SAHA ANTAR
Published:2020-10-07 00:51:10 BdST
বয়স্ক স্বজন এবং ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স : ঝুঁকি ও লক্ষণগুলো কি ? কি করবেন?
ডা. সুলতানা এলগিন
সহযোগী অধ্যাপক
মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ
কনসালটেন্ট , ওসিডি ক্লিনিক ও জেরিয়াট্রিক ক্লিনিক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় , ঢাকা
______________________________
লবণের মাত্রা অসামন্জস্যতা/ হেরফের
বয়সের সাথে সাথে শরীর নামক যন্ত্রের কলকব্জা লিভার,কিডনী,ব্রেন ,হার্ট দুর্বল হতে থাকে। কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। শরীরে বিভিন্ন খনিজের( সোডিয়াম,পটাশিয়াম ,ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম) পরিমাণ হ্রাসবৃদ্ধি ঘটতে থাকে। কিন্তু আমরা টের পাই না। এই খনিজপদার্থ শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়াবিক্রিয়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই এর সামান্য হেরফের হলে বয়স্কমানুষের উপর সহজেই প্রভাব পড়ে। এছড়া বয়স বাড়লে খাবারের পরিমাণ কমে যাওয়া,কোষ্ঠকাঠিণ্য, বিভিন্ন রকমের ওষুধের প্রভাব এর জন্যে অনেকাংশে দায়ী।
কি হলে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স এর ঝুকি বাড়ে :
বমি,পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া, ,কোষ্ঠকাঠিণ্য,খাদ্যে অরুচি,জ¦র, । শ্বাসতন্ত্রের রোগ,ডায়াবেটিস, হার্ট,কিডনীর জন্য বিভিন্ন ওষুধ মূত্রবর্ধক,লেক্সেটিভ এর কারণে এই মাত্রার হেরফের হয়।
লক্ষণগুলো কি ?
অস্থিরতা,ঘুমের সমস্যা ,বিরক্তিভাব, দুর্বলতা,উল্টাপাল্টা কথা বলা দিয়ে শুরু হয়। আস্তে আস্তে সমস্যা বাড়তে থাকে। তখন আপনজনকে চিনতে পারে না । দিনরাত তফাৎ করতে পারেন না। কোথায় আছেন সেটাও অনেক সময় বুঝতে পারেন না। ঘর থেকে বের হয়ে যেতে চান। জোরাজুরী করলে মাঝেমধ্যে মারমুখীও হয়ে থাকেন। চোখের সামনে উল্টাপাল্টা জিনিষ দেখেন ,ভয় পান ,অস্থির হয়ে পড়েন। নিজের কাপড়চোপড়, গোসল ,টয়লেট সবই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
কি করবেন?
বৃদ্ধবয়সে বিভিন্ন শারীরিক রোগ কমবেশী সবারই দেখা যায়। তাই আপনি আপনার নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শতো নিচ্ছেনই। কিন্তু উপরোক্ত সমস্যা গুলো যখন দেখা হয়
আমরা তা বয়সোজনিত সমস্যা মনে করে এড়িয়ে যাই। যতক্ষণ না বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায় ততক্ষণ আমরা দেখতে থাকি ,সময় নেই। তবে এই সময় কতগুলি পরীক্ষা করিয়ে নেয়া জরুরী:
Blood CBC, S.Electrolyte, RBS, S.Creatinine
এই রিপোর্টগুলো হাতে থাকলে ডাক্তারদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।
তাছাড়া রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা রোগীর লোকজন শুরু করতে পারেন। কারণ দেরী হলে অনেক সমস্যা হতে পারে। বয়স্কব্যক্তিদের প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পানি ,লেবু পানি ,ডাবের পানি,দুধ ,তরমুজ,পালং শাক, আলু,বরবটি,কলা,কমলা,স্ট্রবেরী,সয়াবিন রাখবেন। সোডিয়াম কম থাকলে সোডিয়াম ট্যাবলেট,লবণ,স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করতে পারেন। পটাশিয়াম কম থাকলে কলা, ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন। তাছাড়া এসব খনিজের মাত্রা বেড়ে/ কমে গেলে তার জন্য জরুরি হাসপাতালে নেয়া যে প্রয়োজন তার সিদ্ধান্ত নিতেও এই রিপোর্ট রোগীর আত্মীয় স্বজনদের জন্য সহায়ক হবে।
আপনার মতামত দিন: