Ameen Qudir

Published:
2020-02-25 20:27:49 BdST

অধ্যাপক ডা. নাজিমুদ্দিন আহমেদ, মৃত্যুর পেয়ালা তুলে নিলেন নীরবে নিভৃতে


মেজর (ডা.) খোশরোজ সামাদ
_________________________

২২ ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রিয় শিক্ষক রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল, ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নাজিমুদ্দিন আহমেদ আমাদের সকল মায়া ছেড়ে অন্যভূবনে যাত্রা করলেন
। বার্ধক্যজনিত রোগসহ নানা জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুর হলাহল পান করলেন।যার হাত দিয়ে অনেক দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ উপস্থাপিত হয়েছিল তিনি জীবনের অন্যতম সত্য মৃত্যুর পেয়ালা তুলে নিলেন অনেকটা নীরবে নিভৃতে।

২।অধ্যাপক নাজিমুদ্দিন রাজশাহী মেডিকেলের প্রাক্তন ছাত্র। মেধাবী হলেও ফার্মাকোলজির মত প্রায় অবহেলিত বিষয়কে জীবনের আরাধ্য হিসেবে গ্রহণ করেন।এই জ্ঞান তাপস নিছক প্রথাবদ্ধ যান্ত্রিক শিক্ষাদান রীতির বিরুদ্ধে স্রোতে বাতিঘরের মত অগ্রবর্তী চিন্তা আর প্রজ্ঞার শিখা জ্বালিয়েছিলেন।মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন।

৩।তিনি পূর্ব পাকিস্তান আর্মি মেডিকেল কোরে যোগ দিয়েছিলেন।অসুস্থতা হেতু তিনি সামরিক চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।তাঁর গোপন প্রতিবেদনে লেখা ছিল ' 'He did good job in big army, he could do better for bigger country '.

৪।বিভিন্ন সরকারী মেডিকেল কলেজে তিন দশকেরও বেশী সময় ধরে তিনি বিভাগীয় প্রধানসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, নীতি নির্ধারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

৫।স্যারের মৃত্যুতে শুধু হাজারও গুণমুগ্ধ ছাত্রছাত্রী তাঁদের শিক্ষাগুরুকে হারাল না, বরং রাষ্ট্র ও জাতি এক অসাধারণ মেধাবী, বহুবিধ গুণের অধিকারী এক সাধককে হারালো। ব্যক্তিগতজীবনে তিনি ছিলেন বিনয়ী,সদালাপী, স্নেহপ্রবণ, দূরদর্শী একজন সাদা রঙের মানুষ।

৬।স্যার, অসীমের পানে আপনার এই যাত্রার মুহুর্তে দেশবিদেশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ছাত্রছাত্রী গভীর শ্রদ্ধায় আপনাকে স্মরণ করি। স্যার,'তুমি রবে নীরবে, হৃদয়ে মম, নিশীথিনীসম '।

৭।স্যার রাজশাহী মেডিকেলে পড়বার সময় সন্ধ্যারাতে হেঁটে হেঁটে ফিরবার সময় আসমান ভাংগা জোছনায় দুজনে ভিজে গিয়েছিলাম।আজও আকাশে কোজাগরী চাঁদ, ভরা পূর্নিমার তীব্র আলোকে ভেসে যাচ্ছে নগর জনপদ।
__________________________

মেজর (ডা.) খোশরোজ সামাদ,
ক্লাসিফাইড স্পেশালিষ্ট ইন ফার্মাকোলজি,
আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়