Ameen Qudir
Published:2020-03-12 20:19:43 BdST
বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসঃ যে যত দ্রুত সচেতন হয়েছে সে তত ভালো আছে এবং থাকবে
ডা. সাঈদ এনাম
_________________
বাংলাদেশে চারদিন আগে করোনা সনাক্ত হয়েছে ৩ জনের। তাদের অবস্থা বেশ ভালো। আর কোন দুঃসংবাদ আপাতত নেই। অথচ এ চারদিনে ইতালিতে করোনাভাইরাস-এ মৃত্যু হয়েছে শতাধিক। এটা আমার পরম সৌভাগ্য।
আমাদের দেশের পরিস্থিতি আল্লাহর রহমতে অসম্ভব আশাব্যঞ্জক। এর একটা কারন হতে পারে আমরা সচেতন হয়েছি সেই ডিসেম্বর এর শুরু থেকে অল্প অল্প করে ফলে কোনরূপ লক ডাউন ছাড়াই আমরা করোনাভাইরাস কে অনেক খানি কনটেন করতে পারছি। কোয়ারেন্টাইন ছাড়া আমরা কাউকে ঢুকতে দেইনি শুরু থেকেই। অথবা এও হতে পারে করোনা লেস ভিরুলেন্ট স্ট্রেইন এসেছে আমাদের দেশে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস কেইস ৩ জন পাওয়া গেছে এর মানে এই নয় যে মাত্র এই ৩ জন ই আক্রান্ত। আর কেউ নেই।
আসলে মোটেই তা এরকম নয়। অনেক সময় করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ সাধারণ সর্দিকাশি কিংবা কোন রুপ উপসর্গ ছাড়াই শেষ হয়ে যায়। আপনি সেটা নাও বুঝতে পারেন।
সে হিসাবে কষলে আমাদের দেশে ইতিমধ্যে হয়ত অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেটা আবার আশপাশ ছড়িয়ে ছটিয়েছেনও। টেরই পাননি। আবার সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় সেরেও যাচ্ছেন প্রায় সকলেই।
করোনা ভাইরাস আউটব্রেক ডেথ এসব নিয়ে একটা হিসাব আছে। যদি দেখা যায় কোথাও করোনাভাইরাস-এ মৃত্যু হয়েছে তবে ধরে নেওয়া হয় সেই অঞ্চলে সত্যিকারের আক্রান্ত রুগী ছিলেন কম হলেও ৮০০ জন। এদের অনেকেই হয়তো জানান নি, চিকিৎসা নেননি, অথবা তিনি নিজে বুঝতে পারেন নি তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছিলো।
তবে গবেষণা করলে দেখা যায়, করোনাভাইরাস নিয়ে যে দেশ যত দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সে দেশে করোনাভাইরাস তত কম ছড়িয়েছে এবং সে দেশে প্রানহানী তত কম হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। সীমাবদ্ধতা আছে আমাদের। তারপর ও আমাদের সরকার প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কনটেন করতে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কেনো এতো কম হচ্ছে, হয়েছে এ নিয়ে গবেষণারও প্রয়োজন। আমেরিকান সহকারী অধ্যাপক ডা. এলিন ডিজ আমাকে জানালেন, বাংলাদেশে যে করোনাভাইরাস সেটা হয়তো জেনেটিক্যালি লেস ভিরুলেন্ট-(অনেকটা দূর্বল)। ভারতীয় বংশদ্ভূত ডা. অভিষেক মেহরার মতে, হয়তো বাংলাদেশে তরুন সম্প্রদায় বেশী। কারন করোনাভাইরাস বৃদ্ধদের বেশী আঁকড়ে ধরে।
কিন্তু অনেকের আশংকা, এটা কি ঝড়ের পুর্বে আকাশের থমথমে অবস্থার মতো হতে পারে? এ মন্তব্য করা কঠিন। এসব নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে।
একটি লিংক শেয়ার করছি। যারা করোনা নিয়ে গবেষণা করেন, সভা সেমিনারে বক্তব্য, রাখেন বা রাখছেন সে সব গুনী লোকদের অনেক উপকারে আসবে।
ট্রু কেইস, কনফার্মড কেইস, এসিমটোম্যাটিক কেইস, 'বাংলাদেশের, জাপান ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব অনেক কম কেনো', এসব নিয়ে আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক এসোসিয়েশন এর একটি ফোরামে আলোচনার সুত্রপাত করেছিলাম। আলোচনাটি চলমান রয়েছে।
লিংকের লেখাটি এসব নিয়েই।
আলোচনার এক ফাঁকে আমাকে আমেরিকান প্রফেসর ডা. মরগেনস্টিন সকালে এই লিংক মেইলে দিলেন।
আর্টিকেল টি অনেকের উপকারে আসবে। এখানে রাইটার দেখিয়েছেন, করোনা কিভাবে ছড়ায়, আউটব্রেক কিভাবে হয়, সত্যিকারের কতজন আক্রান্ত হচ্ছেন, কেনো এক দেশে বেশী আরেক দেশে কম এসব নিয়ে। লিংক
https://medium.com/@tomaspueyo/coronavirus-act-today-or-people-will-die-f4d3d9cd99ca
_________________________
ডা. সাঈদ এনাম
ডিএমসি,কে-৫২
সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।
আপনার মতামত দিন: