Ameen Qudir

Published:
2019-06-20 20:14:57 BdST

ডা. দেবী শেঠির বাংলাদেশ মিশন


 

ডা. সুরাইয়া নূর হাসিন
________________________

ডা. দেবী শেঠির বাংলাদেশে মিশনটা কি ! এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন, বাংলাদেশের বাজার দখলের জন্য তিনি এসেছেন। ডাক্তারদের একাংশ এ নিয়ে ক্ষুব্ধ। আবার রোগীদের অনেকেই শুকরিয়া আদায় করছেন।দেবী শেঠীর দীর্ঘায়ু কামনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন অনেকে। বলছেন , বাংলাদেশে দেবী শেঠীকে দরকার। বেঙ্গালুরু বা কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে অনেক খরচ পড়ে। গিয়ে থাকতে হয়। সে হাতির খরচ। এখন তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে এলেন। এখানে খরচ অনেক কম পড়বে। যে হাসপাতাল হয়েছে , সেটি বেঙ্গালুররুর মতই। তার সেবায় কোন ফাঁকিবাজি নেই।
কিন্তু আমরা ডাক্তার সমাজ কেন ক্ষুব্ধ। দেবী শেঠী কি আমাদের মুখের লোকমা বা আমাদের চেম্বারের রোগী কেড়ে নিলেন। আমরা কি আর রোগী পাব না।
আসলে কেউ কারও রিজিক কেড়ে নিতে পারে না। দেবী শেঠীও পারবেন না। বরং আমি মনে করি, তিনি এখানে আসায় আমরা লাভবান হয়েছি। ঢাকা চ্ট্টগ্রাম কুমিল্লার রোগী আর দুরের বেঙ্গালুরু , চেন্নাই যাবে না। এদেশেই থাকবে।
বেঙ্গালুরু , চেন্নাই দিল্লীর দূরত্ব কম নয়। বিমানে মালয়েশিয়া, ব্যাঙ্কক , সিঙ্গাপুরের মত দূরত্ব। সেখানে গেলে সত্যই কত খরচ , আমি ভুক্তভোগী হিসাবে জানি। ভুক্তভোগী হিসেবে ডা. দেবী শেঠীকে চিনিও।
তিনি আজ বিশ্বখ্যাত ডাক্তার তার ব্যবহার গুণে। তার মুখে কোন নেগেটিভ কথা নেই। রোগী মারা যাবে, তবু তিনি এমন আপন জন হিসেবে ব্যবহার করবেন , তার দাম লাখ টাকা। সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
ডা. দেবী প্রসাদ শেঠী নিজেই বলেছেন, চিকিৎসার জন্য প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র সমূহে যাচ্ছেন। যা সবদিক থেকে ক্ষতি। কিন্তু আমি এদেশে এসেছি একটি মিশন নিয়ে, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশে থেকে বিদেশে রোগী যাওয়া বন্ধ করা। আমি চাই না বাংলাদেশিরা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাক।
তিনি বলেন, আমেরিকার চেয়ে এ উপমহাদেশের চিকিৎসক-নার্সরা অনেক প্রতিভাবান। তারা খুবই পরিশ্রমী। সেটি অবশ্যই ইতিবাচক।

চ্টটগ্রামের ইমপেরিয়াল হাসপাতাল নিয়ে বলেন , এ হাসপাতালটি আমি ঘুরে দেখেছি। এটি একটি বিশ্বমানের চিকিৎসাকেন্দ্র। এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। নিজস্ব চিকিৎসক-নার্সরা রয়েছেন। যেটি অন্যান্য হাসপাতাল থেকে আলাদা করেছে।’

ডা. দেবী শেঠী বলেন, এ হাসপাতাল বাংলাদেশে সঠিক ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবার নতুন সংযোজন। এটি প্রতিষ্ঠার ফলে বিদেশে বাংলাদেশি রোগী যাওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে।
তার মানে চ্টটগ্রামের হাসপাতাল আদৌ
ডা. দেবী প্রসাদ শেঠীর নয়। তিনি এসছেন সহযোগিতা করতে। তার সহযোগিতায় এটা চেন্নাই বেঙ্গালুরুর মত হয় কিনা , সেটাই দেখার বিষয়। তিনি নিজে যদি দেখভাল করেন , তবে অবশ্যই বাংলাদেশের রোগী ও চিকিৎসকরা নানাভাবে উপকৃত হবেন।
আমি ভুক্তভোগী হিসেবে দেবী স্যারকে অনুরোধ করব , কিভাবে রোগী ব্যবহার করতে হবে, সে ব্যাপারে যেন তিনি আমাদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস নেন। তা হলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আমূল বদলে যাবে।
_____________________________

ডা. সুরাইয়া নূর হাসিন । কলামিস্ট।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়