Ameen Qudir

Published:
2020-02-10 22:33:42 BdST

আপনারা কি সন্তানকে ডাক্তারি পড়াতে চান ? সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো জেনে নিন


 

 

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসাহিত্যের পথিকৃৎ
___________________

ডাক্তারি পড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারায় কি সুখী ?
অভিভাবকদের: আপনারা কি সন্তানকে ডাক্তারি পড়াতে চান ?

এতকিছুর পর ও এখন ও ডাক্তারি একটি স্থিতিশীল পেশা । চাকুরি আছে অনেক এরপর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার সুযোগ আছে , ডাক্তারি ভাল করে শিখলে নিজে নিজে সৎ ভাবে আয় করার অনেক সুযোগ । আবার শিক্ষক হওয়া আর গবেষণা করার সুযোগ আছে , আর এজন্য বিশ্ব ব্যাপী দুয়ার খোলা । পেশায় কাজ করে মনে আসে তৃপ্তি , মানুষকে সেবা করার অবারিত সুযোগ । সমাজে সম্মানের আসনে আসীন হওয়া সম্ভব । নিন্দুক থাকবে তবে ভাল কাজ করলে এর সমালোচনা হবেই । প্রতিদিন জ্ঞান আর দক্ষতা প্রয়োগ করা যায় আবার নতুন অনেক কিছু শেখা যায় । যাদের আগ্রহ ,ঔ ৎস ক্য বেশি , যারা সৃজনশীল , যারা কেয়ারিং তাদের জন্য পেশাটি ভাল।
ডাক্তার হলে চাই ধৈর্য, দৃঢ় সংকল্প , উৎসর্জন , আর ত্যাগ।
যেখানেই কাজ , ইনপেসে ন ট , আউট পেশেন ট ,সার্জারি , স্পেসিয়ালি টি , প্রাইমারী কেয়ার , নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় কাজ করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে , কঠিন জীবন , কঠিন কাজ , দায়িত্বের কাজ ।
অনেক দিন কঠিন কাজ হলেও এর জন্য মূল্যায়ন নাই , প্রশংসা , পুরস্কার নাই । ফলাফল , পরিনতি ভাল নাও হতে পারে সবসময় । দিন রাত রোগীর পিছনে শ্রম দেয়ার পরও কাঙ্খিত পরিনতি নাও আসতে পারে । রোগীর স্বজনদের কাছে মৃত্যুর মত অপ্রিয় সংবাদ দিতে হতে পারে । তারা খুব ক্ষিপ্ত হতে পারে । সেবাকে যথেষ্ট নিন্দা করতে পারে । গালিগালাজ , কটু কাটব্য এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা ।
তবে অনেক দিন হতে পারে কঠোর শ্রম সাধ্য কিন্তু আনন্দের । একটি শিশুর জন্ম , ডাক্তারের হাতে হতে পারে , হয়ত বলতে হতে পারে যে শরীরে ক্যান্সার নেই এমন আনন্দ সংবাদ , । রোগীরা তাদের জীবনের সব চেয়ে দুর্বল আর ভঙ্গুর সময়ে ডাক্তার কে বিশ্বাস করে । এমন রোগী যাকে দুরারোগ্য ব্যধি থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করার জন্য সে স্মিত হেসে আলিঙ্গন আবদ্ধ করতে পারে । ডাক্তারের কাজ জীবন বাঁচানো । তীব্র সংক্রমণ , বিদীর্ণ এপেন ডিক্স, আঘাত থেকে , ক্যান্সার থেকে , মানসিক অসুখ থেকে বাঁচায় ডাক্তার । জীবন বাঁচানো , জীবন পরিবর্তন করা , জীবন উন্নত করা । এজন্য ঝুঁকি নিতে হয় , অনেক সময় জীবনের ঝুকি , অনেক দুরের দেশে রনাঙ্গনে , দেশের মুক্তিযুদ্ধে আহত সেনাদের সেবায় , অন্যদেশের রোগ প্রাদুর্ভাবে সে দেশের পীড়িত জনগনের সেবা দিতে ডাক্তারকে এগিয়ে আসতে হবে । অবদানের জন্য পুরস্কারের বদলে তিরস্কার জুটলেও কাজ থেকে ,কর্তব্য থেকে বিরত হওয়া যাবেনা । শত্রু মিত্র সবাইকে সমান সেবা দিতে হবে । চিকিৎসা পেশা মহান , গভীর দায়িত্ব অথচ অনেক সময় ত্রাস বা ভীতি ময় পরিনতি বিচিত্র নয় । উত্তর জানতে হবে । এর। এত কিছুর পরও ছেড়ে দেওয়া যাবেনা , ,। এজন্য বন্ধের দিনও কাজ করতে হবে । স্বজন , আত্মীয় , ছেলে মেয়ে এদের কাছে হয়ত সব সময় যাওয়া যাবেনা । সবচেয়ে কঠিন হল সন্তানের স্কুল প্রোগ্রাম , অভিভাবক সভা বার্ষিক ক্রীড়া , আবৃত্তি , শোবার সময় , আর ছুটির দিনে সবার সঙ্গে বসে প্রাতরাশ হয়ত করা হবেনা । এর পর যা পাওয়া যাবে তা মানুষের ভালবাসা , শ্রদ্ধা , কৃতজ্ঞতা ।
এরপর ভাবা যায় কি করব ? ঠিক হবে ডাক্তারি পড়া ?
বলব ঠিক তবে সাবধানে ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়