Ameen Qudir

Published:
2016-12-24 22:01:23 BdST

নবগঠিত বি এম এ এবং চিকিৎসকদের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ


ডা. বাহারুল অালম

__________________________

 

 


বিএমএ নির্বাচন ২০১৬-১৭
নিয়ে প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা ডা. বাহারুল অালমের নির্মোহ মূল্যায়ন ।

নেতৃত্বের পকেট/গ্রুপে থেকে সুবিধাভোগে অভ্যস্ত চিকিৎসকরা দাবী আদায়ের সংগ্রামে অনভ্যস্ত— অপরদিকে চিকিৎসক নেতৃত্ব রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের কর্ণধার এবং কখনও কখনও আমলামুখী। এ ব্যবধান অতিক্রম করাই হবে আগামীর বড় চ্যালেঞ্জ - তরুণ চিকিৎসকরাই ভরসা।

নাগরিক/জনগণকে ভাল রাখার প্রয়োজনে চিকিৎসা-ব্যবস্থা ও চিকিৎসকদের ভাল রাখার ভাবনা বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও বিদ্যমান রাজনীতির এ মুহূর্তে নাই।

বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমলা প্রধান ও আমলা নির্ভর। চিকিৎসকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আমলাদের পরচর্চার মানস ও আধিপত্য বিস্তারকে খর্ব করবে বিধায় এ আন্দোলন রাষ্ট্রের সাথে দ্বান্দ্বিক হবে। এ দ্বন্দ্বে জয়লাভ করতে না পারলে চিকিৎসকদের অধিকার, নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে না।

ঔপনিবেশিক ধাঁচের জনপ্রশাসনের আমলাদের সার্বিক ভাল রাখার মধ্য দিয়েই জনগণ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ খোঁজে আমাদের রাজনীতি ও রাষ্ট্র।
রাষ্ট্রের কাছে এ সময়ে আমলারাই মুখ্য, চিকিৎসকসহ অপরাপর পেশাজীবীরা গৌণ।

‘রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সরকারের আমলা নির্ভর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে অর্জন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ’। রোগী ও চিকিৎসকের ন্যায্য অধিকার পাওয়ার দাবী পূরণ খুবই কঠিন এবং দাবী পূরণের সিদ্ধান্ত সচিবালয়ে আমলা ও সরকারের হাতে কুক্ষিগত। এ দাবীসমূহ আদায় আন্দোলনে রূপ নিতে পারে।

নিকট অতীতে বিএমএ-র নেতৃবৃন্দের নতজানু আচরণ ও আপোষকামিতার কারণে চিকিৎসক নেতৃত্ব নিজে ও চিকিৎসকরা রাষ্ট্রের সাথে এই দ্বন্দ্বে যাওয়ার সাহস হারিয়ে ফেলেছে বা প্রতিবাদের মনস্তাত্ত্বিকতা যথেষ্ট স্তিমিত। অপরদিকে কেন্দ্রের নেতাদের গ্রুপে বা পকেটে থেকে ‘কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক’ চিকিৎসকরা নানাবিধ সুবিধাভোগে অভ্যস্ত। অধিকার আদায়ের আন্দোলন তাদের মনোজগতে নাই বললেই চলে।

পক্ষান্তরে পকেটে না থাকতে পেরে কিছু চিকিৎসক সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার ক্ষুব্ধতা প্রকাশে অভ্যস্ত। এরাও আন্দোলনে নামতে যথেষ্ট সাহসী নয় যা ৮ম পে স্কেলের অসঙ্গতি ও বৈষম্য দূর করার আন্দোলনে দৃশ্যমান।

আজ ২২ ডিসেম্বরের পর নবগঠিত বিএমএ রোগী-চিকিৎসকদের অধিকার আদায়ে উল্লেখিত সংকটে পড়বে। কারণ রাষ্ট্রের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতে নিজেরা কতটা আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী হতে সক্ষম হবে - সেখানেও সন্দেহের অবকাশ থাকে। চিকিৎসকরাও দীর্ঘদিনের চর্চার অভাবে একই সংস্কৃতির আচরণ করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

নূতন বিএমএ-কে এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আগামী দিনে পথ চলতে হবে। রোগী-চিকিৎসকের সকল ন্যায্য দাবী অধঃপতিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া কঠিন কর্তা/কর্ণধারদের সদিচ্ছার অভাবে। সেই সাথে যুক্ত হয়ে আছে চিকিৎসকদের পকেটে থাকার সংস্কৃতি। অথচ রোগী-চিকিৎসকের ন্যায্য দাবী আন্দোলন, সংগ্রাম ছাড়া আদায় হওয়া সম্ভব নয়।

এটাই হবে নবগঠিত বিএমএ এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
যে পেশাজীবী নিজেরা নিজেদের সাথে যুদ্ধ করে তারা কখনও এগোতে পারে না-এটাই চিকিৎসকদের এ সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ।

_____________________________

 

লেখক ডা. বাহারুল আলম। প্রখ্যাত পেশাজীবী নেতা । সুলেখক। সুবক্তা।

আপনার মতামত দিন:


কলাম এর জনপ্রিয়