Ameen Qudir
Published:2019-06-16 19:36:27 BdST
আমার চোখের অসুখ ও প্রিয় চিকিৎসকবৃন্দ: বাংলাদেশের ডাক্তারসেবায় মুগ্ধ সাংবাদিকের বয়ান
দীপংকর গৌতম
_________________________
অফিসে বসে লিখতে লিখতে দেখলাম সব ধূসর দেখাচ্ছে।কোন মতেই স্পষ্ট দেখতে পারছি না।খুব মন খারাপ হলো।অফিসের নির্বাহী সম্পাদককে বললাম।তিনি বললেন দ্রুত ডাক্তার দেখাতে।আমি তাৎক্ষনিকভাবে একজন ডাক্তারকে বললাম।আমার সে বন্ধু বললো চোখের প্রেসার বাড়লে এমন হয়। আমি বললাম প্রেসার মানে কি গ্লুকোমা? তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন ডাক্তার দেখাতে। আমি হচকিত হলাম।আসলে গ্লুকোমা হলে বিপদে পড়ে যাবো।তাই মনে মনে একটা ছক কষছিলাম কোন বইয়ের কাজ কত দ্রুত করা যায়।
আমি যেকোন অসুস্থতায় আগে শিশু সংগঠক, গণমানুষের ডাক্তার লেনিন ভাই মানে লেনিন চৌধুরীর পরামর্শ নিতে স্বস্তি পাই। তাই তাকেই ফোন করি। প্রিভেন্টিভ মেডিসিনের ডাক্তার হলেও লেনিন ভাই আমাদের নির্ভরতা।লেলিন ভাইকে ফোন করে জানাতেই তিনি বললেন, নুজহাত চৌধুরীর কাছে যান। নুজহাত চৌধুরী ডাক্তার হিসাবে, মানুষ হিসাবে,বক্তা হিসাবে অসাধারণ। দেশের সূর্যসন্তান শহীদ আলীম চৌধুরীর কন্যা নুজহাত। চিকিৎসক হিসাবে তিনি তার বাবার মতো গণমানুষের ডাক্তার। আমার আরেক ডাক্তার ভাষা সংগ্রামী ও ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ সুলতানের কন্যা ও শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হোসেনের পুত্রবধু ডা. চন্দনা সুলতানা। নুজহাত চৌধুরী পিজির ডাক্তার চন্দনা আপা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের। আমি নুজহাত চৌধুরীকে ফোন করতেই তিনি বললেন ৭টায় সোবাহানবাগ যেতে।ওখানে দীন মোহাম্মদ চক্ষু হাসপাতালে তিনি বসেন।আমি যেন গিয়ে তাকে ফোন দেই। এর আগে আমার ভাগ্নে ডা. অাশীষ সমদ্দার চক্ষু চিকিৎসক তার কাছে গেলাম মনিপুরি পাড়া।সে খুবই যত্ন করে দেখে দিলো।এবং বলে দিলো চোখে গ্লুকোমা নেই।ওষুধ লিখে দিলো।তার মানে রোগ আমার আছে তবে গ্লুকোমা না।আশীষের প্রেসক্রিপশন পকেটে নিয়ে ভাবলাম চোখের পরে বড় হওয়া অাশীষ কি লিখলো তা কে জানে?আমি আমার ডাক্তার-স্বজন নুজহাত চৌধুরীর কাছে যেতে থাকলাম।তার মুখ থেকে শুনতে চাই আমার কি হয়েছে? লেলিন ভাই চন্দনা আপা নুজহাত চৌধুরী কিংবা আমার ভাগ্নে সেই ছোট্ট আশীষ কত সহজ করে কথা বলেন। রোগীর কথা শুনতে তাদের ক্লান্তি নেই। আমি নুজহাত চৌধুরীর চেম্বারে গেলাম।সেখানে ১০০০ টাকার টিকেট কাটতে হয়।তারপর চোখের কিছু টেস্ট হয়। এরপর ১০৬ নম্বরে নুজহাত চৌধুরীর কাছে। তার চেম্বারে ঢুকতেই মন ভালো হওয়া।কি হাসি -খুশী কত সাধারন স্বভাবের কত বড় চিকিৎসক।তার চিকিৎসার সুনাম সবখানে। তিনি হঠাৎ আমার হাতে টিকেট দেখে বললেন, আপনি টিকেট কেটেছেন?কেন? আমার কাছে আসতে আপনার টিকিট লাগবে? আমি বললাম রোগ হয় অর্থদন্ডের জন্য। তিনি এসব কথা শোনার লোক না। তিনি তার সহকারীকে দিয়ে টাকা তুলে আনালেন, এবং আমাকে নিইয়ে ছাড়লেন । তারপর গল্পে গল্পে চিকিৎসা। খুব সহজ।অসাধারন। নিজে আবার খুব যত্ন করে মেশিনে ভালো করে চোখ দেখলেন। ওষুধ দিলেন, যে কোন সমস্যায় যেতে বললেন। আমি চলে আসলাম।মনে হল কোন রোগ নেই।এইতো ডাক্তার।কত হাজার- লক্ষ মানুষ উপকৃত হয় নুজহাত চৌধুরী, চন্দনা সুলতানা তার হিসাব কে রাখে।মাটি ও মানুষের প্রতি এসব ডাক্তাররা আছে বলেই অজস্র অপচিকিৎসার নিদর্শনের মধ্যে আমরা আলোকিত দিনের দেখা পাই। এদের সাথে যুক্ত হয়েছে আমার ভাগ্নে ডা. আশীষ সমদ্দারের নাম । এত অল্প বয়সে আশীষ অনেক ভালো ডাক্তার ভেবে ভালো লাগলো।কারন আমার চক্ষু বিষয়ে ডা.আশীষ ও যশস্বী চিকিৎসক নুজহাত চৌধুরীর সাথে কোন তফাৎ নেই।কত মানুষ উপকৃত হবে আমার দেশের এসব সোনার টুকরো ডাক্তারদের দিয়ে। গণমানুষের কাছে দায়বদ্ধ এসব ডাক্তারদের জন্য অনেক শুভকামনা।
___________________________________
লেখক দীপংকর গৌতম বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক। প্রখ্যাত লোকসংস্কৃতিবিশারদ।
আপনার মতামত দিন: