Dr. Aminul Islam

Published:
2020-06-08 02:10:07 BdST

অমর্ত্য সেনের নোবেল জয় এবং একটি বাই সাইকেল


 

ডেস্ক
_____________________

স্বাস্থ্য সচেতনতায় সাইকেল: বিশ্ব বাই সাইকেল দিবসের প্রেক্ষিতে অনন্যলেখা লিখেছেন অরুণাভ সেন ৷ লেখাটি প্রকাশ হল।

তিনি ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়ে বাঙালির হৃদয় জিতে নিয়েছিলেন৷এই তথ্য সবাই জানেন৷ দারিদ্র্য এবং দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণার জন্যই নোবেল জয়, পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ শ্রদ্ধা করেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন কে,সেই নিয়ে দ্বিধা নেই৷ আর এক বাঙালি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও নোবেল জিতেছেন৷অর্থাৎ বাঙালি যে অর্থনীতিটা অনেকের তুলনায় ভাল বোঝে তার বোধহয় বড় প্রমান অমর্ত্য সেন এবং অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনীতিতে নোবেল জয়৷কিন্তু তাই বলে নিতান্ত নিরীহ এক বাইসাইকেল অমর্ত্য সেনের অর্থনীতির নোবেল জয়ের অন্যতম বড় চরিত্র হয়ে উঠেছিল এই তথ্য বোধহয় অনেকের অজানা৷সুইডেনের নোবেল কমিটির দাবি কিন্তু ঠিক তেমনই৷ পন্ডিত এই মানুষটির ছিল বহুমুখী প্রতিভা৷রীতিমত সাহিত্য চর্চা করতেন,বিতর্কে অংশ নিতে ভালবাসতেন৷বাঙালির গর্ব
অমর্ত্য সেনের শিক্ষকতার শুরু কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়৷পরে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং লণ্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সে অধ্যাপনার মধ্যে দিয়ে তিনি শিক্ষকতা জগতের বড় মাইলস্টোন স্পর্শ করেছেন৷
বাংলায় ১৯৪৩-এর মন্বন্তর প্রত্যক্ষ করেছিলেন অমর্ত্য সেন। ওই দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর গবেষণার সূত্রপাত।
জনকল্যাণ অর্থনীতি এবং গণদারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে তাঁর গবেষণার জন্য তাঁর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ৷নিজের মুখে তিনি বলেছেন,
"শান্তিনিকেতনের আশেপাশে বাস করা মানুষের আয় কত ছিল, চালের দাম কত ছিল, এসব তথ্য সাইকেলে চড়ে ঘুরে ঘুরে আমাকে সংগ্রহ করতে হয়েছে, শান্তিনিকেতনে এবং তার আশপাশের অঞ্চলে"৷
সুইডেনের নোবেল মিউজিয়ামে একটা বাই সাইকেল আছে। খোদ নোবেল কমিটির দাবি এই সাইকেলে চড়ে গ্রাম ঘুরতেন অমর্ত্য সেন।আর সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিজের গবেষণাপত্রে তুলেছিলেন। যে গবেষণার ভিত্তিতে ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন অমর্ত্য সেন। ইনস্টাগ্রামে করা এক পোস্টে এমনই দাবি সুইডেনের নোবেল কমিটির। ৩ জুন, বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস পালিত হয়েছে৷ দিনটি উদযাপন করতে গ্যালারিতে রাখা সেই সাইকেলের ছবি সোশাল মাধ্যমে পোস্ট করেছে নোবেল কমিটি। সেই পোস্টে নোবেল কমিটি লিখেছে, "বাইসাইকেল অর্থবিজ্ঞানের চাবিকাঠি নয়। কিন্তু অমর্ত্য সেনের অর্থনীতির গবেষণায় এই বাইসাইকেল বড় ভূমিকা পালন করেছিল।"
ইকোনমিক টাইমস কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোবেল কমিটির এক কর্তার দাবি "প্রথমে অমর্ত্য সেন তাঁর ছাত্রদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাম্পাস ছেড়ে ফিল্ড ওয়ার্ক করার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এরপরেই নিজেও সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন৷অর্থাৎ অমর্ত্য সেনের অর্থনীতিতে নোবেল জয়ে একটি আপাত নিরীহ সাইকেলটির কিন্তু যতেষ্ট গুরুত্ব আছে৷স্বভাবত সেই কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিতেই নোবেল কমিটির ইনস্টাগ্রামে করা এক পোস্টে সুইডেনের নোবেল কমিটি দাবি "বাইসাইকেল অর্থবিজ্ঞানের চাবিকাঠি নয়। কিন্তু অমর্ত্য সেনের অর্থনীতির গবেষণায় এই বাইসাইকেল বড় ভূমিকা পালন করেছিল। সত্যি কথা বলতে কি,অমর্ত্য সেনের মত মানুষকে হয়ত একটা শহর বা একটা দেশের পরিচয়ের গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখতে পারা যায় না,কিন্তু
তিনি বাঙালি,আর সেইজন্য অমর্ত্য সেনের গর্বে নিজেকেও গর্বিত মনে করে বাংলা ভাষায় কথা বলা সব মানুষ৷

_____________________________

 

AD...

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়