্ক
_________________
করোনা থেকে বাঁচতে কার কাছে যাবেন, ডাক্তার না মসজিদের ইমাম! এ বিষয়ে তুলনামূলক পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের শীর্ষ সেলস ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট এন্ড লজিক্যাল স্পিকার রাজিব আহমেদ।
তিনি অসংখ্য সেলস ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক বেস্ট সেলার বইয়ের প্রণেতা। বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানে লজিক্যাল স্পিকার হিসেবে মহা সমাদৃত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা হিসেবেও সমাদৃত।
সারাদেশে লাখো ভক্ত রয়েছে।
এ বিষয়ে তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন,""করোনাক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের মৃত্যু হলেও কোনো ইমামের মৃত্যুর খবর শোনা যায়নি।
আপনিই সিদ্ধান্ত নিন- কার পরামর্শ/জীবনাচার অনুসরণ করবেন?""
অতি মারী করোনা কালে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শীর্ষ ব্যাক্তিত্বরা কি ধরনের মতামত রাখছেন বাংলাদেশে, তাঁর নজির মিলবে তাঁর লেখায়।
তাঁর বিস্তারিত বয়ান নিচে তুলে ধরা হল।
"
করোনাক্রান্ত হলে বাঁচার আশায় আমরা যে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হই, তাঁদের কেউ কেউ কিন্তু করোনাক্রান্ত হয়েই মৃত্যুবরণ করেছেন! এই তালিকায় বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য খ্যাতিমান চিকিৎসকের পাশাপাশি দেশের নামী-দামী হাসপাতালের ICU বিভাগের প্রধানও রয়েছেন। তার মানে আধুনিক চিকিৎসা সেবা খোদ চিকিৎসকদেরকেও করোনা’র কবল থেকে পুরোপুরি রক্ষা করতে পারছে না।
অন্যদিকে দেখুন- বিগত এক-দেড় বছরে করোনাক্রান্ত হয়ে কোনো মসজিদের ইমাম সাহেবের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়নি। সুতরাং করোনা‘র কবল থেকে চূড়ান্ত রেহাই পেতে চাইলে এর নেপথ্যের কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি বলে মনে করি-
• ইমাম সাহেবদের দাড়ি আছে- যা প্রকৃতিক মাস্ক-এর কাজ করে। উনারা দিনে পাঁচবার ওজু করেন (অনেকে তো ওজুর ওপরেই থাকেন) মানে শরীরের সকল প্রান্তভাগগুলো ধৌত করে সব সময় জীবাণুমুক্ত রাখেন- যা বারবার হাত ধোয়ার চাইতেও অধিক কার্যকর।
• ইমাম সাহেবদের দৈনন্দিন জীবনযাপন সবচেয়ে সুশৃঙ্খল। তাঁরা প্রতিদিন পাঁচবার নির্ধারিত সময়ে, নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত থেকে নির্ধারিত রীতি-নীতি (নামাজ) পালন করেন- যা শারীরিক কসরত (ব্যায়াম) ও মানসিক প্রশান্তি সুনিশ্চিত করে। যাঁরা নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামাতে ফজরের নামাজ আদায় করেন, তাঁদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা এমনিতেই কম আর পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করলে তো আরো বেশি মাত্রায় সুরক্ষিত থাকবেন। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসকের ব্যক্তিগত জীবন অনিয়ন্ত্রিত।
• পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সুবহানুতায়ালা বলেন : ‘তোমাদের ঘুম বা নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাতকে করেছি আবরণ। দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।‘ [সুরা আন-নাবা; আয়াত -৯, ১০ ও ১১] তার মানে রাতে ঘুমাতে হবে আর ভোরে জেগে নামাজ পড়ে সূর্যোদয়ের পর জীবিকার সন্ধানে বের হতে হবে- যেটা ইমাম সাহেবগণ পুরোপুরি মেনে চলেন।
• ‘ভোরের হাওয়া হাজার রোগের দাওয়া’- এই কথাটা আমরা সবাই জানলেও মানি কম। কিন্তু ইমাম সাহেবগণ ফজরের নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে আসা-যাওয়ার সুবাদে জীবনভর ভোরের বাতাস গ্রহণ করেন। ফলে তাঁরা শারীরিকভাবে বেশি সুস্থ থাকেন। অপরদিকে অধিকাংশ চিকিৎসক গভীর রাত পর্যন্ত রোগী দেখে শেষ রাতে ঘুমাতে যান আর বেলা করে ওঠেন- যা সুস্বাস্থ্যের পরিপন্থী।
• অনেকে ইমাম সাহেব রমজান মাস ছাড়াও সপ্তাহে অন্তত দু’দিন নফল রোজা পালন করেন- যা উল্টাপাল্টা খাদ্যাভ্যাস থেকে বিরত রেখে তাঁদের শারীরিক সুস্থতা সুনিশ্চিত করে। অপরদিকে অনেক চিকিৎসক রীতিমতো ধূমপান করেন এবং তাঁদের জীবনাচার ও খাদ্যাভ্যাস যে সঠিক অবস্থানে নেই, তার প্রমাণ হলো চিকিৎসকদের অনেকেই ডায়বেটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েও সেসবকে আড়াল করে ক্রমাগত ওষুধের প্রেশস্ক্রিপশন লিখে নানাভাবে নিজেদের আয়-রোজগার বাড়িয়ে চলেছেন!
