Ameen Qudir

Published:
2020-04-01 21:17:57 BdST

করোনা মোকাবিলায় অতি দ্রুত যে ১০ কাজ অত্যাবশ্যক


 
ডা.এস এম মুইজ্জুল আকবর চৌধুরী

________________________

কোভিড ১৯ মোকাবিলায় অতি দ্রুত জরুরি ভিত্তিতে কিছু প্রস্তুতি সম্পন্ন করা অত্যাবশকীয়। একান্ত নিজস্ব ভাবনা ও প্রস্তাবনাঃ

বাচতে হলে
করোনার আগে আগে চলতে হবে.....
করোনার পিছে পিছে ছুটলে মরতে হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নির্দেশনায় কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য ভয়াবহতা মোকাবিলায় এবং হঠাৎ করে মানবিক বিপর্যয় না হয় সেজন্য বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা সক্ষমতার পাশাপাশি ৫০০ চিকিৎসককের একটি ইউনিট প্রস্তুত রাখতে বলেছেন। দেশের আপামর জনগনের ভাবনায় একজন দেশ প্রেমিক সুযোগ্য রাষ্ট্র নায়কের ভাবনাই তাঁর নির্দেশনায় দৃশ্যমান। এখন আমাদের দ্বায়িত্ব সম্ভাব্য দুর্যোগ বিবেচনায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া।

কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়তে হলে অতীব জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে, এক সেকেন্ড সময় ক্ষেপন করা যাবেনা। আমাদের সবই আছে শুধু প্রয়োজন স্বাস্থ্যসেবা বাহিনীকে সুশৃঙ্খল ও প্রশিক্ষিত করা
এবং প্রয়োজনীয় উপকরনের পর্যাপ্ততা।

অতীব জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির প্রস্তাবনাসমুহঃ

১.সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণঃ
এখানে সকল পর্যায়ের ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয়, ক্লিনার, স্যাম্পল কালেক্টর, এম্বুলেন্স ড্রাইভারসহ সবার প্রশিক্ষন ও প্রস্তুতি অত্যাবশ্যক।
বিশেষ করে আইসিইউ ও এনেস্থিসিয়ায় বিভাগের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের তালিকা করে প্রস্তুত রাখতে হবে। এরাই শেষ লাইনের ডিফেন্স তাই এদের ফেইজ বাই ফেইজ রাখতে হবে।

২.নিজ দেশে PPE ( Gown, Gloves, Mask, Shoe cover, Eye protector) তৈরি করাঃ এব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারন কোভিক-১৯ রোগী ম্যানেজ করার PPE আমাদের নাই বললেই চলে। আর শুধু আমাদের নয়, আজ সারা বিশ্ব PPE সংকটে। আমরা চাইলেই এই সংকট কমিয়ে আনতে পারি।
আমাদের গার্মেন্টস শিল্প আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন।আমাদের EPZ বা দেশীয় গার্মেন্টস অল্প সময়ে বিজ্ঞান সন্মত PPE তৈরি করতে পারে। প্রয়োজন Raw materials এর যোগান নিশ্চিত করা। এতে নিজ দেশের চাহিদা দ্রুত পুরন করে বহিঃবিশ্বের চাহিদা পুরনে ভুমিকা রাখতে পারবে।

৩. রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পেলে। অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাবে। তাই অক্সিজেন চাহিদা পুরনের উৎপাদন সক্ষমতা বহুগুন এখন থেকেই বাড়াতে হবে।

৪. প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন, স্যালাইন সেট,আইভি ক্যানুলাসহ চিকিৎসা সামগ্রী পর্যাপ্ত রাখতে হবে। এজন্য দেশীয় ওষুধ কোম্পানি গুলোকে প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী আগাম উৎপাদনের জন্য নির্দেশ দিতে হবে।

৫. রোগ নিরুপণ করার প্রয়োজনীয় ডায়াগনস্টিক সুবিধা পর্যাপ্ত করতে হবে ( শুধু এই ক্ষেত্রে আমাদের বহিঃবিশ্বের উপর নির্ভর করতে হবে)

৬. রোগী পরিবহনের জন্য প্রশিক্ষিত এম্বুলেন্স সার্ভিস প্রস্তুত করতে হবে।

৭.আইসিইউ+ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ অস্থায়ী কোভিড-১৯ হাসপাতাল গড়ে তুলতে হবে। আইসিইউ ডাক্তার + নার্স + স্টাফদের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এখন থেকে ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ শুরু করতে হবে। ( দেশের ধনাঢ্য শিল্পপতি গন এখানে ভুমিকা রাখতে পারেন। আমরাও চীনের মত রাতারাতি বিভাগীয় পর্যায়ে করোনা হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারি)

৮. জীবানু ধ্বংসের কার্যক্রম রাঊন্ড দ্য ক্লক আরো জোরদার করতে হবে।

৯. ইতিমধ্যেই সরকার কর্তৃক নেয়া সকল উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। বিশেষ করে কোয়ারান্টাইন, লকডাউন, জন সমাগম, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি।

১০. আইন শৃংখলা বাহিনী -পুলিশ, সেনা বাহিনীর কার্য পরিধি আরো জোরদার ও বিস্তৃত করতে হবে। জরুরি বিশেষ সেবা সমুহ ও রোগী পরিবহন নিশ্চিত করার দ্বায়িত্ব দিতে হবে।

আল্লাহ আমাদের সহায় হলে হয়তো এই মহামারী আমাদের দেশে ইতালি /জার্মানির মত ভয়াবহ হবে না। কিন্তু সম্ভাব্য ভয়াবহতা মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে।
আমরা জাতিগত ভাবে সাহসী এবং যে কোন প্রতিকুলতায় ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে জানি।তাই কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমরা জিতবোই।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়