Ameen Qudir

Published:
2019-09-15 23:32:20 BdST

ডাক্তাররাই বাঁচিয়েছেন আমাকে: তাদের আপ্রাণ চেষ্টায়ই বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছি:মীর


ডেস্ক
__________________

দুই বাংলার জনপ্রিয়তম টিভি ব্যাক্তিত্বও উপস্থাপক মীর বললেন, "ডাক্তাররাই বাঁচিয়েছেন আমাকে।ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টায়ই বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি।" বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে জনপ্রিয়তম টেলিভিশন শো ‘মীরাক্কেল’ এর উপস্থাপক মীর আফসার আলী । একাধিকবার তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। চারবারের আত্মহত্যা চেষ্টা যাওয়া মানুষটি একবার তো ৮৭টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন । কিন্তু চিকিৎসকদের অসাধারণ চেষ্টায় তিনি আবার প্রাণ ফিরে পান। বাংলা টিভি প্রেমীরা আবার পর্দায় ফিরে পান প্রিয় মীরকে।
টিভি সাক্ষাৎকারে মীর বলেন, গত দু’বছরে আমি চারবার সুইসাইড অ্যাটেম্পট করেছি। চারবারের মধ্যে তিনবার আমাকে আনোয়ার শাহ রোডের হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছিল। চারবারের মধ্যে একবার তো আমি নিজের বাড়িতে সুইসাইড অ্যাটেম্পট করতে গিয়েছিলাম।

৮৭টি ঘুমের ওষুধ খেয়ে বেঁচে যাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মীর বলেন, বাসায় যখন জানতে পারলো আমার এই অবস্থা। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তারদের আপ্রাণ চেষ্টায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসি। এবার আমার মনে হয়েছিল আমি বোধহয় আর ফিরব না। শুধু ডাক্তাররা আমাকে বাচিয়েছে , তাই নয়। তারা পরবর্তীতে কাউন্সেলিং করেছে। আমাকে দিয়েছে নতুন জীবন। তিনি বলেন , ডাক্তারদের পরামর্শে ওষুধ খাওয়া শুরু হলো। আমাকে বাড়ির লোক আমেরিকা পাঠিয়ে দিয়েছিল ছুটিতে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

 

তিনি আরও বলেন, সবকিছু রয়েছে আমার। আল্লাহ সবকিছু দিয়েছেন। আমি যা কিছু স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি সে সব কিছু আমার দখলে রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু একটার পেছনে ছুটতে থাকা, কিছু একটা তাগিদ, কোনো একটা জেদের বশে, এই কাজ করেছি।

 

মীর বলেন, এরকম সুইসাইডের চিন্তা যদি কখনও মাথায় আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কাছের কোনো মানুষকে বলে ফেলুন। পাশে কেউ না থাকলে তাকে ফোন করে কথাটা বলুন। সেই মানুষটির সঙ্গেই কথা বলবেন যিনি আপনাকে অপমান করবেন না। যারা ডাক্তার বা মনোবিদের সাহায্য নিচ্ছেন, তাদের পায়ে পড়ে বলছি, কিছু লুকোবেন না ডাক্তারের কাছে।

 

উল্লেখ্য, মীর আর এই পথে পা বাড়াতে চান না। বরং মানুষকে আত্মহত্যা থেকে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ব্যাক্তিজীবনে মীর আফসার আলী কলকাতার রক্ষণশীল বনেদী পরিবারের সন্তান। তার পিতা কলকাতার মসজিদের জনপ্রিয় ধন্য ইমাম। মীর একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার ইমাম পিতাই তার পরম আরাধ্য পরম জন। 

ডাক্তাররা জীবন দানের কেউ নন:তাদের

রক্ষা করতে পুরো পরিবারের

 সম্মিলিত প্রয়াস কাম্য:ডা. সুলতানা এলগিন

 

প্রখ্যাত উপস্থাপক মীরের বারবার আত্মহত্যা চেষ্টা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যার জেষ্ঠ সহযোগী অধ্যাপক ও ওসিডি কনসালটেন্ট ডা. সুলতানা এলগিন বলেন, জীবন জীবনের জন্য। মৃত্যুর আকাঙ্খা জীবন নয়। বাঁচার আকাঙ্খাই জীবন।
মীরের মত আত্মহত্যাকামী রোগী আমাদের চারপাশেই আছে। তাদের রক্ষা করতে পুরো পরিবারের সম্মিলিত প্রয়াস কাম্য। সবাই মিলে তাদের জীবনের অর্থপূর্ণ দিশা দেয়া সম্ভব।

ডা. সুলতানা এলগিন বলেন, ডাক্তাররা জীবন দানের কেউ নন। এসব মানুষ আবেগপ্রবৃত্তিতে বলে।
বাঁচার জন্য , জীবনকে অর্থপূর্ণ করতে আত্মপ্রেম , আত্মবিশ্বাসের অধিক প্রয়োজন। মীরের গুরুতর অবস্থায় ডাক্তাররা তার পাশে দাঁড়িয়েছে। তাকে ওষুধের বিষক্রিয়া মুক্ত করেছেন। তিনি জীবন ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু জীবনে ফিরে আসার পর তার মনোবলই পরম ভরসা। এটা বাড়াতে হবে। সেজন্য ভরসা হিসেবে স্বজনদের পাশে থাকা দরকার। যারা জীবনের প্রতি আস্থা হারান বা কোন বিরূপ পরিস্থিতিতে নিজেকে শেষ করতে চান। সেজন্য তাদেরকে আরও মনোযন্ত্রণা বা অপরাধ বোধে ঠেলে দেয়া চলবে না। তাকে রোগী হিসেবে দেখে সবসময় পাশে থাকতে হবে।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়