Ameen Qudir

Published:
2017-02-03 15:16:11 BdST

ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেট ভোটের বাজার গরম করতে পারল না




 

 

 

শেখর রায়
_______________________________


বিজেপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে রইল। এক মাস আগে বাজেট পেশ করেও রাজনৈতিক ফসল ঘরে তুলতে পারল না ভারতের কেন্দ্রীয় শাসক দল। নোট বাতিলের ক্ষত পূরণ হল না। নিম্ন আয়ের করদাতাদের কিছু রেহাই মিলবে এক বছর পর। মধ্য ও সম্পন্ন কৃষকেরা যদি ব্যাঙ্ক লোণ নিতে চায় ভবিষ্যতে মিলবে রাহাত।

পরিকাঠামো খাতে অনেক অর্থ ধার্য করা হয়েছে। রাস্তা ঘাট তৈরির প্রস্তাব এলে মিলবে টাকা। রেলের নিরাপত্তার জন্য টাকা ব্যয় করা হবে। নতুন লাইন পাতা হবে। এবার আর আলাদা করে রেল বাজেট পেশ হল না। এই বাজেটেই রেল ঢুকেছে যা বিগত ৯০ বছরের ট্র্যাডিশন ভেঙ্গেছে। তবে বুলেট ট্রেন মোদীর গল্পই রয়ে গেল। অর্থমন্ত্রী অরুন জেঠলি চেষ্টা সত্তেও পারলেন না মোদী জামানায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। কংগ্রেসি অর্থনীতির বিজেপিকরন ভারতীয় অর্থনীতিতে কোন গতির সঞ্চয় করতে পারল না এ বাজেটে।

 

মোদী জামানার তিনটি মুল্যবান বছর অতিক্রান্ত। দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্তের প্রতি সরকারের কোন দায়বদ্ধতা নজরে আসে না। এ বাজেট ভাষণে বেকারি দুরিকরনের দায়ভার চাপিয়ে দিয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পের উপর কারন এই ক্ষেত্রই শ্রম নিবিড়। তবে তারা যদি ব্যাক্তি মালিকানা থেকে কোম্পানি মালিকানায় ব্যাবসা রুপান্তর করে তবে ৫% কর ছাড় পাবে যা করতে এক বছরে কর ছাড়ের সমান। বড় কর্পোরেট কোম্পানিদের কর ছাড়ের কোন আশা পূরণ হয় নি কারন তারা শ্রম নিবিড় নয় বা যান্ত্রিক ভাবে চালায়, বেকারদের চাকরী দেয় না। কেন্দ্রীয় সরকারী কাজকর্মে চলছে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কিছু পছন্দের প্রাইভেট সংস্থা দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়া, কারন কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের উপর সরকারী মোটা মাইনের আমলাদের আছে অনাস্থা।



কর্মচারী সংগঠনগুলির মতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভায় অতি সক্ষম শিক্ষিত রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্তের অভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে এক শ্রেণীর উচ্চ পদস্থ অফিসারদের উপর যাদের এই সাধারন কর্মচারীদের প্রতি কোন আনুগত্য ও দায়বদ্ধতা নেই। বছর পার করলেও তাই পে কমিশনের বর্ধিত টাকা দিতে চায় না। দেশ গঠনে এই বিশাল সংখ্যার সরকারী কর্মীদের কোন ভুমিকা আছে, স্বীকার করে না এই মোদী সরকার।


বিপরীতে বহু সরকারী কার্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, না হয় বন্ধ করার পথে। কর্মরত কর্মীদের তাড়াতে কংগ্রেসি জামানায় তৈরি একজিট পলিশির জবরদস্ত প্রয়োগ চলছে। সেখানে নতুন কর্মী নিয়োগ মোদী জামানায় ভাবাই যায় না।


ফলে প্রত্যাশিত ভাবেই বাজেটে থাকে না কোন সরকারী নিয়োগ নীতি বা অর্থায়ন, থাকে না প্রান্তিক কৃষক, ভাগচাষী ও খেতমজুরদের দুর্ভাগ্য পরিবর্তনে প্রত্যক্ষ কোন অর্থনৈতিক রূপরেখা। শিক্ষা সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও নতুন দিশা দিতে ব্যর্থ এই কেন্দ্রীয় বাজেট। পেট্রোল ডিজেলের ক্রমাগত বর্ধিত মুল্য কমিয়ে সাধারন মানুষদের কিছু নিষ্কৃতি দিতে কোন পদক্ষেপ নজরে আসে না। একবাক্যে এই বাজেটকে জন বিরোধী না বললেও সার্বিকভাবে জনকল্যাণমুখী বলা যাবে না।

_____________________________

 

শেখর রায় । প্রখ্যাত লোকসেবী সিনিয়র সাংবাদিক, কলকাতা।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়