• করোনা থেকে মুক্তির উপায় দাওয়া এবং দোয়া। এর যে কোনো একটিকে উপেক্ষা করলে করোনা-কে ঘিরে চিকিৎসা-ব্যবসাই কেবল সম্প্রসারিত হবে, মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো যাবে না। চিকিৎসকেরা আছেন কেবল দাওয়া নিয়ে, কিন্তু ইমাম সাহেবগণ সুস্থতার সকল বিধি-বিধান মেনে চলার পরেও নিয়মিত দোয়া করেন, স্রষ্টার কৃপা ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন। সঙ্গত কারণেই করোনা-মুক্ত থাকার লড়াইয়ে তাঁরা একটু হলেও এগিয়ে আছেন।
প্রিয় পাঠক, উপরোক্ত বিষয়গুলো গভীরভাবে চিন্তা করার বিষয়। চিন্তা-ভাবনা করে আপনিই সিদ্ধান্ত নিন- করোনাক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল-ক্লিনিকে ছোটাছুটি করবেন নাকি ইসলামিক রীতি-নীতি অনুসরণ করে জীবনভর সুস্থ থাকবেন? সেক্ষেত্রে ইমাম সাহেবদের জীবনাচার অনুসরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে ইমাম সাহেবদের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে সুস্থতার বিধি-বিধানগুলো জেনে নিতে হবে, যেন আর কখনোই চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হওয়া না লাগে!
.
পুনশ্চ :- এই লেখার উদ্দেশ্য কিন্তু চিকিৎসা পেশার বিষেদাগার করা নয়, অনেক ভালো চিকিৎসকও আছেন, কিন্তু মোটের ওপরে পেশাটা চিকিৎসা-ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে- সেদিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং প্রকৃত বাস্তবতা তুলে ধরা।
""
ফেসবুকে লেখা র লিঙ্ক
১.
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10222087278464562&id=1040349130
২.
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10222087268504313&id=1040349130
এই লেখা র ভিন্নমত তথ্য
নেসার উদ্দিন অাইয়ুব জানান,
আমাদের পুরান ঢাকায় একজন ইমাম করোনায় মারা গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত ওয়ায়েজ ও শীর্ষ আলেম দীর্ঘদিন আইসিইউ তে থেকে মারা গেছেন। দুজনেরই নাম আপনি জানতে চাইলে জানাতে পারবো।
আল্লাহ ইমামকে রোগ দেবেন না এটা ভাবা শতভাগ অযৌক্তিক। কারণ, প্লেগ মহামারীতে অনেক বিশিষ্ট সাহাবী ইন্তেকাল করেছিলেন।
আপনার এসব প্রচার দ্বারা উৎসাহিত হয়ে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত হয়, আপনি গুনাহগার হতে পারেন।
ফকির মহম্মদ জানান,
কাজের ধরন অনুযায়ী ইমাম সাহেবদের সংক্রমণের ঝুঁকি ডাক্তারদের তুলনায় অনেক অনেক কম এটা পাগলেও বোঝে। এরপরও ঈমাম সাহেবরা করোনা আক্রান্ত হননি এমন নয়। একজন ডাক্তার মারা গেলে বিভিন্ন মিডিয়াতে যতটা প্রচারিত/ প্রকাশিত হয় খুব বড় মসজিদের না হলে ঈমাম সাহেব মারা গেলে তা হয় না।
আমি আমার গ্রামের মসজিদের ঈমাম এবং মাদ্রাসার কোন কোন শিক্ষককে করোনার সম্পূর্ণ উপসর্গগুলো নিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দেখেছি। আল্লাহর রহমতে শেষ পর্যন্ত তাঁরা সুস্থ হয়েছেন।
কো মরবিডিটি থাকলে ঈমাম সাহেব, ডাক্তার সাহেব শুধু নয়, সব পেশার মানুষই খারাপ অবস্থায় গিয়ে মারা যেতে পারেন এবং যাচ্ছেনও।
মহম্মদ অাশরাফুজ্জামান জানান, প্রথম মৃত্যু হয়েছিল মিরপুর টোলারবাগ মসজিদের ঈমামের। ছোটভায়ের কি বেশি পড়াশোনার কারনে একটু উল্টা পাল্টা হয়ে যাচ্ছে নাকি।
হাসান তারেক চৌধুরী
প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন,
চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে, কারন তিনি বিপদগ্রস্ত মানুষের সেবায় এগিয়ে গিয়ে নিজেও আক্রান্ত হয়েছে, ইসলাম এটাই বলে, মানুষের বিপদে এগিয়ে যেতে।
ইমামের মৃত্যু কম হয়েছে, কারণ তিনি মসজিদের ভেতরে সারাদিন নিজেকে আবদ্ধ রেখেছেন, ফলে তার সংক্রামন হয়নি (বলতে গেলে তাঁরাই ডাক্তারদের কথা মত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন)।
এই জীবনাচার ইসলাম সম্মত নয়। আমাদের মহানবী, সাহাবী, তাবেয়্যিন, তাবে তাবেয়্যিন, বুজুর্গ ব্যক্তিগন কেউই বেতনভুক ইমাম ছিলেন না। তারা বাইরে যেতেন, অন্যান্য কাজ করতেন।
আপনার মতামত দিন: