Ameen Qudir

Published:
2020-01-06 03:53:52 BdST

কেমন মানুষ পছন্দ নয় আপনার ? মিলিয়ে নিন


 

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সাহিত্যের পথিকৃৎ
------------------------------------------------------

 

কেমন মানুষ পছন্দ নয় আপনার ? মিলিয়ে নিন ।
অনেকের এমন ভুল ধারনা পছন্দসই লোক হতে হলে নিজের প্রকৃতি গত গুণ , যেমন দেখতে খুব সুন্দর , প্রচণ্ড সামাজিক আর অবিশ্বাস্য প্রতিভাবান হতে হবে:এমন লোক খুব কম এদের ভেতরে আছে এমন গুন ।কিন্তু আসলে তা নয় পছন্দ সই হওয়া সম্ভব এটি ইমশনেল ইন্টেলিজেন্সের ব্যপার ।
কিছু আচরন আছে এগুলো বর্জন করলে পছন্দের তালিকায় আসতে পারেন আপনিও
যেমন::
১। কথাচ্ছলে তাক লাগানোর জন্য গুরুত্ব পূর্ণ ব্যক্তিদের নামোল্লেখ করার অভ্যাস ।
গুরুত্ব পূর্ণ লোকদের জানা ভাল কিন্তু প্রতিটি আলোচনাকে তাদের নাম উল্লেখ করার সুযোগ হিসাবে নেওয়া দাম্ভিকতা আর বোকামি মনে হয় । নিজেকে চিত্তাকর্ষক প্রমানের চাইতে লোকে মনে করে সে ব্যক্তির নিরাপত্তার অভাব আছে , । যা আপনি নিবেদন করবেন তাও সস্তা প্রমাণিত হয় । প্রতিটি কথা বার্তায় আপনি কি জানেন , কি ভাবেন এর পরিবর্তে আমি অমুক বড় লোককে চিনি জানি এমন বলা হয় তাহলে আলোচনার রঙটাই বদলে যায় ।
যারা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য বেপরোয়া মানুষ তাদের পছন্দ করেনা । সামান্য বন্ধু সুলভ আচরন আর বিবেচক হলে মানুষের মন জয় করা সহজ ।
আপনি খুব গুরুত্ব পূর্ণ এমন দেখানোর চেয়ে যদি আপনি বন্ধু ভাব নিয়ে , আত্ম বিশ্বাস নিয়ে , অল্প কথায় বলেন মানুষ তখন হয় বেশী মনোযোগী আর প্ররোচিত । মানুষ দৃষ্টি ভঙ্গি দ্রুত ধরে ফেলে আর আপনার চাইতে সে ভঙ্গিতেই আকৃষ্ট হয় বেশী ।
২। মানুষের ভাবাবেগ ছিনতাই (ইমশনেল হাইজেকিং )
চেঁচামেচি , গালমন্দ , কাঁদানো এ ধরনের ভাবাবেগ ছিনতাই হল নিম্ন মানের ইমশনেল ইন্টেলিজেন্স । এরকম অস্থিতিশীল হলে মানুষ ভাববে সে লোক বিশ্বাস যোগ্য কি না , এ লোক সব ধরে রাখতে পারবে কিনা ।
কতোটুক তার প্রাপ্য তা না ভেবে কারো প্রতি বিস্ফোরিত হয়া , খুব নিগে টি ভ চেতনা আনে । লোকে মনে করবে এ হল অস্থির চিত্ত,
অনভিগম্য , আর ভীতি কর মানুষ । ইমশন নিয়ন্ত্রন হল ড্রাইভিং সিটে স্থির থাকার উপায় । কেউ অনৈতিক , অন্যায় কাজ করলেও নিজের ইমশন সংযত রাখলে লোকে সেই লোককে খারাপ বলবে ।
৩। নিজের খুব বড়াই করা ।
আত্ম অননুমোদনের মুখোশে র আড়ালে আত্মম্ভরিতা করে যারা তাদেরকে সবাই চেনে । এ রকম আত্ম প্রবঞ্চনা মানুষ বুঝে ।
৪। হটাৎ ফোন বের করা ।
আলোচনার মধ্যে টেক্সট মেসেজ করা , অথবা দ্রুত ফোনের দিকে তাকানো কেউ পচ্ছন্দ করেনা । আলোচনায় বসলে এতে সর্বান্তকরণে মনো যোগ দিতে হয় । সবার সাথে নিজেকে মেলালে মিশালে আলোচনা হয় উপভোগ্য আর কার্যকর ।
৫। আবদ্ধ মন ।
পছন্দের লোক হতে হলে খোলা মনের লোক হতে হবে । তাহলে অন্যের কাছে অভিগম্য আর আকর্ষণীয় মনে হবে । নিজের মনে বদ্ধ মুল ধারনা হয়েছে বা শোনার আগ্রহ নেই এমন লোকে কেউ খুব পচ্ছন্দ করেনা । কর্মস্থলে খোলা মন থাকা খুব গুরুত্ব পূর্ণ । আর সেখানে অভিগম্যতা মানে নতুন ধারনা আর সহযোগিতার দুয়ার খুলে গেল । পূর্ব ধারনা আর বিচার ছাড়া , পৃথিবীকে দেখতে হবে অন্য লোকের চোখ দিয়ে । এর মানে এই নয় যে অন্যের ধারনা আমাকে গ্রহন করতে হবে , অন্যের আচরন ক্ষমা করতে হবে ।
বিচার করতে হবে সব বুঝে সুঝে ।
৬। যথেষ্ট প্রশ্ন না করা ।
আলোচনায় বসে বড় ভুল হল পরে কি বলব এ ব্যাপারে বেশি সতর্ক সজাগ আর মনযোগী বা অন্য লোক কি বলছে কে কি বলল সেদিকে নজর নেই । স্পষ্ট আর জোর উচ্চারন হলেও এর অর্থ হয় মুল্য হীন
একে এড়ানোর উপায় হল অনেক প্রশ্ন করা ,। মানুষ বুঝতে চায় আপনি শুনছেন আর আরও স্পষ্ট বোঝার জন্য প্রশ্ন করলে বুঝে যে আপনি তার কথা যথেষ্ট খেয়াল করছেন । আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না শুধু প্রশ্ন করে কত প্রশংসা আপনি পাচ্ছেন ।
৭। খুব বেশি নিবেদিত চিত্ত আর গম্ভীর হওয়া ।
প্যাশনেট লোকের দিকে মানুষ ঝুঁকে যায় । পছন্দসই লোক কাজের সাথে মজা স্ফূর্তি করার ক্ষমতা দুটো ব্যলেন্স করে কাজের সময় মনযোগী , নিবেদিত তবে বন্ধু ভাবাপন্ন । স্বল্প সময়ে সামাজিক ভাবে সফল হয়াতে কাজ করিয়ে নেয় , তাদের মুল্ধন হল মুল্যবান সামাজিক মুহূর্ত গুলো । সহকর্মীদের সংগে অর্থপূর্ণ পরস্পর আদান প্রদান করে , এরা গতকাল বা গত হপ্তায় কি বল্ল তারা মনে রাখে এতে কর্মীরা মনে করে এদের যথেষ্ট মূল্য দেওয়া হচ্ছে ।
৮। গল্প গুজব আড্ডাবাজি করা ।
গল্প গুজবে মত্ত হলে সব গেল । অন্যের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি , পরনিন্দা পরচর্চা , অন্যেরর দুর্ভাগ্যে আনন্দ , মানুষকে আহত করে আর সেই মানুষকে অপছন্দের তালিকায় ফেলে ।
৯। খুব আগে ভাগে বেশি শেয়ার করে ফেলা ।
একজন মানুষকে চিনতে , পরস্পর জানাজানি হতে পরিমিত সময় লাগে । নিজের কথা বেশি শেয়ার করে ফেলা এর আগেই ঠিক না ,।
ব্যক্তিগত সমস্যা আর স্বীকারোক্তি খুব দ্রুত করে ফেলার ব্যাপারে সতর্ক হতে হয় । পছন্দসই লোক অন্যকে বিচার করতে দেয় কখন মন খোলা সঠিক হবে । অতি শেয়ার ভাল না ।
১০। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি শেয়ার করা ঠিক নয় ।
গ্রহন যোগ্যতা বাড়াতে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি শেয়ার করে এতে একসময় তা অপছন্দের তালিকায় চলে যায় । সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা আত্ম প্রকাশের উপায় হলেও এর একটি পরিমিতি আর নিয়ন্ত্রন থাকতে হয় । সকালে , দুপুরে , রাতে কি কি খেলেন , কতবার ব্যায়াম করলেন , কয় কদম হাঁটলেন এমন কথা মানুষ বেশি পছন্দ করেনা ।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়