Dr. Aminul Islam
Published:2020-12-24 02:24:42 BdST
কোথা থেকে এল ভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি বা ভেরিয়েন্ট ?
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
________________________
কোথা থেকে এল করোনার এই নতুন প্রজাতি বা ভেরিয়েন্ট ?
পাব্লিক হেলথ ইংল্যান্ড বলছেন এই প্রজাতি সেপ্টেম্বর থেকে ছিল ইংল্যান্ডে , আর মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত খুব নিম্ন মাত্রায় ঘুরছিল । নভেম্বরের শেষ দিকে নজরে এল পাব্লিক হেলথ ইংল্যান্ডের , তারা দেখলেন , কেন্ট এলাকায় , যথেষ্ট জনস্বাস্থ্য বিধি আরোপের পর সঙ্ক্রমন হার কম ছিল না।
এর পর তারা পেলেন এই প্রজাতির সাথে সম্পর্কিত একটি ক্লাস্টার বা পুঞ্জ , দ্রুত বিস্তার লাভ করছে লন্ডন আর এসেক্স এ।
তারা বলেন বর্তমানে উচ্চ অগ্রাধিকার স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে যে ফাইজারের ভেকসিন দেয়া হচ্ছে সেই টিকা একে রোধ করবেনা এমন প্রমান পাওয়া যায়নি ।
বি এম জে ( ব্রিটিশ মেডিক্যাল জরনলে ) প্রকাশিত এক প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয় , প্রথম একে শনাক্ত করেন কোভি ড ১৯ জেনমিক্স ইউ কে , এই কনসোরটিয়াম যুক্ত রাজ্যের নানা স্থান থেকে সংগ্রহ করা পজিটিভ করোনা নমুনা র দৈব চয়ন করে পরীক্ষা করেন তারা। এই নতুন প্রজাতি বেশ আছে ইংল্যান্ডের দক্ষিন পূর্ব অঞ্চলে।
বারমিং হামের একজন অধ্যাপক বলেন এই প্রজাতি বাইরের আমদানি এমন প্রমান নেই , এটি এখানেই উদ্ভূত ।
এই নতুন প্রজাতির নাম হল VUI 202012/01 " the first variant under investigation" ডিসেম্বর ২০২০ , বি এম জে বলেন , ১৭ টি মিউ টে শনের সারি এতে , সব চেয়ে তাৎপর্য পূর্ণ মিউ টে শন ঘটেছে স্পাইক প্রোটিনে , আর এই প্রোটিন কে ভাইরাস ব্যবহার করে দেহ কোষের গ্রাহক এসি ২ রিসেপটার এর সাথে যুক্ত হবার জন্য ।
স্পাইক প্রোটিনের এমন মিউটেসন , বিজ্ঞানীদের ধারনা , ভাইরাস কে করে তুলেছে সহজ বিস্তারি আর বেশি সংক্রামক ।
ইউরপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বলছেন, এই নতুন প্রজাতির উদ্ভব ঘটে বছরের এমন সময় যখন মানুষ বেশি সামাজিকতা করে আর সামাজিক সম্মেলন বেশি হয়।
এজেন্সি বলেন ,তবে উচ্চ হার সঙ্কমন এই নতুন প্রজাতির জন্য এমন তথ্য প্রমান নেই তবে নতুন প্রজাতির কয়েকটি সংক্রমণ দেখা গেছে ডেন মার্ক , নেদারল্যান্ডস আর মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বেলজিয়ামে ।
প্রধান মন্ত্রি জন সন আরোপ করার কথা বলেছেন কঠোর স্বাস্থ্য বিধি দক্ষিণ পূর্ব আর পূর্ব ইংল্যান্ডে , যেখানে সংক্রমণ বেশি বাড়ছে । খ্রিস্তমাস সামাজিকতা কাট ছাঁট করার কথাও বলা হচ্ছে।
লক ডাউনের অধীনে পড়তে যাবে সাময়িক , আর এমন কারনে অন্তরন আর একাকি বাসের জন্য সামাজিক সাপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
২.
করোনা নতুন ভেরিয়েনট সম্বন্ধে আরও ইনফো
করোনা ভাইরাসের একটি নতুন আর মিউটেশন হওয়া রূপ যার উদ্ভব ইংল্যান্ডে , ছড়িয়ে যাচ্ছে পৃথিবীতে , আর যা ভাবা হয়েছিল এর চেয়ে বেশি ছোঁয়াচে হবার সম্ভাবনা নিয়ে ছড়াচ্ছে । এই প্রজাতি র অস্তিত্ব ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে ডেন মার্ক , বেলজিয়াম , নেদারল্যান্ডস আর অস্ট্রেলিয়া তে।
ডা আয়ন্থনি ফাউচি বলছেন , সম্ভবত এটি এসে গেছে আমেরিকাতে ।
বিজ্ঞানীরা এসম্বন্ধে আরও জানার চেষ্টা করছেন , কিছু জানা গেছে আর কিছু এখনো অজানা । তা পরে কোন সময় বলব।
ফাইজার আর মডার্না ইতিমধ্যে পরীক্ষা করে দেখছে তাদের টিকা এই নতুন প্রজাতির প্রতি কার্যকর কিনা । অবশ্য বিশেষজ্ঞ রা বলছেন , তাদের প্রত্যাশা এটি কার্যকর হবে।
আমেরিকাতে ইতিমধ্যে ৬১৪, ০০০ টি টিকা প্রদান করা হয়েছে , আরও ৭.৯ মিলিয়ন ডোজ দেওয়া হবে ফাইজার আর মডার্না র টিকা ।
৩.
করোনা ভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি ভাইরাস বিবর্তনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া
এভাবেই একে মূল্যায়ন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ,
নতুন এই প্রজাতি আবিষ্কারের পর ভয়ার্ত অনেক দেশ ইংল্যান্ড আর দক্ষিন আফ্রিকার সাথে ভ্রমণ নিষেধ আরোপ করেছেন , তবে ই ভাইরাস অনুসরনের নতুন হাতিয়ার প্রস্তুত আছে ।
জনগণ সত্যিটা জানবেন তবে এও বোঝা উচিত এটি একটি স্বাভাবিক ভাইরাস মিউ টে সন।
ভাইরাস কে অনুসরন করা এর গতিবিধি লক্ষ্য করা আর সারভেলেন্স জরুরী । এই প্রজাতি মানুষকে বর্তমান প্রজাতির তুলনায় বেশি অসুস্থ করছে , বা এটি বেশি ভয়ংকর এমন প্রমাণ এখন নেই। তবে এটি অনেকে সহজে আর সবচ্ছন্দে আর দ্রুত ছড়ায় ।
যে সব দেশ ভ্রমন বিধি নিষেধ দিয়েছেন তারা বিজ্ঞো চিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তবে এই ঘটনা ঘটা খুব স্বাভাবিক ।
বর্তমান আবিষ্কৃত ভেকসিন একে রোধ করার কথা তবে এর যথার্থতাও যাচাই করাও দরকার।
সময়ে আমরা আরও জানব এর সম্বন্ধে ।
আপনার মতামত দিন: