ডাক্তার প্রতিদিন

Published:
2020-05-15 16:06:02 BdST

করোনা আক্রান্ত ছিলেন ড.আনিসুজ্জামান: কেমন করে! কিছু প্রশ্ন,কিছু উত্তর



ডেস্ক

________________________

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে ৷ এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার ১৫ মে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তার দাফন সম্পন্ন হবে৷

১৪ মে রাতে মিডিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তার ছেলে আনন্দ জামান৷
চিকিৎসক , সাংবাদিক , স্বাস্থ্য পরামর্শক মহলে বিস্ময় : একাধিক বড় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ড. আনিসুজ্জামানের করোনা হল কেমন করে! কোথায়, কিভাবে , সেসব প্রশ্নের জবাব খোঁজা দরকার বৃহত্তর জনস্বার্থে।
ওদিকে আনন্দ জামান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আব্বার নমুনা নেওয়া হয়। পরে বিকেলে মারা যাওয়ার পরও নমুনা নেওয়া হয়েছে। পরে আব্বার করোনা ভাইরাসের প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ এর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে৷ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হবে না৷

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৫৫মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিলো ৮৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন।


প্রখ্যাত সাংবাদিক কলামিস্ট শওগাত আলী সাগর তুলেছেন কিছু প্রশ্ন ।

তিনি লিখেছেন,
যতোটুকু জানি অধ্যাপক আনিসুজ্জামন করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন নি। তাঁর অন্যান্য অসুস্থতা ছিলো, সেইগুলোর চিকিৎসা সেবা পেতেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর মুত্যুর পর তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এই পর্যন্ত যে বিবরন আমি উল্লেখ করলাম তার মধ্যে কি কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে? না, নেই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে এবং এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়।
করোনা ভাইরাসের বিস্তারের পর পরই পশ্চিমা দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জরুরী চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ রেখে হাসপাতালগুলোয় অন্যান্য চিকিৎসা সেবা সংকোচিত করে দেয়। জীবনরক্ষাকারী বাদে বাকিসব সার্জারিও স্থগিত রাখা হয়।এটি করা হয় রোগীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই। হাসপাতালগুলোকে করোনা ভাইরাসের একটি উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করেই হাসপাতালে সাধারন রোগীদের যাতায়ত সীমিত করে দেয়া হয়।কানাডায় টেলি হেলথ ব্যবস্থার পাশাপাশি রোগীর বাড়ী গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা সক্রিয় রাখা হয়। জরুরী চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। যতটুকু জানি, তিনি যে সমস্যাগুলো হাসপাতালে গিয়েছেন সেগুলোরই চিকিৎসা হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে গেলেও তাঁর এই চিকিৎসাগুলোই দিতে হতো। মৃত্যুর পর তার করোনা টেস্ট করে চিকিৎসকরা অতি জরুরী কিন্তু বাড়তি দায়িত্বই পালন করেছেন।

চিকিৎসক কথাসাহিত্যিক ডা. ফারহানা নীলা লিখেছেন ,

ড আনিসুজ্জামান স্যার প্রথমে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তীতে সিএমএইচে চিকিৎসা এবং মৃত্যুবরণ করেন।
জানামতে শ্রদ্ধেয় আবদুল্লাহ স্যারও আনিসুজ্জামান স্যারের চিকিৎসার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

মৃত্যুর পর টেস্ট করে জানা যায় তিনি কোভিড১৯ পজিটিভ ছিলেন।

তাঁর মরদেহ হিমঘরে আছে। করোনা আক্রান্ত হবার কারণে সকল শ্রদ্ধা নিবেদন করার অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
কোথায় দাফন হবে. … সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দাফন হবে।

প্রশ্নটা এখন?
১. তাঁকে যারা চিকিৎসা দিয়েছেন, তাঁদের কি হবে?তাঁদের পরিবারের কি হবে?
২. এই হাসপাতালের অন্যান্য রোগীর ঝুঁকি কতটুকু?
৩. তাঁর পরিবারের সকলের টেস্ট করতে ব্যবস্থা নেওয়া কি হবে?
৪. এতদিন কেন টেস্ট করা হয়নি?
৫. সকল রোগীকেই কোভিড রোগীর মত সন্দেহ করতে হবে কি?
৬.সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কেভিড, নন- কোভিড, সাসপেক্টেড জোন ভাগ করতে হবে কি?
৭. স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত থাকছে কি?

প্রশ্নগুলো জানা এবং সহজও বটে!
উত্তরও কি জানা? নাকি অজানায় প্রতিধ্বনিত হয় উত্তরগুলো?

AD..

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়